আদালতে কাঁদলেন জিহাদের বাবা, পুলিশের অসহযোগিতার অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ অক্টোবর ২০১৬, ১০:৫৬ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
তিন বছর আগে চার বছর বয়সী এই শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলার বিচার বাদী নাসিরের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার শুরু হয়েছে ঢাকার আদালতে।
নাসির উদ্দিন ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে সাক্ষ্যে ছেলেকে হারানোর ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন। কাঁদতে কাঁদতেই ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিচার চান তিনি।
কাঠগড়ায় হাজির করা ৬ আসামিকে তিনি শনাক্ত করেন বলে জানান ওই আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি শওকত আলম।
রেলের পাঁচ প্রকৌশলী ও নলকূপ বসানোর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক এই মামলার আসামি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড হবে।
২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর জিহাদ খেলার সময় পাইপে পড়ে গেলে তাকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিস সফল না হওয়ার পর ঘটনার সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
তখন পুলিশ জিহাদের বাবাসহ স্বজনদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিল। তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে ২৩ ঘণ্টা পর স্থানীয় কয়েক তরুণের প্রচেষ্টায় ১৪ ইঞ্চি ব্যাসের ওই পাইপের নিচ থেকে জিহাদের লাশ তুলে আনা হয়।
সাক্ষ্যে পুলিশের অসহযোগিতার কথাও বলেন জিহাদের বাবা নাসির।
“শাজাহানপুর রেল কলোনির মাঠে ছেলের জানাজা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ তা করতে দেয়নি। তারা বলে, জানাজা ঢাকায় করা হলে তারা লাশ আমাকে দেবে না।”
শরীয়তপুরে গ্রামের বাড়িতে পরদিন ছেলেকে দাফন করেন রেল কলোনিতে পরিবার নিয়ে থাকা মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নৈশ প্রহরী নাসির ফকির।
জবানবন্দি শেষে বাদীকে জেরা করেন আসামি মোসার্স এসআর হাউজের মালিক শফিকুল ইসলাম ওরফে আব্দুস সালামের আইনজীবী।
আসামি রেলের সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) দীপক কুমার ভৌমিক এবং সহকারী প্রকৌশলী-২ মো. সাইফুল ইসলামের আইনজীবীরা জেরার জন্য সময় চাইলে শুনানি বুধবার পর্যন্ত মুলতবি করেন বিচারক।
স্পর্শকাতর ও আলোচিত এ মামলায় প্রতিদিনই সাক্ষ্যগ্রহণ হবে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি শওকত।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- রেলওয়ের সিনিয়র সাব অ্যাসিটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার (নলকূপ পরিদর্শন) মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন, ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার আবু আহমেদ শাকি।
ছেলের লাশ পাওয়ার পরদিন নাসির শাহজাহানপুর এই মামলাটি করার পর পুলিশ প্রথমে তদন্ত করে শুধু সালাম ও জাহাঙ্গীরকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয়।
বাদীর নারাজীর আবেদনের পর আদালতের নির্দেশে পুনরায় তদন্তের পর ছয়জনকে আসামি করে নতুন করে অভিযোগপত্র দেন গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. মিজানুর রহমান।
চলতি বছরের ৩১ মার্চ দেওয়া ওই অভিযোগপত্র গ্রহণ করে গত ৪ অক্টোবর আদালত অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয়।