সিলেটে বিষাক্ত পটকা মাছ বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ ডিসেম্বর ২০১৬, ৪:০২ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
পটকা মাছ বিক্রি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সিলেট জেলা প্রশাসন। সিলেটের কোনো বাজারে বিক্রি করতে দেখা গেলে এই মাছ জব্দ করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীন জানান- বৃহস্পতিবার (০৮ ডিসেম্বর) থেকে এ আদেশ কার্যকর হবে।
‘পটকা মাছ’ প্রসঙ্গ:
এর ইংরেজি নাম পাফার ফিশ (Puffer Fish), বৈজ্ঞানিক নাম কাটকাটিয়া (Cutcutia)।
স্বাদুপানি এবং লোনাপানি- উভয় পরিবেশেই বাস করতে পারে পটকা মাছ। আত্মরক্ষার প্রয়োজন হলে পেট ভর্তি বাতাস নিয়ে এরা নিজেদের বেলুনের মতো ফুলিয়ে ফেলে।
বাণিজ্যিক গুরুত্ব না থাকলেও স্থানীয় বাজারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে পটকা মাছ। বিষাক্ত জেনেও ক্রেতারা কিনছেন পটকা মাছ।
এ প্রসঙ্গে সিলেট জেলা মৎস কর্মকর্তা সুলতান আহমদ বলেন- দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর কোথাও কোথাও বিশেষ পদ্ধতিতে রান্না করে পটকা খাওয়া হয়। কিন্তু মাছটি বিষাক্ত।
তিনি বলেন- বাংলাদেশে তিন প্রজাতির পটকা মাছ পাওয়া যায়। সবুজ পটকার বৈজ্ঞানিক নাম সেলোনোডন ফ্লুভিয়াটিলিস (Chelonodon fluviatilis)। এর শরীর কিছুটা চাপা। প্রায় ১২ সে.মি. লম্বা হয় এরা। মাথা ও পিঠ চওড়া, লেজের দিকটা সরু। এদের পিঠের দিক জলপাই রঙ, পাশে ও পেটের অংশ সাদা এবং পিঠে কালো কালো দাগ থাকে।
গঙ্গার পটকা। এর ইংরেজি নাম সি. পাটোকা (C. patoca)। এরা প্রায় ৮ সে.মি. লম্বা হয়। মাথা চওড়া, শরীরে রঙ বাদামি বা কালো হয়ে থাকে। পেটের অংশ রুপালি এবং গোলাকার দাগ থাকে।
আরেকটি হলো টেট্রাডন কাটকাটিয়া (Tetradon cutcutia)। এদের মাথা ও পিঠ চওড়া এবং লেজের দিকটা হঠাৎ সরু হয়। পিঠের রঙ সবুজ-হলুদ, পেটের রঙ সাদা।
সুলতান আহমদ বলেন, পটকা মাছের চামড়া, কলিজা, চামড়ার নিচের অংশ বিষাক্ত। যে কারণে ওই অংশসহ রান্না করে খেলে মানুষ মারা যায়। পটকা মাছ খাওয়ার বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস বিজ্ঞান বিভাগের ডিন ড. মো. শাহাব উদ্দিন বলেন- বিষাক্ত একটি পটকা মাছের বিষে কমপক্ষে ৩০ জন মারা যেতে পারে। প্রতি বছর এই মাছ খেয়ে মানুষ মারা গেলেও বাংলাদেশে তেমন একটা গবেষণা হয়নি। গবেষণা হলে প্রাণহানি বন্ধের পাশাপাশি হয়তো বিষ কাজে লাগানো যেতো।