বন্ধ সিলেটের পাথর কোয়ারী : হতাশার শেষ কখন?
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ অক্টোবর ২০১৬, ৬:১০ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সিলেটের পাথর কোয়ারী এলাকায় দীর্ঘ দিন থেকে কর্মক্ষেত্র বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। শ্রমিকেরা বেলচা, টুকরীসহ প্রতিদিন কোয়ারী এলাকায় কাজের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে আসলেও সারাদিন অপেক্ষা করে কোথাও কাজ না জুটায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। দেশের সর্ববৃহৎ পাথর কোয়ারী ভোলাগঞ্জ, জাফলং, বিছনাকান্দি ও শ্রীপুরসহ সব কয়টি কোয়ারী এলাকার কয়েক লক্ষ শ্রমিকের বর্তমান চিত্র।
কোয়ারী সচল থাকলে সিলেট সহ দেশের ৩/৪ লক্ষ শ্রমিক কাজ করে নিজের জীবন মান উন্নয়ন সহ দেশের অর্থনৈতিক চালিকা শক্তিকে আরো মজবুত করেন। শুধু শ্রমিক নয়, বেকায়দায় পড়েছেন এবার ব্যবসায়ীরাও। দীর্ঘ ২ মাস থেকে কোয়ারী থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় পাথরের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বেকার হয়ে পড়েছেন। বন্ধ হতে চলেছে জাফলং, ধূপাগুল, ভোলাগঞ্জ সহ উত্তর সিলেটের ক্রাসিং জোন এলাকা। কোয়ারী থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় ওই সব ক্রাসার এলাকা শ্রমিক শূন্য হয়ে পড়েছে। পাথর সংশ্লিষ্ট পেশা ছাড়া অন্য কোন পেশা জানা না থাকায় সিলেটের গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুর এলাকার পাথর শ্রমিক পরিবারে চরম অভাব দেখা দিয়েছে। পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন হত দরিদ্র শ্রমিকেরা। ইতিমধ্যে সিলেটের সকল পাথর কোয়ারী খুলে দেওয়ার দাবিতে সকল শ্রেণি পেশার মানুষেরা জড়ো হয়ে আন্দোলন করেছেন। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দরা সিলেটের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরেও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
এছাড়া জাফলং ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিছনাকান্দি ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, ভোলাগঞ্জ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও শ্রীপুর ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্থরের শ্রমিকেরা পাথর কোয়ারী সচলের দাবীতে পৃথক পৃথক মানব বন্ধন কর্মসূচী পালন করেছেন। বিভিন্ন মানববন্ধন কর্মসূচীতে শ্রমিকেরা ভাত চাই না হলে কাজ চাই এই শ্লোগানে দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সুশিল সমাজের প্রতিনিধিদের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।
এ ব্যাপারে জাফলং পাথর কোয়ারী এলাকার ব্যবসায়ী মিনহাজ উদ্দিন বলেন, পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকার কারণে কোয়ারী এলাকার শ্রমিকদের মধ্যে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। যে কারণে কর্মহীন মানুষের হাহাকার পরিলক্ষিত হচ্ছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আশ্রাফ আহমেদ রাসেল বলেন, বিদ্যুৎ জালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ইজারা বিহীন কোয়ারী ও যান্ত্রীক পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন বন্ধের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় জাফলং, বিছনাকান্দি পাথর কোয়ারী বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং পাথর কোয়ারী বন্ধ রাখতে উপজেলা প্রশাসন থেকে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম চৌধুরী জানিয়েছেন, পাথর শ্রমিকের মানবেতর জীবন বিবেচনা করে পাথর কোয়ারীগুলো জরুরী ভিত্তিতে খুলে দেওয়ার জন্য তিনি উপজেলা সমন্নয় সভা ও জেলা উন্নয়ন সভায় সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সিলেট-৪ আসনের সাংসদ ও ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমদ বলেন, পাথর কোয়ারী গুলো সচল করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবারে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। পাথর কোয়ারী গুলো সচল করার জন্য আমার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।