সিলেটে ১৬ বছরেও শেষ হয়নি শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টা মামলা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ আগস্ট ২০১৭, ৪:২৫ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সিলেটের আদালতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলাটি ১৬ বছর ধরে বিচারাধীন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, এখনও মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। এ মামলার অন্যতম আসামি মুফতি হান্নানকে চলতি বছরের ১২ এপ্রিল সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। এ মামলার আরেক আসামি জঙ্গি মাওলানা আবু সাঈদ কারাগারে রয়েছে ।
মামলাটি বর্তমানে সিলেটের অপরাধ দমন বিশেষ ট্রাইবুন্যাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এ মামলার ৪৭ সাক্ষীর মধ্যে ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ নিয়েছেন আদালত। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকাকালে দুই জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে মামলাটি জননিরাপত্তা আদালতে স্থানান্তর করা হয়। এরপর বাকি ১৬ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে আওয়ামী লীগের সমাবেশস্থলের পাশে ফাজিলচিশতে ডা. আরিফ আহমদ রিফার বাসায় বোমা তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরণে দু’জন নিহত হয়। এরপর বোমা বিস্ফোরণ ও হত্যার ঘটনায় দু’টি মামলা দায়ের করেন সিলেট কোতোয়ালি থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু আল খায়ের মাতুব্বর।
বিশেষ ট্রাইবুন্যাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নওসাদ আহমদ চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিশেষ জেলা ও দায়রা জজ (জননিরাপত্তা) আদালতে একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে।’ দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন-‘দেখা যায় জঙ্গি মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে নির্দিষ্ট তারিখে আসামিদের আদালতে উপস্থিত করা যায় না। ফলে সাক্ষ্যগ্রহণসহ বিচারকার্য ব্যাহত হচ্ছে।’
জঙ্গি মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারি কৌঁসুলিদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি বলেও তিনি মনে করেন।
নওসাদ আহমদ বলেন, ‘আলোচিত জঙ্গি মামলাগুলোর নথিপত্র এখনও কাগজপত্রে রয়েছে। এগুলো যদি ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা যায় তাহলে ভবিষ্যতে কাজে আসবে। জঙ্গি মামলার ক্ষেত্রে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের আরও সর্তক থাকা উচিত।’
তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় আবু সাঈদ ২০০৬ সালের ১৯ অক্টোবর সিলেটের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তার ভাষ্য, ‘মুফতি হান্নান আমাকে জানায়, শেখ হাসিনা সিলেটে জনসভা করতে যাবে। তাকে বোমা মেরে হত্যার পরিকল্পনার বিষয়টি আমাকে জানায়। আলোচনায় মুফতি হান্নান,আবু মুসা,লোকমান,জাফর ও আমি ছিলাম। এ কাজে ছয়জনকে সিলেটে নিয়ে আসার জন্য ঠিক করা হয়। শাকিল তাদের সিলেটের রাস্তাঘাট চিনিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নেয়। আবু মুসা ও লোকমান বোমা তৈরির সরঞ্জাম সঙ্গে নিয়ে আসে। আমরা রাতে সিলেটে পৌঁছাই। শাকিল আমাদেরকে রিকশায় করে ডা. রিফার বাড়িতে নিয়ে যায়।’