আমাদের স্বপ্নের সবচেয়ে বড় সুপার মুন দেখা যাচ্ছে আজ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ নভেম্বর ২০১৬, ১১:০০ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
আজ সোমবার (১৪ নভেম্বর) একুশ শতকের সবচেয়ে বড় (এক্সট্রা সুপার মুন) আর উজ্জ্বলতম চাঁদটিকে দেখা যাচ্ছে আকাশে। পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে। এত কাছে টেনে চাঁদকে আর এতটা আপন করবে না আমাদের এই বাসযোগ্য গ্রহ, এই একুশ শতকে! সুপার মুন! মানে, আমাদের স্বপ্নের চাঁদ, প্রেম-ভালবাসার চাঁদ এ জীবনে আর আমাদের এতটা ধরা-ছোঁয়ার মধ্যে আসবে না কোনও দিনই। এর পর চাঁদ আমাদের এই বাসযোগ্য গ্রহের খুব কাছে আসবে ১৮ বছর পর, ২০৩৪ সালে।
এই সুপার মুনটিকে সবচেয়ে ভালভাবে দেখতে পারবেন উত্তর আমেরিকার মানুষ। ২০৩৪ সালের ২৫ নভেম্বর আবার একটি সুপার মুন হবে। কিন্তু তখনও চাঁদ এবারের মতো অতোটা কাছে আসবে না পৃথিবীর। নভেম্বরের এই পূর্ণিমাকে আমেরিকায় ‘বিভার মুন’ও বলা হয়। কারণ, অনেক দিন আগে শীতে পশুর লোম দিয়ে গরম পোশাক বানানোর জন্য এই পূর্ণিমাতেই শিকারিরা ফাঁদ পাততেন পশু শিকারের জন্য। তবে এ বার এই বছরেই ৬টি সুপার মুন হয়েছে। মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে। তবে ১৪ নভেম্বরের সুপার মুনের সঙ্গে সত্যি-সত্যিই তাদের জুড়ি মেলা ভার!’’
সুপার মুন প্রায়ই দেখা যায় না কারণ, শুধু পূর্ণিমা হলেই তা হয় না। সেই পূর্ণিমার সময় চাঁদকে তার চলাচলের কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে সবচেয়ে কাছে আসতে হয়। আর গাণিতিক কারণেই তা রোজ রোজ সম্ভব হয় না। প্রতি পূর্ণিমায় সম্ভব হয় না। ফি-বছর সম্ভব হয় না। প্রতিটি দশকেও সম্ভব হয় না। কক্ষপথে ঘুরতে ফিরতে চাঁদের এই পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে চলে আসার দূরত্বটিকেই বলা হয় ‘পেরিজি’।
মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের লুনার স্টাডিজের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর অনির্বাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগে জানা দরকার কখন পূর্ণিমা হয়? যখন চাঁদ, সূর্য আর পৃথিবীর মধ্যে একটি সরলরেখা টানলে দেখা যায় চাঁদটা পৃথিবীর যে দিকে রয়েছে, সূর্যটা রয়েছে ঠিক তার উল্টো দিকে, তখনই হয় পূর্ণিমা। দু’দিকের অভিকর্ষের ‘টানাটানি’তে তাই পূর্ণিমায় পৃথিবীর জলস্তরের ওঠা-নামা হয় সবচেয়ে বেশি। যাকে আমরা জোয়ার, ভাটা বলি। আর ওই পূর্ণিমাতেই যখন পৃথিবীর এক দিকে থাকা চাঁদটি তার কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে সবচেয়ে কাছে চলে আসে আমাদের এই বাসযোগ্য গ্রহের (পেরিজি), তখনই হয় সুপার মুন। ওই সময় পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব থাকে ২ লক্ষ ২৩ হাজার ৬৯০ মাইল বা ৩ লক্ষ ৬০ হাজার কিলোমিটারেরও কম। এটা হয়, কারণ চাঁদ আমাদের পৃথিবীকে পাক মারে ডিমের মতো একটা কক্ষপথে। ফলে তা কখনও পৃথিবীর কাছে আসে, কখনও তা সরে যায় দূরে, অনেকটা স্বপ্নের মতোই। সবচেয়ে দূরে গেলে সেই দূরত্বকে আমরা বলি ‘অ্যাপোজি’। ১৯৪৮ সালের পর এত বড় আর এতটা উজ্জ্বল চাঁদ আর দেখা যায়নি আকাশে। পূর্ণিমার চাঁদ যতটা বড় দেখায় তার চেয়ে এ বার ১৪ শতাংশ বেশি বড় দেখাবে এই সুপার মুনটিকে। আর তার উজ্জ্বলতা হবে সাধারণ পূর্ণিমার চাঁদের চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি।