জগন্নাথপুরে পুত্রবধূকে নিয়ে পালালেন শ্বশুর
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ নভেম্বর ২০১৬, ৩:১৭ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
জগন্নাথপুরে হবু পুত্র বধূকে নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছেন এক লন্ডনি শ্বশুর। ঘটনাটি ঘটেছে জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের শালদিঘা গ্রামে। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় দিরাই থানায় অপহরণ মামলা হয়েছে। অপহৃতাকে উদ্ধার ও লম্পট লন্ডনি শ্বশুরকে গ্রেফতার করতে হন্য হয়ে খুঁজছে পুলিশ। স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের শালদিঘা গ্রামের মৃত ইন্তাজ উল্লার ছেলে ৫ সন্তানের জনক অজুদ মিয়া ওরফে সেবুল দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যের ইষ্টহাম লন্ডনের ১৩৯ স্ট্রিট মার্কেট এলাকার ই-৬-২ পিএক্স বাসায় সপরিবারে বসবাস করে আসছিলেন।
সম্প্রতি-যুক্তরাজ্য প্রবাসী অজুদ মিয়া ওরফে সেবুল তাঁর ছেলে রোকন মিয়াকে বিয়ে করানোর জন্য দেশের বাড়ি শালদিঘা গ্রামে সপরিবারে আসেন। চলে ছেলের জন্য পাত্রী খোঁজার পালা। লন্ডনি বরের জন্য পাত্রী খুঁজতে বাড়িতে পড়ে ঘটকদের লাইন। এক পর্যায়ে শালদিঘা গ্রামের পার্শ্ববর্তী দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের নাচনী গ্রামের আব্দুল মান্নানের সুন্দরী কন্যা হেপি বেগমের (১৯) সাথে প্রবাসী অজুদ মিয়া সেবুলের ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী রোকন মিয়ার (২৩) বিয়ের দিন তারিখ ঠিক হয়। তবে প্রবাসী অজুদ মিয়া সেবুল ও আব্দুল মান্নান সম্পর্কে তারা আপন ভায়রা ভাই হয়।
সেই সুবাদে তাদের মধ্যে আগ থেকেই পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে এবং হবু পুত্র বধূকে লন্ডনে নিতে স্পন্সরও করেন লন্ডনি শ্বশুর অজুদ মিয়া সেবুল। সব কিছু সুন্দরভাবে চলছিল। হঠাৎ করে রহস্যজনক কারণে বিয়ে ঠিক হওয়ার পর বর রোকন মিয়া এ বিয়ে করতে অস্বীকার করলে সব কিছু ওলট-পালট হয়ে যায়।
চলতি বছরের গত ২৭ আগষ্ট রাতে লন্ডনি অজুদ মিয়া সেবুল (৫০) তাঁর নিজের হবু পুত্র বধূ হেপি বেগমকে (১৯) নিয়ে বাড়ি ছেড়ে অজানার উদ্দেশ্যে পালিয়ে যান। সামাজিক লোক লজ্জার ভয়ে তারা না পারছেন বাড়িতে আসতে আবার না পারছেন লন্ডনে যেতে। এমতাবস্থায় দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে পুত্র বধূ হেপি বেগমেকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে তাদের পরিবারের লোকজন জানান।
এ ঘটনায় হেপি বেগমের পিতা আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে লন্ডনি অজুদ মিয়া সেবুল, তাঁর ভাগিনা আবুল হোসেন ও একরামকে আসামী করে দিরাই থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ০২, তাং ২/৯/২০১৬ইং। উক্ত মামলাটি তদন্তের জন্য জগন্নাথপুর থানায় আসলে, জগন্নাথপুর থানার এএসআই সাদেকুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ইতোমধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর থানার এএসআই সাদেকুর রহমান জানান, পলাতক থাকায় অপহরণকারী লন্ডনি অজুদ মিয়া সেবুলকে গ্রেফতার ও ভিকটিম অপহৃতা হেপি বেগমকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, পূর্ব থেকে লন্ডনি অজুদ মিয়া সেবুলের সাথে তাঁর জেটালীর মেয়ে হেপি বেগমের সম্পর্ক ছিল। লন্ডনি তাঁর ছেলেকে এ মেয়ে বিয়ে করিয়ে সামাজিকভাবে জায়েজ করতে চেয়ে ছিলেন। বিষয়টি তাঁর ছেলে জানতে পেরে এ বিয়ে করেনি। তবে এ ঘটনায় স্থানীয় গ্রামের লোকজন খুবই দুঃখ পেয়েছেন। লন্ডনি যদি কখনো এ মেয়েকে নিয়ে গ্রামে আসে, তাহলে গ্রামের উত্তেজিত জনতা তাদেরকে মেরে ফেলতে পারেন।
এ ব্যাপারে অপহরণ মামলার বাদী আব্দুল মান্নান জানান, আমার শালীর জামাই লন্ডনি অজুদ মিয়া সেবুল তাঁর ছেলের সাথে আমার মেয়ের বিয়ে দেয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে নগদ আড়াই লক্ষ টাকা নিয়েছে। এখন সে আমার সাথে প্রতারণা করে আমার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। এদিকে-চেষ্টা করেও লন্ডনি অজুদ মিয়া সেবুল ও হেপি বেগমের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।