সিলেটে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে কার্যক্রম শুরুর আগেই বিভিন্ন অংশে ফাটল
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ নভেম্বর ২০১৬, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন শতভাগ কাজ সম্পন্ন হওয়ার আগেই ২১ জানুয়ারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ২ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত জৈন্তাপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটি ভিডিও কন্সফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন। শতভাগ কাজ সম্পন্ন হওয়ার আগেই উদ্বোধন নিয়ে জনমনে নানামুখি প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল?
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়- প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের প্রায় ১০ মাস অতিবাহিত হলেও ব্যয়ে সিলেটের উত্তর জনপদের জৈন্তাপুর উপজেলায় নির্মিত হচ্ছে আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর নির্মাণ অবকাঠামো ও আধুমিক যান্ত্রিক সুবিধা সম্পন্ন জৈন্তাপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশন। তখন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ৪ দফায় সময় বৃদ্ধি করেও স্টেশনের ৫০ ভাগ কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি। উদ্বোধনের ১০ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও হস্তান্তরের আগেই স্টেশনের মূল ভবনের নিচের মাটি ডেবে গিয়ে ভবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশে বড় বড় ফাঁটল দেখা দিয়েছে।
কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান উদ্বোধনের প্রায় ১০মাস অতিবাহিত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভবন হস্তান্তর করতে পারেনি। হস্তান্তরের আগেই মূল ভবনসহ অন্যান্য ভবন গুলোতে দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাঁটল।
জৈন্তাপুরবাসীর দাবী উদ্বোধনের ১০ মাস পরে কাজ হস্তান্তরের আগে ভবনটির মাটি ডেবে গিয়ে বড় বড় ফাটলের জন্ম হয়েছে সেখানে ভবনটি মান নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন?
বিগত জানুয়ারী মাসে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাইট কন্ট্রাকটার প্রতিবেদককে বলেছিলেন- শতভাগ কাজ সম্পন্ন হওয়ার আগে সির্ভিল ইঞ্জিনিয়ার জিল্লুর রহমান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজের সম্পূর্ণ বাজেট পরিশোধ করে। সেই বাজেটের অর্থ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অন্যত্র কাজে ব্যয় করার ফলে এই প্রতিষ্ঠানের কাজ দেরি হয়।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ার জিল্লুর রহমান নিজেকে বাঁচাতে সরকারের কর্মসূচিতে এই প্রতিষ্ঠানের নাম অর্ন্তভূক্তি করেছেন বলেও তিনি জানিয়েছিলেন।
অগ্নি নির্বাপণ, সম্পদ বিনষ্টের হাত হতে বৃহত্তর সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট সহ উত্তর সিলেটে সর্বত্র কাজ করবে এই ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন। ফলে দুর্যোগ মোকাবেলায় সিলেটের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ইউনিটকে ঐ এলাকায় আর আসতে হবে না।
সরেজমিনে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নিয়োজিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এককর্মী প্রথমে এই প্রতিষ্ঠানের ফাঁটলসমূহের ছবি ধারন করতে বাঁধা দেয়। স্থানীয় সাংবাদিক পরিচয় দিলে তিনি পরবর্তীতে বাঁধা না-দিয়েই বিভিন্ন ধরনের অযুহাত দেখিয়ে বলেন এ ফাঁটল গুলে মূল ভবনের কোনো অংশের ফাঁটল নয়। এগুলো অতিরিক্ত অংশের ফাঁটল তাতে ভবনের কোনো ক্ষতি হবে না।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বা সাইট কন্ট্রাকটারের নাম মোবাইল নাম্বার জানতে চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করে। একপর্যায়ে তিনি বলেন- আপনি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জৈন্তাপুর থানায় যোগাযোগ করুন তারা আপনাকে ফোন নাম্বার দিবে।
এ বিষয়ে জানতে সিলেটের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স তালতলা’র ব্যবহৃত টেলিফোন নং ০৮২১-৭১৩৯৯৮ একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে কেউ ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে বিভিন্ন সুশিল সমাজের প্রতিনিধিরা বলেন- সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য ইমরান আহমদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আমাদের অবহেলিত জৈন্তাপুর গোয়াইনঘাট কোম্পানীগঞ্জ এলাকার শিক্ষা, অবকাঠামো, বিদ্যুৎ এবং ফায়ার সার্ভিস সহ ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড হয়েছে। আর এই ইউনিটের মাধ্যমে অত্রাঞ্চলের মানুষের অগ্নিকান্ড জনিত ক্ষয়ক্ষতি হতে অনেকটা মুক্তি পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কিন্তু কাজের গুনগত মান নিয়ে এবং হস্তান্তরের আগে ফাঁটল দেখা দেওয়ায় মাননিয় সংসদরে দৃষ্টি আর্কষণ কামনা করছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) তারেক মোঃ জাকারিয়া প্রতিবেদক কে জানান- জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহেল মাহমুদ ছুটিতে থাকায় আমি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। এবিষয়ে আমার কোন কিছু জানা নেই।