কয়েক দিনের মধ্যে খাদিজার বাম হাতে অস্ত্রোপচার করা হবে
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ নভেম্বর ২০১৬, ১২:২৪ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিস ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। তিনি বাম হাত অল্প অল্প করে নাড়াতে পারছেন। এর কয়েক দিন আগ থেকেই অবশ থাকা বাম হাত নাড়াচ্ছিলেন খাদিজা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দুই-তিন দিনের মধ্যে খাদিজার বাম হাত পুরোদমে সচল হয়ে যাবে। তারপরই অস্ত্রোপচার করা হবে। গতকাল খাদিজার বাবা মাসুক মিয়া এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, খাদিজা বাম হাত-পা আগে একেবারেই অবশ ছিল। এখন বাম হাত ও পায়ে মৃদু ব্যথা দিলে অনুভব করতে পারে। খাদিজার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। খাদিজাকে ডাকলে চোখ খুলে তাকায়, কথা বলে। তবে মাঝে মধ্যে কাউকে চিনতে পারে না খাদিজা। তিনি আরো বলেন, খাদিজা ঠিকমতো খাবার খেতে পারছে। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে জেলী, পুডিং, স্যুপ, দুধ মধুসহ নরম খাবার দেয়া হচ্ছে। প্রথম দিকে খাবার খেতে তার যে সমস্যাগুলো হতো তা এখন আর হচ্ছে না। সে কথা বলতে পারছে, তবে তার বেশির ভাগই অসংলগ্ন। খাদিজার মামা আবদুল বাছিত বলেন, আল্লাহর রহমতে খাদিজা এখন প্রায় সুস্থতার দিকে যাচ্ছে। স্কয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক এ এম রেজাউস সাত্তার জানান, পরিবারের সঙ্গ পেয়ে খাদিজার শারীরিক ও মানসিক উন্নতি হচ্ছে। এখন সে কথা বলছে, পরিবারের সদস্যদের চিনতে পারছে। এছাড়া তার মাথায় আবারও মাথায় অস্ত্রোপচার করা হবে। তিনি বলেন, আমরা খাদিজার মাথায় আরেকটা অপারেশনের করবো দুই সপ্তাহ পরে। নতুন করে মাথার খুলির বোন রিপ্লেস করবো। তবে তাকে আরো দুই থেকে তিন মাস পর্যবেক্ষণে রাখার পর বুঝা যাবে সে কতটুকু সুস্থ হলো।
উল্লেখ্য, গত ৩রা অক্টোবর সিলেটের এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমের হামলায় গুরুতর আহত হন খাদিজা আক্তার নার্গিস। বদরুলের ধারালো অস্ত্রের এলোপাতাড়ি আঘাতে খাদিজার মাথার খুলি ভেদ করে মস্তিষ্ক জখম হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরদিন তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিনই স্কয়ার হাসপাতালে খাদিজার মাথায় অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা। এ ধরনের রোগীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা শতকরা ৫ ভাগ। কিন্তু চিকিৎসকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ক্রমেই উন্নতি হচ্ছে খাদিজার। তার অবস্থার উন্নতি হওয়ায় ১৩ই অক্টোবর লাইফ সাপোর্ট খুলে দেয়া হয়। এরপর আঘাতে ‘মাসল চেইন’ কেটে যাওয়া তার ডান হাতে অস্ত্রোপচার করা হয় ১৭ই অক্টোবর। এ ঘটনায় খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুস বাদী হয়ে সিলেট শাহপরাণ থানায় বদরুল আলমকে আসামি করে মামলা করেন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতা বদরুল ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।