যেকোনো দিন মুক্তি পাবেন আরিফ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬, ১:৩৯ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র (সাময়িক বরখাস্তকৃত) আরিফুল হক চৌধুরী নিজের উপর দায়েরকৃত দু’টি হত্যা মামলা ও দু’টি বিস্ফোরক মামলার সবক’টিতেই জামিন পেয়েছেন। এ কারণে সাময়িক বহিস্কৃত এই জনপ্রতিনিধির জামিনে কারামুক্তিতে আর কোন বাধা নেই। যেকোনো দিনই তিনি মুক্তি পেতে পারেন। বর্তমানে আরিফুল হক চৌধুরী সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।
সর্বশেষ তিনি জামিন পেয়েছেন সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে বোমা হামলায় নিহতের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায়। এ মামলাতে সোমবার সিলেট সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মেয়র আরিফুল হক ও হবিগঞ্জ পৌরসভার সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র জিকে গউছকে ৬ মাসের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এর আগে থেকেই কারান্তরিন আরিফুল হক চৌধুরী গ্রেনেড হামলায় নিহত অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলা ও বিস্ফোরক মামলা এবং সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে বোমা হামলায় জামিনে আছেন। কিন্তু সুনামগঞ্জের এ হত্যা মামলাটির কারণে জামিনে তার মুক্তি আটকে ছিল।
পৃথক পৃথক আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে দুজনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট এম. মাসুদ রানা, মোস্তাফিজুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশিরউল্লাহ।
পরে আইনজীবী মাসুদ রানা সাংবাদিকদের জানান, সবগুলো মামলায় জামিন পাওয়ায় আরিফুল হকের মুক্তিতে বাধা নেই। তবে মেয়র গউছের বিরুদ্ধে আরো মামলা থাকায় তিনি আপাতত মুক্তি পাচ্ছেন না।
এর আগে দিরাইয়ে বোমা হামলার আরেকটি মামলায় রোববার আরিফুল হককে জামিন দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যার ঘটনায় বিষ্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় জিকে গউছকে ৬ মাসের জামিন দেন আদালত।
২০০৪ সালের ২১ জুন দুপুরে দিরাই বাজারে একটি সমাবেশে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এ সমাবেশে প্রধান অথিতি হিসেবে বক্তব্য রাখছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। বোমা হামলায় যুবলীগের একজন কর্মী নিহত হয় ও ২৯ জন আহত হয়।
ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। সে সময় এসআই হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে দিরাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদরের বৈদ্যের বাজারে ঈদপরবর্তী এক জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলার শিকার হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া। ঢাকা নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। ওই হামলায় আরও নিহত হন কিবরিয়ার ভাতিজা শাহ মনজুরুল হুদা, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী। আহত হন শতাধিক নেতাকর্মী। হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ খান ওই রাতেই হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন।
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর কিবরিয়া হত্যা মামলায় আত্মসমর্পণ করলে আরিফুল হক চৌধুরীকে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন আদালত। এর দুই দিন আগে ২৮ ডিসেম্বর একই মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে গোলাম কিবরিয়া গউছকেও কারাগারে পাঠিয়ে দেন আদালত।