মৌলভীবাজারে ভূমিকম্পে থানা, জেলা পরিষদ, সরকারী বিভিন্ন স্থাপনাসহ অর্ধশতাধিক কাঁচাঘর বিধ্বস্ত, আহত ১০
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ জানুয়ারি ২০১৭, ১১:২২ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজঃ
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্প অনুভুত হয়েহে। ভূমিকম্পে থানা ভবন, পৌরভবন, জেলা পরিষদ অডিটরিয়াম, ব্রীজ এর ফাটল সৃষ্টিসহ কাঁচা বাড়ি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে মাটি ভেদ করে পানি ও বালু বের হয়েছে। আতংকে মানুষজন ঘর হতে দ্রুত বের হতে গিয়ে এ সময় ঘর ভেঙ্গে ও ছোটাছোটি করতে গিয়ে ৮/১০ জন আহত হয়েছেন।
জানা যায় , মঙ্গলবার বেলা ৩টা ৯ মিনিটে ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল কমলগঞ্জ উপজেলার দলই সীমান্তের ওপারে ভারতের ত্রিপুরার আমবাসায় অর্থাৎ কমলগঞ্জ উপজেলা থেকে ৫০ কিলোমিটার দক্ষিনে হওয়ার কারনে কম্পন বেশী অনুভূত হযেছে। ভূমিকম্পের প্রভাবে কমলগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার চন্ডিপুরস্থ এলাকায় অবস্থিত কমলগঞ্জ হাই স্কুল মাঠ ও কমলগঞ্জ ইউনিয়ন তহসীল অফিস সংলগ্ন স্থানে, কুমড়াকাপন দলিল লেখক মুহিবুর রহমানের ফসলি জমি, রানীবাজার, শিববাজার, শিমুলতলা এলাকায় মাটি ফেটে পানি ও বালু বের হয়েছে।
এছাড়া কমলগঞ্জে বিভিন্ন এলাকার অর্ধ শতাধিক কাঁচাঘর ধসে পড়েছে। ভানুগাছ বাজার, শমসেরনগর, আদমপুর, মাধবপুর বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্টানের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বাড়ি ঘরের টিভি, ফ্রিজ সহ আসবাবপত্র কম্পনের ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কমলগঞ্জ থানা ভবন, কমলগঞ্জ পৌরসভা ভবন, কমলগঞ্জ জেলা পরিষদ অডিটরিয়াম, শুকুর উল্লা গ্রামে ধলাই নদীর উপর নিমির্ত ব্রীজে ফাটল ও হেরেঙ্গাবাজার এলাকায় ধলাই নদীর পার্শ্বে ফাটল দেখা দিয়েছে।
এছাড়া পৌর মেয়রের বৈঠক ঘর, চন্ডিপুর এলাকায় আমরু মিয়া, কুমড়াকাপন গ্রামের টনু মিয়ার ঘর, বড়গাছ গ্রামের আমির মিয়ার চিৎলীয়া গ্রামের মনতাজ মিয়া, সুফিয়ান মিয়া ঘর সহ প্রায় অর্ধ শতাধিক কাঁচা-অর্ধ কাঁচা ঘর বিধবস্ত হয়েছে।বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে উপরে পড়ে শমশেরনগর ইউনিয়নের ভরতপুর গ্রামের মরিয়ম বেগম (৪০) আহত হয়েছেন।
ঘর বিধবস্ত হয়ে আহত হয়েছেন উত্তর তিলকপুর গ্রামের রঞ্জিত কর ও জালালীয়া গ্রামের শফিকুর রহমান ও উত্তর ভানুবিল গ্রামের উজ্জল সিংহ। আহতদের কমলগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে গুরুত্ব আহত অবস্থায় মনতাজ ও সুফিয়ানকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়া দেয়াল ভেঙ্গে, ইটের আঘাতে ও বৈদ্যুতিক তারের কারণে চারজন আহত হয়েছেন। বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে উপরে পড়ে শমশেরনগর ইউনিয়নের ভরতপুর গ্রামের মরিয়ম বেগম (৪০) আহত হয়েছেন। বিভিন্ন এলাকার গ্রামীন রাস্তাঘাটে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল কমলগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ৪০ কি:মি: দক্ষিণ পূর্ব দিকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আমবাসা এলাকা। কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জুয়েল আহমদ বলেন, তার জীবনে এভাবে ঝাঁকুনি দিয়ে ভূমিকম্প তিনি অনুভব করেননি। তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন কমপক্ষে দেড় শতাধিক বাড়ি ঘরের ফাটল দেখা দিয়েছে। তাছাড়া ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হক ভূমিকম্পের সঠিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও সঠিকভাবে পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে অসংখ্য বাড়ি ঘরে ফাটল, জমি ফেটে পানি ও বালি বের হওয়া, পৌরভবনও অডিটোরিয়ামে ফাটলসহ দেবে যাবার সত্যতা নিশ্চিত করেন তিনি। তবে ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির সার্বিক তথ্য উপজেলা প্রশাসন থেকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান। এদিকে কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জুয়েল আহমেদ পৌরসভা ভবন ও পৌরএলাকার ক্ষয়ক্ষতির স্বীকার করেছেন।