কিবরিয়া হত্যা: এক যুগ পরও বিচার না পাওয়ার হতাশায় সিলেটবাসী
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ জানুয়ারি ২০১৭, ২:৫৭ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
রাজনীতিতে সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি ছিল তার। অসাধারণ প্রতিভাবান হিসেবে তাকে অগ্রাহ্য করতে পারেনি কেউ। পাঁচ বছর অর্থমন্ত্রী থাকাকালে এতটুকু কালিমা লাগেনি গায়ে। এই মানুষটিকেই জনসভায় গ্রেনেড ছুড়ে হত্যা করা হয়েছে। প্রকাশ্যে ঘটা এই হত্যার বিচার করা যায়নি এক যুগেও। এ নিয়ে তার স্বজন, শুভানুধ্যায়ী, রাজনৈতিক সহকর্মী আর এলাকাবাসীর ক্ষোভ চরমে।
তিনি শাহ এ এম এস কিবরিয়া। অর্থনীতির ছাত্র হিসেবে সমাদৃত ছিলেন সারা বিশ্বেই। বাড়ি দেশের উত্তর পশ্চিমের ছোট্ট জেলা হবিগঞ্জে। রাজনীতিতে যোগ দিয়ে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে সুনাম কুড়ান। পাঁচ বছর পর নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের ভরাডুবি হলেও কিবরিয়া এবং তার জেলায় নৌকার তিন প্রার্থী ভোটে জিতেন অবলীলায়।
এলাকায় কিবরিয়া ছিলেন ভীষণ জনপ্রিয়। বিরোধী দলে থাকার সময়ও তিনি নিজ এলাকার জনগণের জন্য কাজ করেছেন, ছুটে এসেছেন বারবার। সব শেষ গিয়েছিলেন ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি। শীতের বিকালে তিনি জনসভা করেছিলেন বৈদ্যেরবাজারে। এই শেষবার তাকে দেখতে পেয়েছে এলাকার মানুষ। জনসভা থেকে ফেরার পথে গ্রেনেড হামলায় ক্ষতবিক্ষত হন তিনি।
কিবরিয়াসহ আহতদের নিয়ে যাওয়া হয় হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে। আওয়ামী লীগ নেতারা ঢাকায় নিয়ে যেতে হন্যে হয়ে খোঁজ করেন একটি হেলিকপ্টারের। কিন্তু সে সময়ের জোট সরকার সেই ব্যবস্থা করেনি। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে কিবরিয়া ও আবু জাহিরকে ঢাকায় পাঠানো হয়। কিন্তু রাজধানীর হাসপাতালে আসার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই হামলায় কিবরিয়া, তার ভাতিজা শাহ মনজুরুল হুদা, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী প্রাণ হারান। আহত হন কমপক্ষে ৭০ নেতাকর্মী।
কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া বর্তমানে বিদেশে আছেন। তবে তার আমেরিকা প্রবাসী মেয়ে নাজলী কিবরিয়া দেশে এসেছেন। তিনিও এই মামলার বিচার দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছেন।
কিবরিয়ার ওপর গ্রেনেড হামলায় স্বামী আব্দুর রহিমকে হারিয়েছেন স্ত্রী আফিয়া খাতুন। এই পৃথিবী তার কাছে বিস্বাদ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে কিছুই চাই না। মৃত্যুর আগে তার স্বামী হত্যার বিচার দেখতে চাই।’
নিহত ছিদ্দিক আলীর ছেলে কুদ্দুছ মিয়া বলেন, ‘বিচার তো শেষই হয় না। কবে খুনিদের শাস্তি হবে, আমি শান্তি পাবো।’