চা শহর শ্রীমঙ্গলে জেকেঁ বসেছে শীত
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬, ২:১৭ অপরাহ্ণ
তোফায়েল আহমেদ পাপ্পু, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার)থেকে:
শীত মৌসুম শুরু না হলেও দেশের অন্যতম শীত প্রধান অঞ্চল শ্রীমঙ্গলে প্রতিদিন নামছে তাপমাত্রা। এবছর অনেকটা আগে ভাগেই শীত জেঁকে বসেছে চা বাগান অধ্যুষিত মৌলভীবাজারের চা শহর শ্রীমঙ্গলে। গত এক সপ্তাহ ধরে সেখানকার তাপমাত্রা ১০ থেকে ১১ ডিগ্রীর মধ্যে উঠা নামা করেছে। শনিবারও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় শ্রীমঙ্গলে ১১ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। গত দুই দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে আরো ১ ডিগ্রী। যেখানে শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১০ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে মানুষ আগুন জ্বালিয়ে শীত থেকে রেহাই পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। শীতবস্ত্রের দোকান সহ ফুটপাতের দোকান গুলিতে ভীড় লক্ষ করা গেছে।
মৌলভীবাজার জেলার শীতের নগরী হিসাবে সবার কাছে পরিচিত। ভোর থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত চা বাগান এলাকা ঢাকা থাকে কুয়াশার চাদরে। আর সেই কুয়াশা ভেদ করে আশেপাশের বিভিন্ন পাহাড়ী টিলা থেকে লেবু আনারস নিয়ে শ্রমিকদের ছুটে চলার দৃশ্য মনমুগ্ধকর। আবার বিকেল গড়াতে না গড়াতেই হীম শীতল ঠন্ডা ও ঘন কুয়াশার কারণে আবারো চা বাগান এলাকায় নেমে আসে দুর্ভোগ। শীতের তীব্রতার পাশাপাশি দেরিতে সূর্যের আলো দেখা যাওয়ায় কনকনে ঠান্ডা বাতাস ও তীব্র শীতের কারণে কয়েক লক্ষাধিক চা শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
এদিকে ঠন্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। দিনের বেলায় রোদের কারণে আবহাওয়া কিছুটা গরম থাকলেও রাতের বেলায় কুয়াশার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় অনেকাংশে বেড়ে যায় ঠান্ডার পরিমান। ফলে শিশুদের পাশাপাশি বয়স্করাও আক্রান্ত হচ্ছে সর্দিকাশি নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন প্রকার শীতজনিত রোগে। এছাড়াও শীতের কারণে চা বাগানের কাজকর্মে দেখা দিয়েছে মন্দা ভাব। তাছাড়া শীত বস্ত্রের অভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এসব নিম্ন আয়ের দিন মজুরদের। প্রতিদিন তাপমাত্রা নামায় ছোট বড় মিলিয়ে শতাধিক চা বাগান ঘেরা শ্রীমঙ্গলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চা শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষদের।
স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা গেছে বিগত কয়েক বছর ধরে এই সময়টাতে শ্রীমঙ্গলের তাপমাত্রা একই রকম ছিল। তবে ডিসেম্বর এর শেষে তাপমাত্রা নামার সাথে সাথে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ নামার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার কর্মকর্তা।
আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক হারুন অর রশীদ বলেন, বাংলাদেশের শীত প্রধান এলাকা হল শ্রীমঙ্গল। প্রতিদিনই এখানে তাপমাত্রা উঠা নামা করে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় গত তিন চার দিনের তাপমাত্রা ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করেছে। এই তাপমাত্রা হয়ত আরো কমতে পারে। গত বছরের তাপমাত্রা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে ডিসেম্বরের শেষের দিকে তাপমাত্রা আরো কমার সম্ভাবনা আছে।