ইনাতগঞ্জ বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড : ৬টি দোকান পুড়ে ছাই, প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১০:১০ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে ইনাতগঞ্জ মধ্য বাজারে এ ভয়াবহ অগ্নিকান্ড সংঘটিত হয়। এ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ভয়াবহ এ অগ্নিকান্ডে রড, সিমেন্ট, কাপড়ের দোকান, চালের দোকানসহ কমপক্ষে ৬টি দোকান সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়েছে। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একদল কর্মী প্রাণপণ চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।
পরে হবিগঞ্জ থেকেও দমকল বাহিনীর একদল সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে সহযোগিতা করে। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ, রাজনৈতিক, সামাজিক ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের শান্তনা দেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানপাট বন্ধ করে বাড়ী চলে যান। রাত ১০টার সময় ইনাতগঞ্জ মধ্য বাজারের ব্যবসায়ী জয়নাল মিয়ার মেলামাইনের দোকানে প্রথম আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যায়। মুহূর্তের মধ্যেই দাউদাউ করে আগুন আশেপাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।
অগ্নিকান্ডের খবরে ইনাতগঞ্জ বাজারসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোর মসজিদে খবর প্রচার করা হলে শত শত মানুষ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। কিন্তু এত মানুষ থাকা সত্ত্বেও সবাই ছিলেন আগুনের কাছে অসহায়। শত শত মানুষ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হন। আগুনের ভয়াবহতা চলে যায় অনেক উপরে। এ সময় ইনাতগঞ্জ বাজারের বাসা বাড়িতে থাকা লোকজন ছোট শিশুদের নিয়ে এদিক সেদিক ছুটাছুটি করে বাহিরে আসেন। এ সময় ধাক্কাধাক্কিতে অনেকেই আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের নাম জানা যায়নি।
খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থেকে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন দুটি গাড়ী নিয়ে ইনাতগঞ্জ বাজারস্থ অগ্নিকান্ডস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রাণপণ চেষ্টা চালানোর পরে হবিগঞ্জ থেকে ফায়ার সার্ভিসের আরেক দল ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। এ সময় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই ধর্মজিত সিনহার নেতৃত্বে একদল পুলিশ সহযোগিতা করেন। কিন্তু এর আগেই অগ্নিকান্ডে ৬টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলো হলো জয়নাল মিয়ার মেলাইমাইন, খেলনা ও প্লাস্টিকের দোকান, আশরাফুল ইসলামের কাপড়ের দোকান, ইজাজুর ইসলামের রড সিমেন্টের দোকান, আমিনুর রহমানের চাউলের দোকান ও সঞ্জয়ের সেলুন ও শান্তা হার্ডওয়ার।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ছিল আমাদের আয়ের এক মাত্র অবলম্বন। কিন্তু ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে আমাদের সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেল। এ অগ্নিকান্ডে আমরা প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত জানা না গেলেও ধারনা করা হচ্ছে ইলেক্টিক শর্ট সার্কিট বা কয়েলের আগুন থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত ঘটতে পারে।
এ ঘটনার খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী, হবিগঞ্জের সার্কেল এএসপি রাসেলুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী, নবীগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র এটিএম সালাম, ইনাতগঞ্জ হাই স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাসুদ আহমেদ জিহাদী, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল মালিক, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হেলিম উদ্দিন, তোফাজ্জল হোসেন, আবুল কালাম আজাদ, নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাকিল হোসেন, প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক মতিউর রহমানসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এছাড়াও ঘটনার সাথে সাথে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা জীতেন্দ্র কুমার নাথ, থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল বাতেন খাঁন ও শ্রীমঙ্গল র্যাব ক্যাম্প-৯ এর একদল সদস্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।