জেলা পরিষদ নির্বাচন : সিলেটে লড়তেই হচ্ছে লুৎফুরকে
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ ডিসেম্বর ২০১৬, ২:১৯ পূর্বাহ্ণ
ওয়েছ খছরু:
সঙ্গে মিসবাহ, কামরান, শফিক ও আশফাক। মাঝখানে অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান। বেশ উৎসবমুখর পরিবেশে গতকাল শেষ দিনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন সিলেট জেলা পরিষদের আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী লুৎফুর রহমান। এর আগে তিনি করেন মাজার জিয়ারতও। মনোনয়নপত্র জমা দিয়েই সাংবাদিকদের জানালেন, জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। সবাই পক্ষে একাট্টা রয়েছেন। এবারের সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আর একক প্রার্থী হতে পারছেন না অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান। তাকে নির্বাচনী বৈতরণী পাড়ি দিয়েই হতে হবে ‘নির্বাচিত চেয়ারম্যান’। সেই পথ ততটা মসৃণ হবে না। এ ইঙ্গিত ইতিমধ্যে দিয়ে দিয়েছেন অন্য প্রার্থীরা। আর আওয়ামী লীগেও আছে চাপা ক্ষোভ। সেটি কেউ প্রকাশ না করলেও নির্বাচনী মাঠে এর রেশ বেশ ভালভাবেই পড়বে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সিলেটে জমে উঠেছে জেলা পরিষদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে মাঠে নেই বিএনপি। এরপরও আওয়ামী লীগের ভেতরে একক প্রার্থী নিয়ে বেশ তোড়জোড় ছিল। সিলেটের ১২ উপজেলা চেয়ারম্যানও চেয়েছিলেন লুৎফুর রহমানকে একক প্রার্থী করতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটি আর হয়নি। তবে, এখনও সময় আছে। সেই প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে বলে গতকাল জানিয়েছেন সিলেটের এক উপজেলা চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান প্রবীণ রাজনীতিবিদ। তাকে সবাই ছাড় দিয়ে দিলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এ কারণে তারা প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছেন। তাদের সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যানরা রয়েছেন বলেও জানান তিনি। কিন্তু ছাড় দেয়ার অবস্থায় নেই নাগরিক কমিটির ব্যানারে থাকা প্রার্থী অধ্যক্ষ ড. এনামুল হক সর্দার, স্বাধীনতাত্তোর সিলেট ছাত্রলীগের সভাপতি জিয়াউদ্দিন লালা। তারা বুধবারই মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। আর গতকাল এসে যুক্ত হয়েছেন আরেক ব্যবসায়ী। জাতীয় পার্টি ঘরানার ওই ব্যবসায়ীর নাম ফখরুল ইসলাম সোহেল। তিনি দুপুরে সিলেটের সিনিয়র নির্বাচনী কর্মকর্তা আজিজুল ইসলামের কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করে মাঠে থাকার ঘোষণা দেন। বলেন, নির্বাচন সবার গণতান্ত্রিক অধিকার। এ কারণেই তিনি প্রার্থী হয়েছেন। একই সময় সিলেটের জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীনের কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী লুৎফুর রহমান। এর আগে সকালে তিনি সিলেটের ওলিকুল শিরোমনি হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন। সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদকে সঙ্গে নিয়ে তিনি মাজার জিয়ারত করেন। পরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। সেখানে তাদের সঙ্গে এসে যুক্ত হন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। ওই চার নেতা ও নেতাকর্মীদের বহর নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান। এ সময় জেলা প্রশাসনের হলরুমে উৎসবমুখোর পরিবেশে মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসন মো. জয়নাল আবেদীন। মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বাইরে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন লুৎফুর রহমান। বলেন, ‘জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। জনগণের উন্নয়নের জন্য সবসময় কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছি।’ এদিকে, গতকাল সকাল থেকে সিলেট জেলা ও বিভাগীয় নির্বাচনী কার্যালয়ে ছিল উপচে পড়া ভিড়। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সদস্য পদে প্রার্থীরা দলে দলে এসে মনোনয়নপত্র জমা দেন। নির্বাচন অফিস সূত্র জানিয়েছে, বুধবার ৭৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। বৃহস্পতিবার আরো শতাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। সিলেট জেলা পরিষদে এবার ১৫টি ওয়ার্ডে নির্বাচন হবে। এই ১৫টি ওয়ার্ডে ১৫ জন সাধারণ সদস্য ও ৫ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ডে সদস্য লড়াই করবেন। এসব পদে প্রার্থীদের মধ্যে ব্যবসায়ী, পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা বেশি বলে জানিয়েছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা।- মানবজমিন