তীরে এসে তরী ডোবানো আর কতো ?
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ অক্টোবর ২০১৬, ১১:৫৫ অপরাহ্ণ
স্পোর্টস ডেস্কঃ কোন অজুহাতেই এই পরাজয় মেনে নেয়া যায়না। বড় দল হয়ে উঠার এটাই কি লক্ষণ? বাংলাদেশের কোটি কোটি ক্রিকেট প্রেমীদের হৃদয় ভেঙ্গেছে ক্রিকেট দল আরেকবার। তীরে এসে তরী ডুবানো আর কতো? ৩১০ রানের বিশাল টার্গেট। বিশাল এ টার্গেট ভালো মতোই এগুচ্ছিল বাংলাদেশ ৫৯ বলে দরকার ৩৯ রান হাতে ৬ উইকেট। সেখান থেকে ২৮৮ রানে অলাউট!
বড় ইনিংস খেলে দলকে জিতাতে না পারাটা চরম ব্যর্থতাই। ম্যাচ হারার জন্য দায়ী ইমরুল কায়েসই। ১১২ রানের ইনিংস খেলার পর হয়তো ভাবছেন সে দায়ী কিভাবে? সাকিব তার কাজ করে দেওয়ার পর মুসাদ্দেক যখন প্রথম বলে আউট তখন স্বীকৃত ব্যাটসম্যান বলতে উইকেটে কায়েসই। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি নিয়ে এগিয়ে মারার বিলাসিতা বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়। যেখানে সিঙ্গেল ডাবলস নিয়ে দল জেতানো যায় সেখানে এমন শট! টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে একই কান্ড করেছিলো মুশফিক মাহমুদ উল্লাহ। সিরিজের প্রথম ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩০৯ রান করে ইংল্যান্ড। টাইগারদের জয়ের জন্য প্রয়োজন ৩১০ রান। জয়ের লক্ষ্যে টাইগারদের হয়ে ওপেনিং করতে নামে দুর্দান্ত শুরু করে তামিম ও ইমরুল। ভালো এগোচ্ছিল টাইগারদের রান। তবে ১০ম ওভারে বিদায় নিতে হয় তামিমকে। অভিষেক হওয়া জ্যাক বেলের বলে জেমস ভিন্সের তালুবন্দি হয়ে ফিরেন এই ওপেনার। সাজঘরে ফেরার পূর্বে তামিমের সংগ্রহ ১৭ রান। তামিমের বিদায়ে মাঠে আসেন সাব্বির রহমান। শুরুতেই ঝড় তুলেন এই তরুন ব্যাটসম্যান। বাউন্ডারির লক্ষ্যে জ্যাক বালের বলে দারুণ এক শট করেন সাব্বির। কিন্তু বাউন্ডারিতে থাকা ডেভিড উইলি অসাধারণ এক ক্যাচ ধরলেন । এতে ১১ বলে করে ফিরতে হয় ১৮ রান করে ফিরতে হয় সাব্বির কে। সাব্বিরে বিদায়ের পর ২৫ রানে মাহমুদউল্লাহ, ১২ রানে মুশফিকের পতনের পর দলের হাল দলেন সাকিব। ৫৫ বলে ৭৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন সাকিব। ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বচ্চো ৪ উইকেট নেন বেল এছাড়াও রাশিদ নেন ৩ উইকেট। এর আগে আজ বেলা আড়াইটায় মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই টাইগার বোলারদের উপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে আত্মবিশ্বাস দুই ওপেনার রয় ও ভিন্স।৭ ওভারেই তুলে নেন ৪১ রান। এরপর ইংলিশ শিবিরে আঘাত হানেন শফিউল। জেমস ভিন্সকে মাশরাফির তালুবন্দি করে সাজঘরে ফেরান টাইগার এই বোলার। আউট হওয়ার আগে ১৬ রান করে ইংলিশ এই ব্যাটসম্যান। ১৬ রান করে জেমস ভিন্স ফিরে গেলেও জেসন রয় বাংলাদেশের জন্য ধীরে ধীরে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিলেন। তবে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আসেন নিজের চতুর্থ ওভারের তুলে নেন রয়ের উইকেটটি। ৪০ বলে ৫টি বাউন্ডারি আর একটি ছক্কায় ৪১ রান করেন রয় । সাকিবের বলে লং অনে ছক্কা মারতে গিয়ে সাব্বিরের তুলুবন্দি হন এই ওপেনার। রয়ের বিদায়ের পরই দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে আরেকটি উইকেটের দেখা পায় টাইগাররা। সৈকতের বলে শটে রান নিতে গিয়েছিলেন বেন ডাকেট এবং জনি ব্যারেস্ট। সাব্বির রহমানের সরাসরি থ্রো গিয়ে আঘাত হানে স্ট্যাম্পে। টিভি রিপ্লে দেখে ব্যারেস্টকে আউট ঘোষণা করেন থার্ড আম্পায়ার। এরপর বেন ডাকেট আর বেন স্টোকসের ব্যাটে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল ইংলিশরা। দুজনে ১৫৩ রানের বিশাল জুটি গড়েন। একের পর এক বোলার পরিবর্তন করেও কোনভাবেই উইকেট ফেলতে পারছিলেন না মাশরাফি বাহিনী। অবশেষে ৩৯ তম ওভারের শেষ বলে শফিউলের ভাঙ্গে দুইজনের ১৫৩ রানের বিশাল জুটি। শফিউলের বলে শট খেলতে গিয়ে বোল্ড হন ডাকেট । সাজঘরে ফেরার পূর্বে তার সংগ্রহ ৭৮ বলে ৬০ রান। শফিউলের পর ইংলিশ শিবিরে আঘাত হানলেন অধিনায়ক মাশরাফি। তিনি ফেরান সেঞ্চুরি করা বেন স্টোকসকে। আউট হওয়ার আগে ক্যারিয়ারের ৭ম সেঞ্চুরিটাও তুলে নেন স্টোকস। ৯৮ বলে ১০০ রান করা বেন স্টোকস ১০০ বলে ১০১ রান করে আউট হন মাশরাফির বলে। মাশরাফির বলে ডিপ মিডউইকেটের ওপর দিয়ে পুল করতে গিয়ে সাব্বিরের তালুবন্দি হতে হয় এই হার্টহিটারকে। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৩০৯ রানে গিয়ে থামে ইংলিশদের ইনিংস। সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাশরাফি, সাকিব ও শফিউল তিন জনেই নেন ২টি করে উইকেট।