কোটি টাকা সমমানের স্কলারশিপ নিয়ে ব্রিটেনের মর্যাদাপূর্ণ কলেজে সিলেটী আবিদ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ আগস্ট ২০১৭, ১:৩৭ অপরাহ্ণ
লন্ডন অফিস: ৭৬ হাজার পাউন্ড সমমানের সরকারি স্কলারশিপ নিয়ে ব্রিটেনের মর্যাদাপূর্ণ ইটন কলেজে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ক্লাস করতে যাচ্ছে সিলেটী কিশোর আবিদুর রহমান।
১৪৪০ সালে ব্রিটিশ রাজা ষষ্ঠ হেনরি এই ইটন স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। মর্যাদাপূর্ণ এই ইটন কলেজে সাধারণত ব্রিটেনের রাজ পরিবারের সদস্য, শীর্ষ ধনীদের সন্তান এবং অসাধারণ মেবাধী ছাত্র-ছাত্রীরা লেখা পড়া করে থাকে। উইকিপিডিয়ার সূত্র মতে ব্রিটেনের ১৯জন প্রাইমিনিস্টার এই কলেজে লেখা করেছেন। এর মধ্যে সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ডেভিড ক্যামরন। এছাড়া এই কলেজের ছাত্র হচ্ছেন ব্রিটিশ রাজপরিবারের উত্তরাধিকারী প্রিন্স উইলিয়াম ও প্রিন্স হ্যারি এবং বর্তমান ফরেন সেক্রেটারী বরিস জনসন উক্ত কলেজের ছাত্র ছিলেন। সাধারণত এই কলেজের স্টুডেন্টরাই ব্রিটেনের ভবিষ্যত নেতৃত্ব দিয়ে থাকে।
ব্রিটিশ বাংলাদেশী মেধাবী ছাত্র আবিদুর রহমান এই কলেজে সুযোগ পেয়ে দারুন খুশি। সে লন্ডনের হান্সল এলাকার হেসটন কমিউনিটি স্কুলের ছাত্র। বর্তমানে সে পরিবারের সাথে লুটনে বাসবাস করছে।
৪ ভাই বোনের মধ্যে আবিদুর রহমান দ্বিতীয়। তার বড় ভাই সাইদুর রহমান সিটি ইউনিভার্সিটিতে ইকোমিক্সে অধ্যয়নরত। তার ছোট বোন সাইমা রহমান ও ভাই মুহিত রহমান স্থানীয় স্কুলে অধ্যয়নরত।
সে ভবিষ্যতে মেডিসিন অথবা ইঞ্চিনিয়ারিংয়ের উপর লেখাপড়তে আগ্রহী। ইটনে সে মেথ, বায়লজি, পিজিক্স, ক্যামেষ্টি নিয়ে লেখা পড়া করবে। আবিদ জানায় ভবিষ্যতে সে তার অর্জিত অভিজ্ঞতাকে পিতৃভূমির দেশ বাংলাদেশে কাজে লাগাবে। আবিদ রহমানের দেশের বাড়ী সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের দন্ডপানিপুর গ্রামে। তার পিতার নাম আশিকুর রহমান ও মা পান্না বেগম।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইকোনমিক্সে মাস্টার্স সম্পন্ন করা আবিদের পিতা বিশ্বনাথ ছাত্রলীগের সভাপতি ও যুক্তরাজ্য যুবলীগের সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি সামাজিক সংগঠন বিশ্বনাথ প্রবাসী এডুকেশন ট্রাস্টের সদস্য।
এদিকে মা পান্না বেগম যদিও ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন তারপরও বেশ কিছুদিন বাংলাদেশে অধ্যয়ন করেন। তিনি বাংলাদেশে ১৯৯৫ সালে স্টার মার্ক পেয়ে এস এস সি পাস করেছিলেন। এর কিছুদিন পর বিয়ে হলে স্বামীকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরে আসেন।
আবিদ রহমান জানায় তার লেখার পড়ায় পেছনে তার বাবা মা ও স্কুলের শিক্ষকদের বিশাল অবদান রয়েছে। সে বিশেষভাবে তার বাবা-মা’র প্রতি কতৃজ্ঞ। তাদের সার্বক্ষনিক সহযোগিতার কারনেই সে ভালো রেজাল্ট করতে পারছে।
সে জানায় ইটনে তাকে ৫টি বিষয়ের উপর ইন্টারভিউ নেয়া হয়। সবগুলিতে সে ভালো করে এবং ইটনে পড়া লেখার সুযোগ নিশ্চিত করে। তবে সে জানায় যখন সে ইন্টারভিউ দিয়ে আসে এবং পরবর্তীতে তার অফার লেটার আসে তখন সে ভয়ে লেটার খুলতে সাহস পাচ্ছিলনা। কারন সে ইন্টারভিউ দিয়েছিল তার ছিল খুবই কঠিন। সে পর্যন্ত যখন ফাইনালি লেটার খুলে দেখা হল তখন তার পরিবারের আনন্দের বন্যা ভয়ে যায়।
আবিদের পিতা জানান, এখবর স্থানীয় ইংরেজি পত্র পত্রিকায় ছাপানো এবং আবিদের ইন্টারভিউ নিতে চাইলে সে দিতে আগ্রহী হয়নি। তিনি তার ছেলের সাফল্যে গর্বিত। তিনি আবিদের ভবিষ্যত সাফল্যের জন্য সকলের কাছে দোয়া প্রার্থী।
এদিকে কাশিফ কামালি নামে অপর বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত ছাত্র এই ইটন কলেজে ৭৬ হাজার পাউন্ডের স্কলারসীপ নিয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। কাশিফ ফরেস্ট গেট কমিউনিটি স্কুলের ছাত্র।