ব্রিটিশ এমপিদের মুখে বাংলাদেশের জয়গান
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ মার্চ ২০১৯, ৪:০১ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪৮ বছর পূর্তি উদযাপন করা হয়েছে লন্ডনে। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ এমপিদের মুখে ছিল বাংলাদেশের জয়গান। তারা বলেন, বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মানবাধিকার বাস্তবায়ন আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল, সেটি আজ বিশ্বসভায় একটি মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত।
স্থানীয় সময় বুধবার বিকেলে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট হাউস অব কমন্সের টেরেজ প্যাভিলিয়নে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ব্রেক্সিট ইস্যুতে ব্যস্ততা থাকা সত্ত্বেও প্রায় ৩৪ জন ব্রিটিশ এমপি উপস্থিত হয়েছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে অংশ নিতে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফারুক ও কাউন্সিলর সৈয়দা সায়মা আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়। এ সময় সবাই দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এরপর স্বাগত বক্তব্য দেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান শরীফ।
পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট বিতর্কের মাঝে টেমস নদীর তীরে টেরেজ প্যাভিলিয়নে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে এসে শুভেচ্ছা জানান ব্রিটিশ মন্ত্রী ও এমপিরা। তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে আজ শ্রদ্ধার আসনে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। কক্সবাজারের মতো একটি জনবহুল এলাকার মানুষ নিজেদের কষ্ট অগ্রাহ্য করে লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে সরকারকে সহযোগিতার মাধ্যমে তারা প্রমাণ করেছেন বাংলাদেশ একটি মানবিক রাষ্ট্র। এই ভূখণ্ডের মানুষ মানবিক চেতনায় সমৃদ্ধ। জন্মের পর গত ৪৮ বছরে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। ৪৮ বছর আগে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যুক্তরাজ্যের জনগণ ও এমপিদের যে দৃঢ় সমর্থন ছিল, তা আমাদের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তিনি বলেন, স্মরণকালের ভয়াবহতম মানবিক বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে রোহিঙ্গারা। মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। তবে এটি বাংলাদেশের একক সমস্যা নয়, এটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। এখন রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমিতে ফিরে যাওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। তাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারকে বাধ্য করতে দেশটির ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ অব্যাহত রাখা খুবই জরুরি।
তিনি এ বিষয়ে ব্রিটিশ সরকার ও এমপিদের কাছ থেকে কার্যকর ভূমিকা প্রত্যাশা করেন।
অনুষ্ঠানে কনজারভেটিভ দলের ক্রস পার্টি গ্রুপের প্যানেল চেয়ার ও এমপি অ্যান মেন, কনজারভেটিভ পার্টির এমপি পল স্ক্যালি, লেবার পার্টির এমপি জিম ফিটজপ্যাট্রিক, শ্যাডো সেক্রেটারি অব স্টেট ফর ওম্যান অ্যান্ড ইক্যুয়ালিটিস ডন বাটলার, ইপস উইচের এমপি ও হাইস্পিড রেল বিল সিলেক্ট কমিটির সদস্য স্যান্ডি মার্টিন, হেলথ অ্যান্ড সোশ্যাল কেয়ারের শ্যাডো মিনিস্টার জুলি কুপার, এমপি জনাথান অ্যাশফোর্ড, এমপি সীমা মালহোত্রা, হোম অফিস শ্যাডো মিনিস্টার আফজাল খানসহ অনুমানিক ৩৪ জন ব্রিটিশ এমপি বক্তব্য দেন।
অধিকাংশ এমপি বক্তব্যের শুরুতে বাংলায় শুভেচ্ছা জানান এবং জয় বাংলা বলে শেষ করেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভূমিকার প্রসঙ্গ টেনে তারা বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তারা যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি কমিউনিটিরও প্রশংসা করেন। অতিথিদের বক্তব্যের মাঝে মাঝে স্থানীয় শিল্পীরা পরিবেশন করেন নৃত্যানুষ্ঠান।
সুত্রঃ দেশেবিদেশে