সংসদকে গালি দেওয়ার অধিকার কারো নেই -সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ অক্টোবর ২০১৬, ১১:২৬ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
জাতীয় সংসদকে কোনো ‘ফরেন বডি’ গালি দেওয়ার অধিকার রাখে না বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।
মঙ্গলবার (অক্টোবর ১৮) জাতীয় সংসদের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
সুরঞ্জিত বলেন, ১২তম সংসদীয় অধিবেশনে বৈদেশিক অনুদান আইন বিষয়ক যে আইন পাশ হয়েছে সেখানে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো কিছু যুক্ত করা হয়নি। তাই তারা যে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করছেন এটা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী।
তিনি আরো বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সবার জন্য নয়। বৈদেশিক কেউ এসে যেকোনো বিষয়ে মত প্রকাশ করতে পারবে না। এছাড়া উড়ে এসে কেউ আমাদের সংবিধান বা সংসদকে গালি দেবে সেটাও মেনে নেয়া যায় না। আর তারা যদি গালি দেয় তাহলে আমাদের অধিকার তথা সার্বভৌমত্ব কোথায় থাকে? আর যারা এই আইন নিয়ে সমালোচনা করছেন তারা যদি কাজ করতেই চান তাহলে তাদেরকে আমাদের আইন মত কাজ করতে হবে। সমালোচনা যদি করতেই হয় গণ্যমাধ্যম করতে পারবে কারণ গণমাধ্যমকে সেই স্বাধীনতা দিয়েছে সংবিধান। কিন্তু কোনো ফরেন বডি আমাদের বিষয় নিয়ে সমালোচনা করবে সেটা মেনে নেওয়া হবে না।
আইনের মাধ্যমেই এনজিওর জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই যে এনজিও যারা আমাদের সমালোচনা করছে এদের জন্ম হয়েছে আইনের মাধ্যমে। আর এরা আইনকে অমান্য করে সমালোচনা করে। কারণ এদের প্রত্যেকটি খাতে রয়েছে দুর্নীতি আর এই দুর্নীতি এখন কমে যাবে বলে তারা এই সমালোচনা করছে।
৫ অক্টোবর সংসদে বৈদেশিক অনুদান (স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম) রেগুলেশন আইন ২০১৬ পাস হয়। পাশকৃত ওই আইনে বলা হয়, কোনো এনজিও (বেসরকারি সংস্থা) বা ব্যক্তি এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে এবং সংবিধান ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করলে বা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন করলে সেটা অপরাধ বলে গণ্য হবে। এ আইন কেউ অমান্য করলে এনজিও ব্যুরো সেই প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন বাতিল বা স্থগিত করতে পারবে। এনজিওতে বিদেশি উপদেষ্টা নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা ছাড় নিতে হবে।
এ আইনের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে ৯ অক্টোবর ১৭টি বেসরকারি সংস্থা সংবাদ সম্মেলন করে বলেছে, আইনের এই ধারাটি শুধু অস্পষ্ট, স্বেচ্ছাচারমূলক ও অপব্যাখ্যাযোগ্যই নয়, এটি বাক্-স্বাধীনতা সম্পর্কিত সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। তারা আইনটি সংশোধনের দাবি জানায়।
এছাড়া শারীরিক অসুস্থতা বিষয়ে সুরঞ্জিত বলেন, আমার অসুস্থতা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমার মৃত্যুর গুঞ্জন উঠেছে। এমনকি কবে আমার মৃত্যু হবে সেটা নিয়েও সংবাদ হয়েছে। শুধু তাই নয়, আমার এলাকাতে মধ্যবর্তী নির্বাচনের ঘোষণাও দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমি এখন সুস্থ আর আমার ক্যান্সারও হয়নি। এটা সম্পূর্ণ গুজব। এছাড়া অসুখ-বিসুখ সবার হয়ে থাকে আর এটার বাইরে কেউ নয়। তবে আমি অসুস্থ রয়েছি এজন্য সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। যেন খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যেতে পারি।