একাত্তরের এই দিনে জগন্নাথপুর শত্রু মুক্ত হয়
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ ডিসেম্বর ২০১৬, ১:৪১ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
আজ (শুক্রবার) ৯ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে জগন্নাথপুর থানা শত্রুমুক্ত হয়েছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধে জগন্নাথপুরে ইতিহাসের বর্বরতম গনহত্যা সংগঠিত হয়েছিল। হানাদারদের নৃশংসতা ও রাজাকারদের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে বলিষ্ট ভুমিকা রেখেছেন এ অঞ্চলের জনগন। জগন্নাথপুরের বিপুল সংখ্যক ছাত্র, যুবক, শিক্ষক, কৃষক, আইনজীবি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
একাত্তরের ৩১ আগষ্ট শ্রীরামসী ও ১ সেপ্টেম্বর রানীগঞ্জ বাজারে পাক হানাদাররা চালায় ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ। শত শত মানুষকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে হত্যা করে। সেই পৈশাচিক হত্যাকান্ড আজও এ অঞ্চলের মানুষের হৃদয়ে নাড়া দেয়।
৯ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে শত্রুমুক্ত হয় জগন্নাথপুর থানা। সাহসী যুদ্ধাদের কাছে রাজাকার, পাকসেনারা সেদিন আত্মসমর্পন করে। জগন্নাথপুর থানায় প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যারিষ্টার মরহুম মির্জা আব্দুল মতিন। মুক্তিযুদ্ধে এ থানায় গৌরবোজ্জল ভুমিকা রেখেছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মরহুম আব্দুস সামাদ আজাদ, সাবেক এমপি মরহুম এডভোকেট আব্দুর রইছ, ব্যারিষ্টার মির্জা আব্দুল মতিন, আব্দুল কাদির শিকদার, আব্দুল কাইয়ুম, আব্দুল হক, ব্যারিষ্টার মির্জা আব্দুল ওয়াহিদ, মির্জা আব্দুছ ছত্তার, বাদল চৌধুরী, মাহবুবুর রহমান, আখলাকুর রহমান, ইন্তাজ আলী, রসরাজ বৈদ্য, মিজানুর রহমান, মানিক পাল, সৈয়দ আতাউর রহমান, সিরাজুল ইসলাম, সাজ্জাদুর রহমানসহ অনেকে।
তবে মুক্তিযুদ্ধকালীন কোম্পানী কমাণ্ডার সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, দেশ স্বাধীনের পর থেকে আমরা ১১ নভেম্বর জগন্নাথপুর মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করে এসেছি। গত ৩ বছর ধরে ৯ ডিসেম্বর জগন্নাথপুর মুক্ত দিবস পালন করা হচ্ছে। এতে করে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি অসুস্থ থাকায় এবার ১১ নভেম্বর জগন্নাথপুর মুক্ত দিবস পালন করা সম্ভব হয়নি। জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির জানান, গত বছর স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা ৯ ডিসেম্বর জগন্নাথপুর মুক্ত দিবস পালন করেছেন। আমার মনে হয় ৯ ডিসেম্বর সঠিক।
আজ (শুক্রবার) ৯ ডিসেম্বর জগন্নাথপুর মুক্ত দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে এক আনন্দ র্যালী উপজেলা পরিষদ থেকে বের হয়ে পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিন করে। শুক্রবার সকালে এই আনন্দ র্যালী অনুষ্ঠিত হয়। র্যালীতে নেতৃত্ব দেন জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আকমল হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাসুম বিল্লাহ,জগন্নাথপুর প্রেসক্লাব সভাপতি শংকর রায়, মুক্তিযো্দ্ধা সংসদের কমান্ডার আব্দুল কাইয়ুম,ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হক, মুক্তিযোদ্ধা রনজিত দাস,ইলিয়াছ মিয়া, উপজেলা কৃষি অফিসার শওকত ওসমান মজুমদারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ মুক্তিযোদ্ধা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।