আজ খাদিজার উপর হামলার একমাস : প্রতীক্ষায় স্বজনরা, চার্জশিট দেয়নি পুলিশ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ নভেম্বর ২০১৬, ১:২৩ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
আজ ৩ নভেম্বর। সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিসের উপর শাবিপ্রবি ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের নৃশংস হামলার ১ মাস পূর্ণ হলো। গতমাসের এই দিন অর্থাৎ ৩ অক্টোবর বিকালে সিলেট এমসি কলেজে পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে আসার সময় কলেজ ক্যাম্পাসের পুকুর পাড়ে হামলার শিকার হন তিনি। এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো চাঞ্চল্যকর এই মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে। এদিকে নানান জল্পনা-কল্পনা, উদ্বেগ আর উৎকন্ঠার মধ্যদিয়ে দিন কাটে খাদিজার পরিবারের। হামলার পর গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খাদিজাকে। এখনো খাদিজা সেখানে চিকিৎসাধীন। হামলার পরদিন খাদিজার চাচা বাদী হয়ে নগরীর শাহপরান থানায় বদরুলকে একমাত্র আসামী করে হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রুকন উদ্দিন আহমেদ বলেন, পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে এই মামলাটির তদন্ত করছে। চাঞ্চল্যকর বিবেচনায় একটু সময় নিয়েই তদন্ত করা হচ্ছে। যাতে আসামী পার পেতে না পারে। তবে শীঘ্রই এই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দেওয়া হবে।
আর সিলেটের জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীন বলেছেন, আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার পর মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এদিকে খাদিজার খবর শুনে সৌদিআরব থেকে ছুটে আসেন বাবা মাসুক মিয়া আর চীনে ডাক্তারী পড়ায় থাকা ভাই শাহীন। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে কাটে খাদিজার দিনরাত। নৃশংস এ ঘটনার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠে গোটা দেশ। প্রতিবাদের রেশ গিয়ে ঠেকে দেশের বাইরেও। বিভিন্ন স্থান থেকে দাবি উঠে বদরুলের শাস্তির। পরে বদরুলের ছাত্রত্ব বাতিল করে শাবি প্রশাসন। তাকে আসামী করে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। বদরুল বর্তমানে কারাগারে।
এর বাইরে খাদিজার জন্য জায়গায় জায়গায় চলে দোয়া, প্রার্থনা। কয়েক দফা অপারেশনের পর খাদিজাকে রাখা হয় লাইফ সার্পোটে। ডাক্তাররা প্রাথমিকভাবে ৭২ ঘন্টার সময় বেঁধে দেন। এসময় তারা খাদিজার বাঁচার আশা ৫ শতাংশ বলে জানান। অবশেষে সকল জল্পনা কাটিয়ে খাদিজা এখন ধীরে ধীরে সুস্থ হবার পথে। প্রথমে তার লাইফ সার্পোট খোলা হয়। এখন তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। অনেকে খাদিজার এ ফিরে আসাকে মিরাকেল বলে অভিহিত করেছেন। তবে তার পুরো সুস্থ হয়ে উঠতে আরো সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা। আর খাদিজার পরিবারের আশা খাদিজা আবারো আগের মতো ফিরে আসবেন তাদের মাঝে সুস্থ হয়ে।