মৌলভীবাজারে মেরুদণ্ডে আঘাত পেয়েছে পোষা হাতি ‘রাজলক্ষ্মী’
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ জুলাই ২০১৭, ১১:০৬ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহরতলীর উত্তরভাড়াউড়া এলাকায় মেরুদণ্ডে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে এক সপ্তাহ ধরে অসুস্থাবস্থায় পড়ে আছে পোষা হাতি ‘রাজলক্ষ্মী’।
হাতিটির মালিক জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার কানাইদেশী গ্রামের ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিভিন্ন কাজের জন্য রাজলক্ষ্মী হাতিটিকে নরসিংদীর কাজল খাঁনের কাছে দেড় বছরের জন্য ভাড়া দেয়া হয়। কাজল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় সার্কাস, বিয়ে, গাছ টানা, শোভাযাত্রা ইত্যাদি কাজে হাতিটিকে ভাড়ায় খাটাতেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ট্রাকযোগে হাতিটিকে গত ১৪ জুলাই শুক্রবার রাতে শ্রীমঙ্গলে শহরের মৌলভীবাজার রোডের ৫নং পুল এলাকায় আনেন। এরপর সড়কের পাশে হাতিটিকে ট্রাক থেকে নামানোর চেষ্টাকালে এটি কোমরে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এরপর থেকে রাজলক্ষ্মী সেখানে পড়ে আছে। গত বুধবার বিকেলে আরেকটি হাতি দিয়ে টেনে তার স্থান পরিবর্তন করা হয়েছিল। আমি খুব চিন্তায় আছি কিভাবে রাজলক্ষ্মীকে সুস্থ করা যায়।
পোষা হাতিটির সেবায় সার্বক্ষণিক নিয়োজিত নাইওর মিয়া ও আব্বাস আলী, খোরশেদ মিয়া এবং হারুন মিয়া বলেন, এক সপ্তাহ ধরে পোষা হাতিটিকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টায় দিন-রাত নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তারা। তারা আরও বলেন, বৃষ্টির পানি যেন হাতিটির শরীরে না লাগে সেজন্য সামিয়ানাও টাঙানো হয়েছে।
শ্রীমঙ্গল প্রাণিসম্পদ অফিসের ভ্যাটেরেনারি সার্জন ডা. আরিফুল ইসলাম বলেন, এ পর্যন্ত হাতিটিকে বাঁচাতে যা যা প্রয়োজন তা তারা করে যাচ্ছেন। সাত দিন ধরে পড়ে থাকায় তার পেটে গ্যাস জমে গেছে। ঢাকা চিড়িয়াখানা ও ডুলাহাজরা সাফারি পার্কের চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে তারা হাতিটিকে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। পোষা হাতি ‘রাজলক্ষ্মী’ খাবার বন্ধ করে দেওয়ায় একে এখন বিকল্প হিসেবে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। হাতিটির মেরুদন্ডে আঘাত পেয়েছে। সে তার পেছনের ডান পাটি ওঠাতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, ৩২ বছর বয়সী হাতিটির ওজন প্রায় তিন টন। তবে হাতিটি সুস্থ হওয়ার লক্ষণ দেখছি না।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) তবিবুর রহমান বলেন, পোষা হাতিই হোক বা বন্যহাতি হোক, তাকে সুস্থ করার ব্যাপারে আমাদের সবার দায়িত্ব আছে, এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নাই। তাকে সুস্থ করে তোলার জন্য আমি সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে যাচ্ছি। আজও বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এসে রাজলক্ষ্মীকে দেখে গেছেন। তবে আগের চেয়ে একটু সুস্থ বলে মনে হচ্ছে হাতিটিকে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোবাশশেরুল ইসলাম জানান, তিনিও হাতিটির খোঁজ খবর রাখছেন।