সিলেটের ঘটনায় আটক ১১: ডাক পেলেই মিশনে যেতে জড়ো হয় তারা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ নভেম্বর ২০১৬, ১২:৩৫ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
ওরা এগারজন। তাদের সবাই বিভিন্ন কাজের কাজী। কেউ তালা কাটায় পারদর্শী, আবার কেউ গ্রীল। আছে আবার তথ্য দাতাও। তাদের সবারই ‘মিশন’ একটি। আর তা বাস্তবায়নে ছুটে চলে দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। যখনই ডাক পরে কোন নতুন মিশনের; তখনই তারা জড়ো হয় তাদের সরঞ্জাম নিয়ে। ‘মিশন’ শেষ হলেই আবার ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে বিভিন্ন জন বিভিন্ন স্থানে।
কি এমন ‘মিশন’ তাদের? পাঠকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে। আসলে তারা সবাই তালা কাটা সিন্ডিকেটের চোরচক্রের সদস্য। তাদের কাজ হচ্ছে- দেশের বিভিন্ন এলাকায় মূল্যবান ব্রান্ডের মোবাইল ফোনের শো-রুমের তালা কেটে চুরি। এ পর্যন্ত সিলেট, শ্রীমঙ্গল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল শো-রুমে সিরিজ মোবাইল ফোন চুরি করেছে। দীর্ঘদিন থেকে মিশন বাস্তবায়নে মাঠে থাকলেও তারা ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে।
সম্প্রতি সিলেটের আম্বরখানায় স্যামসাং মোবাইল ফোনের শোরুম থেকে মোবাইল ফোন চুরি করে তারা।এই ঘটনার কিছুদিন পরেই ফেনীতে আরও একটি মিশন বাস্তবায়নে জড়ো হয়েছিল তারা। কিন্তু তখনই পুলিশের হাতে অস্ত্রসহ ধরা পড়ে পুরো দলের সদস্যরা।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এবং ফেনী জেলা পুলিশের সহযোগিতায় এই অভিযান পরিচালনা করে সিলেট মহানগরের কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ। তাদের আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় মোবাইল ফোনের শো-রুম পর্যবেক্ষণে রেখে তারপর সুযোগ বুঝে অপারেশন পরিচালনা করত। এজন্য তাদের দলে তালা কাটায় এক্সপার্ট লোকও থাকে। যে ৪/৫মিনিটেই যেকোন সিকিউরড তালার লক ভাঙ্গতে সক্ষম ছিল।
আটককৃতরা হচ্ছে- আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৮),ওসমানী গনি (৪০),জুয়েল সর্দার রাসেল (২৫),মো. জাবেদ (২৮),মো. শামীম (২২),মো. মোশারফ হোসেন (২৬),মো. সুলতান (২১),মো. শরিফুল ইসলাম (২০),মো. সিরাজ (২২),মো. কামরুল (২২) এবং মো. আলম (৩০)। কাকতালীয় হলেও সত্য- এই চক্রের সাতজনেরই বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায়।
সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালী থানার সহকারি কমিশনার (এসি) নুরুল হুদা আশরাফি জানান, ‘গত ২৪ অক্টোবর রাতে নগরীর আম্বরখানায় বুলবুল ম্যানশনের ২য় তলায় স্যামসং মোবাইল ফোনের শোরুমের তালা কেটে চুরির ঘটনায় ওই দোকানের মালিক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে জড়িত আসামীদের ধরতে তারা অনুসন্ধান শুরু করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার ফেনী থেকে চোরচক্রের ১১ সদস্যকে আটক করেন। তাদের কাছ থেকে চুরি করা ৬০টি মোবাইল ফোন এবং বিভিন্ন অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।’
তিনি আরো জানান, ‘আটককৃতরা সবাই চোর সিন্ডিকেটের সদস্য। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলাও রয়েছে। তাছাড়া অস্ত্রসহ আটক হওয়ায় ফেনী সদর থানায় ডাকাতির প্রস্তুতি ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা করা হয়েছে। ফলে তাদের সেখানে আটক দেখানো হয়েছে। পরবর্তীতে তাদেরকে সিলেটের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে বলেও জানান তিনি।’