লন্ডনে বাড়ি-ঘরে চুরি : মাত্র ৮% চোর ধরা পড়ে, আতঙ্কিত বাংলাদেশীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ ডিসেম্বর ২০১৬, ৮:১৩ অপরাহ্ণ
লন্ডন অফিসঃ লন্ডনে ঘর-বাড়িতে চুরির ঘটনায় পুলিশের কাছে অভিযোগ করার পর মাত্র ৮ শতাংশ চোর ধরা পড়েছে। ইন্টিপেনডেন্ট চ্যারিটি ভিকটিম নামে একটি সংগঠনের প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় বিবিসি। দিন দিন লন্ডনের বিভিন্ন এলাকায় চুরি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বাঙ্গালী অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসসহ লন্ডনের বাসিন্দারা আতঙ্কের মধ্য রয়েছেন।
পুর্ব লন্ডনের বাসিন্দা আফরোজ আলী সুরমা নিউজ টুয়েন্টিফোর.কমকে জানান, “ইতা খুব খারাফ অবস্থার মাঝে আছি। ডরর মাঝে থাকা লাগে। ঘরর মহিলা অকলরে কইয়া রাখছি অপরিচিত কেউ আইয়া দরজাত ডাকলে খুলতানা। বিল বা যে কোন জিনিষ দেখার কথা কইয়া ইংলিশ বালা কাপড় পিনদিয়া আয়। কুন্তা বুঝার উপায় নাই কে চুর আর কে ভালা মানুষ।
গত ২৯ নভেম্বর বিবিসি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘরবাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটলে অনেকে পুলিশকে বিষয়টি জানান না। আর যেসব ঘটনা সম্পর্কে পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়ে সেগুলোর মধ্যে মাত্র ৮ শতাংশ ক্ষেত্রে চোর ধরতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালে লন্ডন মহানগরে মোট ৪৪ হাজার ৬৮৩টি চুরির ঘটনার নালিশ পায় পুলিশ। এর মধ্যে মাত্র ৩ হাজার ৫৭৫ জন সন্দেহভাজনকে হয় অভিযুক্ত করেছে কিংবা সতর্ক করেছে পুলিশ। যা মোট প্রাপ্ত অভিযোগের মাত্র ৮ শতাংশ। বাকী ঘটনায় জড়িতদের কোনো হদিস খুঁজে পায়নি পুলিশ।
অপরাধী সনাক্তকরণের এই হার ২০১৪ সালের তুলনায় শূণ্য দশমিক ৬ শতাংশ কম। ২০১৪ সালে পুলিশ ৮.৬% ক্ষেত্রে চোর ধরতে সক্ষম হয়েছিল। মেট্রোপলিটন পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, লন্ডন মহানগরীর বাসা-বাড়ীতে চুরির ঘটনা রোধে তারা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি পুলিশের টহল বাড়ানোর মাধ্যমে তারা অপরাধ দমনের চেষ্টা করছে।
‘ইনডিপেন্ডেন্ট চ্যারিটি ভিক্টিম সাপোর্ট’ জানিয়েছে, ইংল্যান্ড ও ওয়েল্স-এ ঘরে চুরির শিকার হওয়া ১৪ হাজার ৮৭৬ ব্যক্তিকে সহায়তা দিয়েছে তারা। কেবল ২০১৫ সালে ওইসব ব্যক্তিদের সাহায্য প্রদান করা হয়।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, চুরির শিকার ব্যক্তিবর্গ বাড়ীতে ‘তাদের নিরাপত্তাবোধ’ হারিয়ে ফেলেছেন এবং তাদের নিজেদেরকে ঝুঁকিপূর্ণ, ভীত সন্ত্রস্ত এবং হতাশাগ্রস্ত বোধ করছেন। চোর ধরার ক্ষেত্রে পুলিশের যে নামমাত্র সাফল্য সেটা মানুষকে চুরির বিষয়ে অভিযোগ তুলতে নিরুতসাহিত করবে বলে আশঙ্কা করেছে সংগঠনটি। তারা বলছে, পুলিশকে প্রমাণ করতে হবে যে, মানুষ তাদের কাছে অভিযোগ নিয়ে হাজির হলে এর প্রতিকার মিলবে। এক একটি চুরির ঘটনা পুরো পরিবারকে বিপন্ন পর্যন্ত করে দিতে পারে। আর এ ভোগান্তি হয় সীমাহীন। তাই যাতে প্রতিটি চুরির ঘটনার বিষয়ে মানুষ পুলিশের আশ্রয় নিতে পারে এ জন্য আস্থা অর্জন জরুরি।