সিলেটে আওয়ামী লীগে নতুন মেরুকরণ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ নভেম্বর ২০১৬, ৫:১০ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
কেন্দ্রীয় সম্মেলন সম্পন্ন হওয়ার পর সিলেটে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নতুন মেরুকরণ। কেন্দ্রে ৭ নেতা স্থান পাওয়ার পর ৩ জনকে ঘিরে ডালপালা মেলতে শুরু করেছে। সিলেট জেলায় আওয়ামী লীগের প্রথম নতুন প্রেসিডিয়াম সদস্য শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নতুন সদস্য বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নতুন সদস্য প্রফেসর রফিকুর রহমানকে নিয়ে চলছে নতুন মেরুকরণ। দলের সর্বোচ্চ ফোরামে স্থান পাওয়ায় খুশি নাহিদ সমর্থকরা। সিলেট বিভাগে নাহিদের আগে প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদ ও সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি। তারা ছিলেন সুনামগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। আবদুস সামাদ আজাদের মৃত্যুর পর এককভাবে প্রভাব খাটান সুরঞ্জিত। প্রভাবশালী এ পার্লামেন্টারিয়ান মন্ত্রীও ছিলেন। মন্ত্রী হওয়ার কিছুদিন পর দুর্নীতির অভিযোগে তিনি মন্ত্রিত্ব হারান। আর নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার পর শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য আমূল পরিবর্তন আনেন। যদিও এর আগে নাহিদ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু সিলেটে রাজনীতির মাঠে নাহিদ তেমন একটা সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন না। রাজনীতির মাঠে পাওয়া না গেলেও মন্ত্রী হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে থাকতেন। এখন কেন্দ্রের শীর্ষ দায়িত্ব পাওয়ায় দলীয় ফোরামে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য। আওয়ামী লীগ সরকারের দ্বিতীয় টার্মে শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার পর থেকে সিলেটে সময় দেয়ার চেষ্টা করছেন। সাবেক মেয়র নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য হওয়ায় তিনি সন্তুষ্ট। যদিও কামরান মেয়র নন, তার পরও নগরীতে কোনো সমস্যা কিংবা জটিলতা দেখা দিলে কামরানের ডাক পড়ে। স্থানীয় রাজনীতির মারপ্যাঁচ কামরান ছাড়া সমাধান হয় না। যে কোনো পরিস্থিতিতে তিনি নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারেন। নগরীর রাজনীতিতে তার একটা বিশাল বলয় রয়েছে।
সদা হাস্যোজ্জ্বল কামরান সব কাজে পটু। তিনি এতটাই সিদ্ধহস্ত যে পৌর কমিশনার থেকে সিটি মেয়র সহজে কেউ তাকে টপকে যেতে পারেন না। তিনি এখন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য। কেন্দ্রীয় সদস্য হওয়ায় কামরান বলয়ে দেখা দিয়েছে খুশির বন্যা। অদৃশ্যভাবে কামরানই গোটা নগরীর নিয়ন্ত্রক। সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর কামরানের ক্যারিয়ারে কিছুটা ধ্বস নেমে আসে। তারপরও থমকে দাঁড়ায়নি পথচলা। এদিকে কমলগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রফেসর রফিকুর রহমান কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নতুন সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আনন্দে ভাসছে কমলগঞ্জ আওয়ামী লীগ। তিনি কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। স্বজ্জন রাজনীতিক রফিক কেন্দ্রীয় সদস্য পদ লাভ করায় সব স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন।
দলীয় সূত্র জানায়, রফিকুর রহমান একজন পোড় খাওয়া রাজনীতিক ও মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে তিনি ছিলেন অকুতভয় সৈনিক। রাজনীতির মাঠেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য। সেখানেও তিনি আওয়ামী লীগের নিবেদিত কর্মী। কেন্দ্রীয় সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় পর তাকে ঘিরেই নতুন মেরুকরণ শুরু হয়েছে।