সিলেটে সেই রাতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির শিকার ৮টি গাড়ি, জনমনে আতংক
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ মার্চ ২০১৭, ১:০০ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সিলেটের গোয়াইনঘাটে আইন শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। প্রতিনিয়িতই সংঘটিত হচ্ছে চুরি,ডাকাতি ও ছিনতাই। খোদ পুলিশ তদন্ত কেন্দ’র কাছেই ঘটে গেছে দুর্ধর্ষ রোড ডাকাতি।
সোমবার (২০মার্চ) রাত সোয়া ১১টায় উপজেলার সালুটিকর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের অদূরে গোয়াইনঘাট-সালুটিক সড়কের দামারিকান্দি এলাকায় ৮টি গাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়। ডাকাত দল গাড়ির গতিরোধ করে অস্ত্রের মূখে যাত্রীদের টাকা মোবাইলফোন ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নেয়।
এ সময় ডাকাদের হামলায় গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম চৌধুরীর গাড়ি লুট এবং ভাংচুর করে ডাকাতরা। ডাকাতদলের হামলায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম চৌধুরী ও গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাব সভাপতি এম এম মতিন এবং চেয়ারম্যান হাকিমের গাড়িচালক হাবিবুর রহমানসহ ২০জন আহত হন।
আহতদের মধ্যে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ উল্লেখিত ৩জনকে গুরুতর অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ডাকাতিকালে গোয়াইনঘাট থানাধীন সালুটিকর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি খসরুল আলম বাদলের সাথে আক্রান্তরা ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি এবং পুলিশ নিয়ে এগিয়ে যাননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খবর পেয়ে সিলেটে এডিশনাল এসপি আবুল হাসনাত খানসহ একদল পুলিশ মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
এ ঘটনায় গোয়াইনঘাটের জনমনে উদ্বেগ আতংক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। ডাকাতদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও যাত্রী সাধারণসহ জননিরাপত্তা বিধানের দাবিতে উপজেলাবাসী মঙ্গলবার গোয়াইনঘাট-সালুটিকর সড়ক অবরোধ করেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে অবরোধ তুলে নেয়া হয়। পাশাপাশি সচেতন নাগরিকের ব্যনারে উপজেলা সদরে মানববন্দন কর্মসুচীও পালন করা হয়।
অবরোধ ও মানববন্ধনকালে বক্তারা অভিযোগ করেন গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ বিভিন্ন পাথরকোয়ারীর চাঁদাবাজি নিয়ে রাতদিন ব্যস্ত হয়ে পড়ায় থানার আইন শৃংখলার চরম অবনতি ঘটে চলেছে। চোর-ডাকাতরা সম্পূর্ন বেপরোয়া হয়ে উঠায় জনগনের জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।
গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেন ডাকাতির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যে পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি । তবে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে এক সিএনজি অটোরিক্সা চালককে আটক করেছে। আটক রুকন মিয়া (২২) গোয়াইনঘাট থানার আঙ্গারজুর গ্রামের আব্দুল মন্নানের পুত্র।
এদিকে ডাকাত দলের হামলা ও আইনশৃংখলার অবনতির প্রতিবাদে গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবের উদ্যোগে আগামীকাল বুধবার গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয় সম্মূখে অবস্থান কর্মসুচী পালন করা হবে।
ডাকাতদলের হামলায় আহত উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম চৌধুরী ও গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাব সভাপতি এম এ মতিনকে মঙ্গলবার সিলেট ওসমানী হাসপাতালে দেখতে যান সাবেক এমপি দিলদার হোসেন সেলিম সহ রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন নেতৃবৃন্দ।
এসময় নেতৃবৃন্দ আইনশৃংখলার অবনতিতে তীব্র ক্ষোভ পকাশ করেন এবং অবিলম্বে ডাকাতদের গ্রেফতার ও আইনশৃংখলার উন্নতি সাধনের জোর দাবি জানান।