ফেসবুকে বাচ্চাদের ছবি ও তথ্য দেয়ার ক্ষেত্রে কতটা সচেতন বাবা-মায়েরা ?
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ নভেম্বর ২০১৬, ৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ
ব্রিটেনে এক জরিপে দেখা গেছে, বাবা-মায়েরা তাদের শিশুর পঞ্চম জন্মদিনে গড়ে ১,৪৯৮টি ছবি অনলাইনে শেয়ার করেছেন।বিশ্বজুড়েই বাবা-মায়েদের জন্য বিষয়টি নি:সন্দেহে গর্ব এবং আনন্দের। কিন্তু শিশুদের কাছে বিষয়টি কেমন? শৈশবে যাদের ছবি অনলাইনে দেয়া হয়েছিল তাদের অনেকেই এখন প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে উঠছে। এবং তাদের মধ্যেই অনেকেই ডিজিটাল মাধ্যমে তার ব্যক্তিগত ছবি এবং অন্যান্য তথ্য আগে থেকেই সয়লাব হওয়ার বিষয়টি পছন্দ করছেন না। নিউ ক্যাসলের ১৬ বছরের লুসি জানান সাত বছর বয়স থেকেই বাবা তার বিভিন্ন ছবি সামাজিক মাধ্যমে দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এখন লুসি বলছে বিষয়টি তার জন্য বেশ অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছে, “যখন আমার বয়স ১২ কিংবা ১৩ বছর বয়স, তখন আমি বুঝতে শুরু করলাম যে ফেসবুকে থাকা কিছু জিনিস বেশ অস্বস্তিকর”।”আমি বাবাকে সেগুলো নামিয়ে নিতে বললাম। সে সানন্দেই কাজটি করেছে। কিন্তু কেন আমি বলছি সেটি তার কাছে রহস্য মনে হয়েছে। কিন্তু আমাকে যদি প্রশ্ন করা হতো এসব ছবি সবাই দেখুক তা আমি চাই কি-না তাহলে আমি অবশ্যই না বলতাম”।আরেকজন কিশোরী বলেন, “ছোটবেলায় এসব দেখে বেশ এক্সাইটিং মনে হলেও, এখন বিষয়টা একেবারেই ভাল লাগছে না”।
তবে বিষয়টি বেশ এনজয় করেন এমন মানুষও আছেন। সাউথ লন্ডনের ফ্রান্সেসকা নামে ২১ বছরের একজন তরুণী মনে করেন এর অন্যদিকও আছে। এরমধ্য দিয়ে বিশ্বের অন্য জায়গা থেকেও পরিবারের সাথে সংযুক্ত থাকা যায়। সেই সাথে সহজলভ্য কিছু সুখকর স্মৃতির তালিকায়ও থাকে এসব ছবি।বাংলাদেশেও সামাজিক মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়। সেখানে বাবা-মায়েরা নিয়মিতভাবেই সন্তানদের ছবি এবং অন্যান্য তথ্যাদি শেয়ার করছেন।শিশুদের ব্যক্তিগত বিষয়গুলো পাবলিক করার বিষয়ে শিশুদের প্রাইভেসি নষ্ট করছে কি-না সে বিষয়টি তারা কতটা ভাবেন?
পেশায় ব্যাংকার ইশরাত জাহানের প্রোফাইল পিকচার এবং কাভার ফটো দুটোতেই তার কন্যা শিশুর ছবি। হর-হামেশায় তিনি তার শিশুকন্যার ছবি ফেসবুকে দিয়ে থাকেন। তিনি বলছেন, এভাবে আসলে কখনো ভেবে দেখিনি। “ওর ছবি নিজের প্রোফাইলে দেখলে ভালো লাগে। সবার সাথে শেয়ার করলে ভালো লাগে। ব্যস। কিন্তু এটা ওর প্রাইভেসি নষ্ট করতে পারে তা কখনো ভাবিনি”।
সদ্য বাবা হয়েছেন আহমেদ রোকন উদ্দিন। শিশুকে গোসল করানোর কিছু ছবি দিয়েছিলেন তিনি। তার মতে, অনেক ছবি সংরক্ষণ করাও সমস্যা। সামাজিক মাধ্যমে অ্যালবাম করে রাখলে ছবির বড় ধরনের ডিজিটাল আর্কাইভও থাকছে। মি. উদ্দিন প্রশ্নটি শুনে বললেন, “আসলে বাবা-মা হিসেবে শিশু সন্তানদের ভাল-মন্দ পুরোটাই যেহেতু বাবা-মায়ের ওপর নির্ভর করে তাই আমাদের দেশে এসব বিষয় তো আসলে আমরা ভাবি না। এটা ঠিক না, এমন কথনো আমার নিজের মনে হয়নি। ও বড় হলে যদি আপত্তি করে তখন নিশ্চয়ই এগুলো রাখবো না”।