সিলেটে অবৈধ গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান, জরিমানা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ এপ্রিল ২০১৯, ৬:৩০ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ :
অবৈধভাবে গড়ে উঠা গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধে অভিযান শুরু করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) ও ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে ১০ হাজার করে জরিমানা করে ভ্রাম্যমান আদালত।
রবিবার (৭ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে নগরীর বন্দরবাজার ধোপাদিঘীরপাড়স্থ আলফালা টাওয়ারের কয়েকটি দোকান ও অফিসে অভিযান দিয়ে শুরু হয় দিনের কর্মসূচির। পরবর্তীতে নগরীর আরো কয়েকটিস্থানে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে বন্দরবাজারের মাখন মিয়া সাইকেল মাট ও চুলা ঘরকে ১০ হাজার টাকা, প্রত্যাশী চুলা ঘর ১০ হাজার টাকা, সেবা ডেকর ওয়াল্ড ১০ হাজার টাকা, দি গার্ডেন রেস্টুরেন্ট ১০ হাজার টাকা ও ধোপাদিঘীরপাড়স্থ মেসার্স শহীদ মটরসকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ছাড়াও সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত সচিব নুর আজিজুর রহমান, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মঈনুল হোসেন চৌধুরী, সিলেট মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইসমাইল, ফায়ার সার্ভিস সিলেটের উপ পরিচালক দিনমনি শর্মা, বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সহকারী ইন্সপেক্টও মো. আলীম উদ্দিন, জালালাবাদ গ্যাসের প্রতিনিধি ও বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, চরম অব্যবস্থাপনায় নগরীতে যত্রতত্র ভাবে গড়ে উঠেছে গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই নির্দিধায় চলছে এ ব্যবসা। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রনে আনতে কাজ করছে সিটি কর্পোরেশন।
তিনি বলেন, একটি নিরাপদ স্থানে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসা সরিয়ে নিতে হবে। জনসাধারনের চলাচল ও আবাসিক এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলা বে আইনী।
মেয়র বলেন, বিস্ফোরক আইন ১৮৮৪-এর অনুযায়ী এলপি গ্যাস রুলস ২০০৪-এর ৬৯ ধারার ২ বিধিতে লাইসেন্স ব্যতীত কোন ক্ষেত্রে এলপিজি মজুদ করা যাবে তা উল্লেখ আছে। একই বিধির ৭১নং ধারায় বলা আছে, আগুন নেভানোর জন্য স্থাপনা বা মজুদাগারে যথেষ্ট পরিমাণে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম মজুদ রাখতে হবে। এ আইন অমান্য করলে ওই ব্যবসায়ী নূন্যতম দু’বছর এবং অনধিক পাঁচ বছরের জেল এবং অনধিক ৫০ হাজার টাকার অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন এবং অর্থ অনাদায়ী থাকলে অতিরিক্ত আরো ছয় মাস পর্যন্ত কারাদন্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা এ আইন না মেনে নির্দিধায় চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের ব্যবসা। যার কারণে সিসিক এ অভিযানে নামতে বাধ্য হয়েছে।
তিনি বলেন, গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসা নিয়ন্ত্রনে না আসা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার নগরীর বাগবাড়ি এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনার পর শনিবার সকালে নগর ভবনে অক্সিজেন গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার সম্পর্কিত এক জরুরী সভায় ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ যৌথ অভিযানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় সিলেটের বিভিন্ন স্থানে অবৈধ ও অনিরাপদভাবে গড়ে উঠা অক্সিজেন ও গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রয়োজনীয় সকল অনুমোদন আছে কি না এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা রাখা হয়েছে কি না সেসব বিষয় ক্ষতিয়ে দেখার জন্য এ অভিযান পরিচালনা করা হবে। কারো কাগজপত্র কিংবা নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ত্র“টি থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এছাড়া সিটি করপোরেশন ও অন্যান্য সরকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অক্সিজেন ও গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারণা চালানোর সিদ্ধান্ত হয়। এক্ষেত্রে মাইকিং ও লিফলেটিং করার বিষয়ে একমত প্রকাশ করেন সকলে।