ওসমানীনগরে বিলুপ্তির পথে ইলিয়াস শাহী বংশের ঐতিহাসিক নিদর্শন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ নভেম্বর ২০১৬, ১০:২৬ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
ওসমানীনগরের বুরুঙ্গা ইউনিয়নের মোক্তারপুর পরগনার পশ্চিম তিলাপাড়া গ্রামে প্রায় ৬শ’ বছরের পুরনো শিলালিপি, পুরাকীর্তি, শাহী ঈদগাহ, শাহী মসজিদ ও পাঁচটি দীঘি সুলতানী আমলের স্মৃতি আজও বহন করে আছে। কিন্তু সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ না থাকায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে ইলিয়াস শাহী বংশের অপূর্ব নিদর্শনগুলো।
পশ্চিম তিলাপাড়া গ্রামের সর্বত্র জুড়ে আছে সুলতানী আমলের কীর্তি। গ্রামের উত্তরাংশে শাহ্ আদম কাখী মোক্তার (র.) নামে এক দরবেশের মাজার (যার নামে মোক্তারপুর পরগনার নামকরণ হয়)। মাজরের পূর্ব পাশে তার মা লাড়িবিবি’র মাজার রয়েছে। ওই স্থানে কনু শাহ্ নামীয় আরো একজন দরবেশের মাজার রয়েছে। বর্তমানে মাজারগুলো নিশ্চিহ্ন হওয়ার উপক্রম। এর দক্ষিণে বিশাল অংশ জুড়ে সুলতানী আমলের চিহ্ন রয়েছে। একাধিক স্থানে মাটির নিচে সারি সারি ইটের দেয়াল। শাহ্ আদম কাখী মোক্তার (র.) মাজারের উত্তরে রয়েছে শাহী ঈদগাহ। ওই মাজারের দক্ষিণে রয়েছে শাহী জামে মসজিদ ও উড়িশাহ্ (র.) এর মাজার।
১৯৫৪ সালে মাজারের দক্ষিণ দিক থেকে উত্তরে ঈদগাহ স্থানান্তর করা হয়। মসজিদ এবং ঈদগাহের সামনে জুড়ে থাকা সুলতানী আমলের বিশাল পাঁচটি দীঘি রয়েছে।
ঐতিহাসিক তথ্যে জানা গেছে, ১৮৬৯ সালে সিলেটে সবচেয়ে বেশি মাত্রায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পে সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন দালান ভেঙে পড়ে ও নদীর তীর দেবে যায়। উঁচু ভূমি নিম্ন ভূমিতে পরিণত হয়। ১৯৭০ সালে এখানে আট হাত লম্বা একটি কবরের সন্ধান পাওয়া যায়। ইটের গাঁথুনিতে তৈরি ওই কবরও সুলতানী আমলের চিহ্ন বহন করে।
স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, ১৯৭০ সালে মসজিদ-ঈদগাহের সামনের দীঘির নিচে নবাবী আমলে নির্মিত একটি ঘাট পাওয়া যায়। এছাড়াও কয়েক বছর আগেও মসজিদের পার্শ্ববর্তী স্থানে খননের সময় মাটির নিচে ৩৪ ইঞ্চি প্রস্থ এটি চুনসুরকির দেয়াল পাওয়া গেছে। এলাকাবাসীর ধারণা ওই দেয়াল সুলতানী আমলের কোনো প্রাসাদের ভগ্নাংশ হতে পারে। এছাড়া ইতিহাস প্রমাণ করে যে, এলাকায় সুলতানী আমলের ভবন ছিল। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে পুরাকীর্তি ধসে পড়তে পারে। এ ব্যাপারে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের উদ্যেগী হওয়া উচিত বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শওকত আলী বলেন, খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।