চারলেনের মহাসড়কে বদলে যেতে পারে সিলেট
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ নভেম্বর ২০১৬, ১১:২০ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক চারলেনে উন্নিতকরণের চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে চীনের সাথে। এই চুক্তির পর থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পায়ন ও পর্যটনের নতুন সম্ভাবনা দেখতে শুরু করেছেন সিলেটের মানুষ। মহাসড়কটি শুধু যোগাযোগ ক্ষেত্রে নয়, এর মাধ্যমে শিল্পায়নে পিছিয়ে পড়া সিলেটে ঘটতে পারে শিল্প বিপ্লব। প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে ব্যবসা বাণিজ্যে মহাসড়কটি অর্থনৈতিক করিডোরের ভূমিকাও পালন করতে পারে- এমনটা প্রত্যাশা ব্যবসায়ী নেতাদের।
সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক চারলেনের দাবি সিলেটের মানুষের দীর্ঘদিনের। গত ৯ অক্টোবর চীনের সাথে চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে পূরণ হতে চলেছে এ দাবি। প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কাঁচপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত ২২৬ কিলোমিটার চারলেনের এই মহাসড়ক প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার কথা শিগগিরই। আর প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০১৮ সাল পর্যন্ত। ২০১৯ সালের শুরুতেই যান চলাচলের জন্য চারলেনের সড়কটি খুলে দেওয়ারও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। চারলেনের প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কমে আসবে ঢাকার সাথে সিলেটের যাতায়াতের সময়। এতে একদিকে সিলেটে যেমনি বাড়বে পর্যটকদের সংখ্যা, তেমনি বিকাশ ঘটবে পর্যটন শিল্প ও এ খাতের ব্যবসায়ের- এমন প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
এ ব্যাপারে সিলেট এক্সেলসিয়র রিসোর্ট ও পর্যটন কেন্দ্রের চেয়ারম্যান শাহজামাল নূরুল হুদা বলেন- সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক চারলেন হলে কমে আসবে যাতায়াতের সময়। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির কারণে বাড়বে পর্যটকদের আগমন। এতে সিলেটের পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসারও প্রসার ঘটবে।
সিলেট হোটেল এন্ড গেস্ট হাউস ওনার্স গ্রুপের সিনিয়র সহ সভাপতি সুমাত নূরী জুয়েল বলেন- সিলেটে প্রতিবছর নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্র আবিস্কার হচ্ছে। এতে দেশীয় পর্যটকের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। মহাসড়ক চারলেন হলে সিলেটের পর্যটনের প্রকৃত বিকাশ ঘটবে। এছাড়া সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের সাথে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কও চারলেন করা গেলে যারা ভারতের শিলংয়ে বেড়াতে যান তাদেরকেও সিলেটের প্রতি আকৃষ্ট করা যাবে। এতে বিদেশী পর্যটকের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে।
মহাসড়কটি চারলেনে উন্নিত হলে শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে না, এর সাথে এগিয়ে যাবে সিলেটের ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পায়ন। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও মহাসড়কটিকে অর্থনৈতিক করিডোর হিসেবে ব্যবহার করা যাবে বলে মনে করেন সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি সালাহ উদ্দিন আলী আহমদ।
তিনি বলেন- সিলেটে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও ইলেকট্রনিক্স সিটি হচ্ছে। সিলেট-ঢাকা মহাসড়কটি চারলেন হলে সিলেটের প্রবাসীরাও বিনিয়োগে এগিয়ে আসবেন। এতে শিল্পায়নে পিছিয়ে পড়া সিলেট অনেক এগিয়ে যাবে। এছাড়া ভারত, ভুটান ও নেপালের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এই মহাসড়কটিকে অর্থনৈতিক করিডোর হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। চারলেনের মহাসড়ক হলে সিলেটে পর্যটন শিল্পের যে বিকাশ ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে তাতে অর্থনৈতিক গুরুত্বের দিক থেকে গার্মেন্টস খাতকেও এটি ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক চারলেনে উন্নিত করতে প্রয়োজন পড়বে জমি অধিগ্রহণের। এই অধিগ্রহণে কোন ধরণের জটিলতা দেখা দিলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মহাসড়কটির কাজ শেষ করা সম্ভব নাও হতে পারে। এজন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের খেয়াল রাখারও পরামর্শ দিয়েছেন সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক চারলেন প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট জাতিসংঘের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. এ কে আবদুল মোমেন।