অভিবাসন তালিকায় থাকছেন না বৃটেনে স্টুডেন্ট ভিসায় পড়তে আসা শিক্ষার্থীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ অক্টোবর ২০১৬, ৪:০৪ অপরাহ্ণ
লন্ডন অফিস:
বিদেশ থেকে বৃটেনে অধ্যয়ন করতে আসা ছাত্র-ছাত্রীদেরকে অভিবাসন তালিকার অন্তর্গত রাখা হবে কিনা সে সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে তা পুনঃর্বিবেচনা করছে না ব্রিটিশ সরকার । প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করে ব্যাখ্যা করে জানিয়েছেন যে, সরকার অভিবাসন নীতির সার্বিক পর্যালোচনা করতে যাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর বলেন যে, বৈদেশিক শিক্ষার্থী ও উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন কর্মীরা অভিবাসন নীতির প্রতি কোনো উদ্বেগের কারণ নয়। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর ডাউনিং স্ট্রিট কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়। আর এ ঘোষনায় ব্রিটেনে অবস্থানরত প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা কিছুটা আশার আলো দেখছেন ।
সরকার অভিবাসীর সংখ্যা ১,০০,০০০ নিচে নামিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্স (ওএনএস) এর মতে যুক্তরাজ্যে পূর্ণ অভিবাসীর সংখ্যা ২০১৫ সালে ৩,৩৩,০০০ উন্নীত হয়েছে যা কিনা এ যাবৎ কালের অভিবাসীদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যা।
সম্ভবত: শিক্ষার্থীরা!
ট্রেজারী সিলেক্ট কমিটির প্রমাণ হিসেবে গত বুধবার চ্যান্সেলর ফিলিপ হ্যামন্ড বলেন যে, পূর্ণ অভিবাসীদের সংখ্যার টার্গেট গণধারণার ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়া উচিত এবং এতে উচ্চ দক্ষ কর্মীদের সংখ্যা এ থেকে বাদ দেয়া যেতে পারে। তিনি (চ্যান্সেলর) এমপিবৃন্দকে বলেন, ‘জনগণ আমাদেরকে উচ্চস্বরে ও পরিষ্কারভাবে জানাবে যে তারা কোনসব অভিবাসনের স্তর নিয়ে অসুবিধার সম্মুখীন। এটা পরিষ্কার যে তাঁরা কম্পিউটার প্রোগ্রামার, মস্তিষ্কের শৈল্য চিকিৎসক (সার্জন), ব্যাংক কর্মকর্তা ও উর্ধ্বতন দক্ষ ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) ও সম্ভবত: শিক্ষার্থীদের নিয়ে কথা বলছে না। কিন্তু জনগণ তাঁদের সম্পর্কে কথা বলছে যারা যুক্তরাজ্যে প্রবেশের ন্যূনতম দক্ষতা স্তরধারী এবং যেসব দক্ষতায় অভিবাসন প্রার্থীরাও দক্ষ সেসব দক্ষতা স্তর সম্বন্ধে’।
প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র ইতোপূর্বে বৃহস্পতিবার বলেন, ‘বৃটেনে আগত অভিবাসী সদস্যদের নিয়ে যে বর্তমানে ইস্যু দেখা দিয়েছে তাতে ছাত্র-ছাত্রী না অন্যরা সে ইস্যু নিয়ে সরকার গভীরভাবে পর্যবেক্ষণরত, যেহেতু এ বিষয়ে সরকার নূতন নীতি প্রচলন করতে যাচ্ছেন।’ তবে পরে এক ব্যাখ্যায় ডাউনিং স্ট্রিটস্থ প্রধানমন্ত্রীর অফিস জানায়, ‘সরকারের উদ্দেশ্য হল বৃটেনে বাৎসরিক নীট (পূর্ণ) অভিবাসীদের সংখ্যা ১,০০,০০০ এর নিচে নামিয়ে আনা। আমরা সকল ভিসার পথ পর্যবেক্ষণাধীন রেখেছি।’ ‘আমাদের সরকারের অবস্থান এই যে, কারা অভিবাসন তালিকাভুক্ত হল তা নয়, আমরা পদ্ধতিগতভাবে খতিয়ে দেখছি না যে ছাত্র-ছাত্রীরা অভিবাসন সংখ্যায় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে কিনা?’
বিবিসির রাজনৈতিক সংবাদদাতা অ্যালেক্স ফরসীথ বলেন, মিসেস থেরেসা মে হোম বা স্বরাষ্ট্র সেক্রেটারী থাকা অবস্থায় অভিবাসন তালিকা থেকে বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের বাদ না দেওয়ার আহ্বানকে জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যন করতেন। তিনি (সংবাদদাতা) বলেন যে, প্রধানমন্ত্রী অবস্থায় বর্তমানেও তিনি তা করছেন। বিবিসি সংবাদাদাতা আরও বলছেন যে, ব্রেক্সিট উত্তর পরিস্থিতিতে অভিবাসন ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে মিঃ হ্যামন্ড এর মন্তব্যের পর মন্ত্রীসভায় মতানৈক্যের প্রমাণ হিসেবে আরও কি পাওয়া যায় তার অপেক্ষা করতে হবে।