রাতভর ধর্ষণ, অবশেষে ইজ্জতের মূল্য বিশ হাজার!
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ অক্টোবর ২০১৬, ৯:০৫ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শেরপুর সদর উপজেলার চরশ্রীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রী (১২) কে রাতভর ধর্ষণ করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় এক বখাটে। পরে বখাটের বাড়িতে অবস্থান নেওয়ার পর সালিসী বৈঠকে ধর্ষককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে ওই স্কুল ছাত্রীকে তাঁর মার কাছে তুলে দেওয়া হয়। আজ শনিবার দুপুরে ওই ভিকটিমকে উদ্ধার করে স্থানীয় মহিলা পরিষদের নেতৃবৃন্দ জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে তার ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। এই ঘটনায় আজ শনিবার বিকেলে মেয়ের বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মহিলা পরিষদ, ভিকটিম ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শেরপুর সদর উপজেলার বলাইয়েরচর ইউনিয়নের চরশ্রীপুর গ্রামের দরিদ্র শ্রমজীবী পরিবারের মেয়ে ও পঞ্চম শ্রেণীর ওই স্কুল ছাত্রীর সঙ্গে পার্শ্ববর্তী চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের খাসপাড়া গ্রামের জয়নাল মিয়ার ছেলে শামীম (১৮) এর পূর্ব পরিচয় ছিল। গত মঙ্গলবার সকালে মেয়েটি তাঁর নানীর বাড়ি কান্দাপাড়ায় বেড়াতে যায়। বিকেলে শামীম গিয়ে তাঁকে কাজীর অফিসে নিয়ে বিয়ে করবে বলে প্রস্তাব দেয়। সন্ধ্যার দিকে সে মেয়েটিকে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে টিকারচর ঈদগাঁ মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ধর্ষণ করে রিক্সা নিয়ে আসার কথা বলে তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। রাত দেড়টা পর্যন্ত ঈদগাঁ মাঠে অপেক্ষা করে ধর্ষিতা শামীমের বাড়িতে গিয়ে তাঁর মা ও চাচা এনামুলকে ঘটনাটি জানায়। কিন্তু তাঁরা মেয়েটিকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। সারারাত রাস্তায় বসে থাকে ওই স্কুল ছাত্রী। পরদিন বুধবার শামীমের বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে সে স্থানীয় লোকজনকে তাঁর ওপর নির্যাতনের ঘটনাটি জানায়। এদিকে নাতনীকে না পেয়ে নানী ঘটনাটি তাঁর মেয়েকে জানায়। মেয়েটির মা বুধবার বিকেলে খাসপাড়া গ্রামে গিয়ে মেয়েকে শামীমের বাড়ির সামনে থেকে উদ্ধার করে। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রাম্য মাতব্বররা দু’পক্ষকে নিয়ে এক সালিসী বৈঠক করে। সেখানে ধর্ষক শামীমকে দোষী সাব্যস্ত করে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই বিচারে সন্তুষ্ট না হয়ে মেয়েটির মা শেরপুর সদর থানা পুলিশকে জানায়। সদর থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ রবিউল ইসলাম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার করে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তিনি মেয়েটিকে তাঁর মায়ের কাছে রেখে আসে। এদিকে শনিবার সকালে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক নাসরিন রহমান ও সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শামীম আরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে এবং জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। এ ব্যাপারে নাসরিন রহমান ও শামীম আরা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, কি কারণে ভিকটিমকে উদ্ধার করার পরও তাঁর মায়ের কাছে রেখে আসা হলো তা আমরা বুঝতে পারছি না। ভিকটিমের মা সাংবাদিকদের বলেন, আমার মেয়ের ইজ্জতের মূল্য ২০ হাজার টাকা। আমরা গরীব, তাই আমগরে পাশে কেউ দাঁড়ায় না। শেরপুর সদর থানার উপ-পরিদর্শক মো. রবিউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি সত্য। আমরা মেয়েটিকে উদ্ধারের পর মেয়ের মা ও স্থানীয় লোকজন সামাজিকভাবে ঘটনাটি নিস্পত্তি করবে বলে তাঁকে রেখে দেয়।