উপেক্ষিত তাজপুর ডিগ্রী কলেজ, আন্দোলনের ব্যাপক প্রস্তুতি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬, ১২:২৯ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
৪৪ বছর ধরে উপেক্ষিত তাজপুর ডিগ্রী কলেজ। ওসমানীনগরের ঐতিহ্যবাহী এ কলেজের সরকারীকরণের দাবী নিয়ে সোচ্চার এলাকার সর্বসাধারণ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ অবধি তাজপুর ডিগ্রী কলেজের দাবী দাবীই রয়ে গেছে। কিন্তু এবার জোরেশোরে আন্দোলনে নামছেন এলাকাবাসীসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গণস্বাক্ষর গ্রহণ, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট, স্মারকলিপি প্রদান, সংবাদ সম্মেলন, মিছিল, মানববন্ধন ও জনসংযোগ কর্মসূচী নিয়ে মাঠে নামছেন তারা। সম্প্রতি এলাকার আরেক প্রতিষ্টান গোয়ালাবাজার আদর্শ মহিলা কলেজ সরকারীকরন হওয়ার পরদিনই কলেজের ছাত্র, শিক্ষক, ও এলাকাবাসী রাস্তায় নেমে আসেন তাদের দাবী আদায়ের জন্য। প্রায় কয়েক ঘন্টা অবরোধ করে রাখেন ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক।
জানা যায়, কলেজ সরকারী করনের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তাদের তদন্ত কার্যক্রম ও শেষ করেছিল । যখন অনুমোদন পাওয়া সময়ের ব্যাপার ছিল তখনই অজানা কারণে আটকে গেছে সকল কার্যক্রম ।
সংশ্লিষ্ট কলেজ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭২ সালে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য স্বাধীন বাংলার উপহার স্বরূপ কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। কমরেড আসাদ্দর আলী ও আজাহার আলী উদ্যোগে এবং এলাকার মানুষের সার্বিক সহযোগিতায় ৩ একর ১৪ শতক জায়গার উপর কলেজটি যাত্রা শুরু করে। প্রাথমিকভাবে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী দিয়ে যাত্রা করলেও পরবর্তীতে স্নাতক পাস কোর্স চালু করা হয়। তবে এখানে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীতে বিজ্ঞান বিভাগ চালু থাকলেও স্নাতক পর্যায়ে বিজ্ঞান বিভাগ এখনও নেই।
রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সধীর পাল কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। যাকে রবীন্দ্রনাথ নিজে বলেছিলেন, “আমার সুধীর বাংলা জানে।” মাত্র হাতেগোনা কয়েকজন ছাত্র ছাত্রী নিয়ে কলেজটির পাঠদান কার্যক্রম শুরু হলেও এখন উচ্চ মাধ্যমিক এবং স্নাতক শ্রেণী মিলিয়ে ১৮০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে।
টিন ও বাঁশের তৈরি কয়েকটি কক্ষের মধ্যে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়ে আজ দু’টি পাকা দ্বিতল ভবন, দু’টি আধপাকা ভবন, কয়েক হাজার বই সমৃদ্ধ লাইব্রেরী, পুকুরসহ অবকাঠামোগত সমৃদ্ধি চোখে পড়ার মত। সম্প্রতি যোগ হয়েছে একটি মসজিদ। একজন প্রবাসী মসজিদ নির্মাণের যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করছে।
শুরুতে কলেজ শিক্ষকদের বেতন ভাতা দিতে কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটি হিমশিম খেলেও ১৯৯০ সালে কলেজটি এমপিও ভুক্ত হলে সে সমস্যা দূর হয়।
প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে সকল বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ করা না গেলেও পরবর্তীতে সকল বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। বর্তমানে দু’জন পিএইচডি ডিগ্রীধারীসহ ১৬জন এমপিওভূক্ত শিক্ষক, খন্ডকালীন ০৭জন শিক্ষক, ১জন লাইব্রেরিয়ান,৩জন অফিস সহকারী এবং পিয়ন ও নাইট গার্ড ৬জন কর্মরত রয়েছেন।