গোয়ালাবাজার কলেজকে জাতীয়করনে সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ আন্দোলনকারীদের
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ ডিসেম্বর ২০১৬, ৬:১৫ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজঃ ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত তাজপুর ডিগ্রি কলেজকে জাতীয়করণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করে নবনির্মিত গোয়ালাবাজার মহিলা কলেজকে জাতীয়করণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওসমানীনগর উপজেলাবাসী।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সম্মুখে এই বিষয়গুলো তুলে ধরেন তাজপুর ডিগ্রি কলেজের সংশ্লিষ্টরা।
এ সময় বক্তারা বলেন, তাজপুর ডিগ্রি কলেজ ওসমানীনগর তথা বিশ্বনাথ ও বালাগঞ্জের সবচেয়ে প্রাচীন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এই অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক কমরেড আজহার আলী ও কমরেড আসাদ্দর আলী এবং এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গের প্রচেষ্টায় কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কলেজটি এলাকার শিক্ষার প্রসারে নিরবচ্ছিন্ন ভূমিকা পালন করে আসছে।
বর্তমানে কলেজটিতে ৩টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু আছে। উচ্চমাধ্যমিক ও ডিগ্রিসহ কলেজে অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা দুই সহস্রাধিক। সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক পার্শ্বে প্রায় ১০ বিঘা জমির উপর প্রতিষ্ঠিত কলেজটির অবকাঠামোসহ সামগ্রিক পরিবেশ অত্যন্ত মনোরম।
সম্প্রতি সরকার দেশের যে সমস্ত উপজেলায় সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই, সেই সমস্ত উপজেলায় একটি করে স্কুল ও কলেজ জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সিলেট বিভাগের প্রায় প্রতিটি উপজেলার ১টি প্রাচীন ও মানসম্পন্ন কলেজ জাতীয়করণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলেও ব্যতিক্রম ঘটে ওসমানীনগর উপজেলায়।
১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রথম ডিগ্রি কলেজকে বাদ দিয়ে নবনির্মিত মহিলা কলেজকে জাতীয়করণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অথচ সরকারিভাবে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় জাতীয়করণের বিষয়টি যখন বিবেচনা করা হয়। তখনই তাজপুর কলেজের জন্য সরকারীকরণের জন্য আবেদন পেশ করা হয় সাথে সাথে।
কিন্তু ১৪ ডিসেম্বর বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকার মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিলে তাজপুর ডিগ্রি কলেজ জাতীয়করণের দাবিতে বেলা ১১ টা থেকে ২টা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টা ঢাকা-সিলেট মহসড়ক অবরোধ করা হয়। প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধে বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।
উল্লেখিত সময়ের মধ্যে তাদের পক্ষ থেকে বিষয়টি সুরাহার আশ্বাস প্রদান করা হয় অন্যথায় ২৪ ডিসেম্বর থেকে এ আন্দোলনে তাদের সর্বাত্মক সমর্থন ও অংশ গ্রহণে স্বতঃ:স্কুর্ত ঘোষণা প্রদান করা হবে।
সরকার যে নীতিমালার ভিত্তিতে কলেজ জাতীয়করণ করছেন তার সবগুলো বিদ্যমান থাকা স্বত্বেও ওসমানীনগর উপজেলা সদরে অবস্থিত অত্র কলেজটি জাতীয়করণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রী এবং সর্বোপরি এলাকার মানুষ অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে ১৫ ডিসেম্বর থেকে সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ, মানববন্ধন, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ইতিমধ্যে পালন করা হয়েছে।
বক্তারা বলেন, দাবি আদায়ে আগামীতে আরো কঠিন ও কঠোর কর্মসূচী গ্রহণ ও জাতীয়করণ এখন সময়ের যৌক্তিক দাবি। কলেজটি জাতীয়করণ করা হলে এই অঞ্চলের অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী উপকৃত হবে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের মানসম্পন্ন উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিত হবে। এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মো. মনু মিয়া অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত), ড. সৈয়দ আব্দুল মোতাকাব্বির আহ্বায়ক, সদস্য পরিচালনায় ছিলেন আব্দাল মিয়া, ড. ফখরুল ইসলাম, অধ্যাপক প্রাণকান্ত দাস, অধ্যাপক ফখরুল আবেদীন চৌধুরী, অধ্যাপক মসরুজ্জামান ও সঞ্চালনায় ছিলেন অধ্যাপক আবুল খায়ের প্রমুখ।