বিদেশে নিয়ে মুক্তিপণ দাবি, জড়িত ৫ জনকে ছবি দেখে শনাক্ত
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ অক্টোবর ২০১৬, ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
বিদেশে লোক পাচার কিংবা চাকরি দেয়ার আড়ালে নিয়ে গিয়ে সেখানে নির্যাতন করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় সরাসরি জড়িত এমন ৫ ব্যক্তিকে ছবি দেখে শনাক্ত করা হয়েছে। চট্টগ্রামে গত বৃহস্পতিবার লিবিয়া যাওয়ার পথে একটি দল ধরা পড়ার পর তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে এই ৫ ব্যক্তির নাম বেরিয়ে আসে। পরে র্যাবের সদস্যরা এই ৫ জনের ছবি জোগাড় করে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন বাংলাদেশ থেকে গোপনে তারা দীর্ঘদিন ধরে লিবিয়াসহ নানা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে মানবপাচার করে আসছে। তাদের সঙ্গে দেশের বাইরে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আরো বেশ কয়েকজন দালাল রয়েছে।
যারা বিদেশে যাওয়ার পর নির্যাতন করে তাদের আত্মীয়স্বজনদের কাছে ফোন করে ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করছেন। ছবি দেখে শনাক্ত হওয়া এসব ব্যক্তিরা হলো- হারুন, শাহীন, রহমান, আমজাদ ও আদনান। বর্তমানে তারা সবাই পলাতক রয়েছেন। গত দুইদিন আগে তাদেরকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান শুরু করেছে র্যাব সদস্যরা।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, লিবিয়া একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ। এসব দেশে যাদেরকে পাঠানো হয় তাদের বেশির ভাগই নির্যাতন কিংবা জিম্মিদশার শিকার হন। বাধ্য হয়ে অনেকে দেশে ফিরতে না পেরে জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ইতিমধ্যে ৫ দালালের ছবি আমরা সংগ্রহ করেছি। তাদের ধরার চেষ্টা চলছে।
চট্টগ্রাম র্যাবের দুইজন কর্মকর্তা জানান, গত ১৩ই অক্টোবর শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লিবিয়া যাওয়ার পথে যারা আটক হয়েছিলেন তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের পর দেশীয় মানবপাচার চক্রের ৫ ব্যক্তি সম্পর্কে জানতে পারেন তারা। এই সময় তারাসহ মোট ৩০ জনের নাম বেরিয়ে আসে।
যাদের মধ্যে সাদিক ও মোজাম্মেল নামের দুই দালাল রয়েছেন লিবিয়ায়। যারা বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার পর সেখানে এখানকার চক্রের সদস্য হয়ে কাজ করছে। হন্যে হয়ে খোঁজা ব্যক্তিদের মধ্যে রহমানের পুরো নাম মতিউর রহমান। তার বাড়ি সিলেটে।
একই জেলায় আরো একজন রয়েছে সে হলো আজিজুল হক শাহিন। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানার দলইরগাঁও গ্রামের মৃত আবদুল হাইয়ের পুত্র সে। তার সঙ্গে আরো পলাতক রয়েছে জিন্দাবাজার এলাকার শাহীন নামের আরো একজন।
আদনান আনসারী কখনো সিলেট, কখনো থাকেন ঢাকায়। এই ব্যক্তির শামীম ট্যুর ট্রাভেলস নামের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ঢাকায় থেকে দীর্ঘদিন ধরে গোপনে মানবপাচার চক্রের হয়ে কাজ করছে হারুন। র্যাবের কর্মকর্তারা আরো জানান, এই ৫ জন লিবিয়াসহ অন্যান্য দেশে লোক পাচারের জন্য ঢাকার বিভিন্ন হোটেলের ম্যানেজারদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলেছেন। চট্টগ্রামে বিভিন্ন হোটেলের ম্যানেজারের সঙ্গেও গড়ে তোলা হয় সখ্য। দালালদের উদ্দেশ্য থাকে চট্টগ্রাম থেকে বিমানযোগে দুবাই পাঠানো হবে। সেখান থেকে তুরস্ক হয়ে যাবে লিবিয়া।
র্যাবের মিডিয়া শাখার সহকারী পরিচালক চন্দন দেবনাথ মানবজমিনকে বলেন, দেশের বাইরে যেসব দালাল রয়েছে তাদের ছবি পাওয়া গেলে খুব ভালো হতো। আমরা মোট ৩০ জনের বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছি। এর মধ্যে ৫ জনের ছবি পাওয়ার পর তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ধারণা করছি বড় একটি সিন্ডিকেট গোপনে থেকে মানবপাচার করছে বাংলাদেশে।