কলকাতায় গ্রেফতার ফারুক ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১১:২৩ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতার হওয়া ৬ জেএমবি সদস্যের মধ্যে আনোয়ার হোসেন ফারুক ময়মনসিংহের ত্রিশালে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে হামলার মোস্ট ওয়ান্টেড বলে ধারণা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যে ফারুকের নাম আপনার বলেছেন, সে ফারুক আমাদের কাছে মোস্ট ওয়ান্টেড। যদি সত্যিই সে ফারুক হয়ে থাকে তাহলে আপনাদের মনে আছে নিশ্চই, ২০১৪ সালে ময়মনসিংহের ত্রিশালে এক পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে প্রিজন ভ্যান থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার যে ঘটনা ঘটেছিল তার হোতা ছিল ফারুক। তার বিরুদ্ধে চার্জশিটও হয়েছে। পুরস্কারও ঘোষণা হয়েছিলো।’
তিনি বলেন, ‘সে যদি হয়ে থাকে, সত্যি সে যদি হয়ে থাকে, আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি সেই ধরা পড়েছে, এটা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ খবর।’
‘মোস্ট ওয়ান্টেড ফারুক যদি ধরা পড়ে আমাদের বড় অধ্যায় সূচনা হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান বলেন, আমরা এখনো অফিসিয়াললি জানতে পারিনি। অফিসিয়ালি জানতে হলে আমাদের আরো দুই একদিন অপেক্ষা করতে হবে।
ফারুককে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের একটা বন্দী প্রত্যার্পন চুক্তি আছে। আমাদের দেশের কোনো ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি সেদেশে পালিয়ে গেলে তারা আমাদের ফেরত দিবে।’
‘শুধু ফারুক না ওয়ারেন্টভুক্ত যে কোনো আসামিকে আমরা নিয়ে আসতে পারবো।’
তিন বাংলাদেশির বাকি দু’জনের বিষয়ে তিনি বলেন, বাকি দুই জনের বিষয়ে আমরা বিস্তারিত জানতে পারিনি। সে দুই জনও আমাদের ওয়ান্টেড ছিলো বলে শুনেছি। অফিসিয়াললি জানতে পারিনি।’
দুর্গা পূজার প্রস্তুতি বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনীগুলো যথেষ্ট সজাগ আছে। আতঙ্গ বা উদ্বেগের কোনো আভাস পাওয়া যায়নি। আভাস পাওয়া গেলে আমাদের সব কিছু তৈরি আছে। আমরা ব্যবস্থা নিবো।
পূজা নির্বিঘ্ন করতে প্রস্তুতির কথা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মূর্তি তৈরি, মন্ডপগুলোতে মূর্তি স্থাপন, বিসর্জন- এ তিন স্তরেই যাতে নির্বিঘ্নে উৎসব পালন করতে পারে সে জন্য তিন স্তরেই নিরাপত্তা দেয়া হবে।’
নিরাপত্তার ব্যবস্থার অংশ হিসেবে মন্ডপ অনুযায়ী প্রতিটিতে ৪ থেকে ৮ জন আনসার সদস্য থাকবে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সঙ্গে পূজা উদযাপন পরিষদগুলোর পক্ষে থেকে বিপুল সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবেন বলে জানান তিনি।
দুর্গা পূজা ও শিয়াদের মহরম অনুষ্ঠান পালনে যাতে কোনো সমস্যা সৃষ্টি না হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সেদিকেও নজর রাখছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এদেশের মানুষ কোনো সন্ত্রাসী জঙ্গি পছন্দ করে না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের ঐতিহ্য। আমাদের বাংলাদেশ ধর্ম নিরপেক্ষ। সব ধর্মের মানুষ নির্বিঘ্নে ধর্ম-কর্ম করতে পারে। আমরা রাষ্ট্রীয় ভাবেও সে ব্যবস্থা করে থাকি।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমাদের সরকার পাওয়ারে আসার পর থেকে পূজা, বড় দিন আর বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের উৎসবসহ সব উৎসবই অত্যন্ত জাকজমক ভাবে হয়েছে। এবারের দুর্গা পূজা অতীতের চেয়ে জাকজমক ভাবে পালন হবে।
পূজা উদযাপন পরিষদ নেতাদের উদ্বৃতি দিয়ে গতবারের চেয়ে এবার অন্তত ৩০০ পূজা মন্ডপ বেশি হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
যৌথ সভায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রধান ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।