ওসমানীনগরের প্রতিবন্ধী রুমেন ও মাজেদার খোঁজ রাখেনা কেউ
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ অক্টোবর ২০১৬, ৩:০৮ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
ওসমানীনগরের শারীরিক ও বাকপ্রতিবন্ধী রুমেন আলী (১৮) এবং মাজেদা বেগমের (৮) খোঁজ কেউ রাখেনি। এ দুই শিশু দারিদ্র্যের কষাঘাতে অর্ধাহার-অনাহার আর বিনা চিকিৎসায় দিন পার করলেও জনপ্রতিনিধি বিত্তবানদের কেউ কোনো দিন তাদের খোঁজ নেননি। রুমেন মিয়া উপজেলার উমরপুর ইউপির মাটিহানি গ্রামের মৃত জুনাব আলীর ছেলে ও মাজেদা বেগম একই গ্রামের মোশাহিদ আলীর মেয়ে। হতভাগ্য রুমেন ও মাজেদা একই গ্রামে এবং পাশাপাশি বাড়িতে তারা বসবাস করে। সরকারি কিছু সুবিধা পাওয়ার আশায় রুমেন ও মাজেদার স্বজনরা দফায় দফায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বারের দ্বারে দ্বারে ধরনা দিয়েও কোনো সুফল পাননি। সরজমিন রুমেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, রুমেন মাটিতে হামাগুঁড়ি দিচ্ছে। বয়স তার ১৮ বছর হলেও শারীরিক গঠনের কারণে মনে হয় তার বয়স ৯/১০ বছর। জন্মের পর থেকেই সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। দাঁড়াতে ও কথা বলতে পারে না। সারাদিন মাটিতে শুয়ে ও হামাগুঁড়ি দিয়ে তার সময় কাটে। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে রুমেন পঞ্চম। বাবা জুনাব আলী অনেক আগেই মারা গেছেন। সম্বল বলতে মাত্র এক টুকরো ভিটে। পরিবারের একমাত্র উপার্জন লোকমান আলী পিকআপ ভ্যানের হেলপারি করে কোনো মতে সংসার চালায়। সংসারে অভাব অনটন দূর করতে বৃদ্ধ মা ছালেহা বিবি পাশের বাড়ির দোকানের কয়েক কেজি সুপারি কেটে মাসে চার-পাঁচশ’ টাকা রোজগার করে ছেলের চিকিৎসাসহ সংসারের হাল ধরার চেষ্টা করেন।
এদিকে প্রতিবন্ধী মাজেদা বেগমের অবস্থা আরও করুণ। তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সে তৃতীয়। পিতা মোশাহীদ আলী অসুস্থ, কোনো কাজ করতে পারেন না। ভূমিহীন মাজেদার পরিবারের নিজের বলতে কোনো সম্পদ নেই। তারা অন্যের বাড়িতে একটি কুড়েঘরে বসবাস করে। জন্মের পর থেকে মাজেদা শারীরিক ও বাকপ্রতিবন্ধী। সারা দিন এক স্থানে বসে থাকতে হয়। পরিবারের একমাত্র উপার্জক হলেন মাজেদার মা সাজনা বেগম (৪০)। তিনি পার্শ্ববর্তী একটি দোকানের সুপারি কেটে মাসে পাঁচ-সাতশ’ টাকা উপার্জন করেন।