সিলেটে পরকীয়া প্রেমের বলি প্রেমিক ইমরান : প্রেমিকাসহ গ্রেফতার ৩
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১২:০৯ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
গলা কেঁটে, লিঙ্গ কর্তন করে কানাইঘাটের ট্রেইলারিং ব্যবসায়ী ইমরান হোসেনকে হত্যার পর তার লাশ চটের বস্তায় ভরে বস্তার নীচ অংশে গাছের সাথে বেঁধে পুকুরে ডুবিয়ে রাখা হয়। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে এমন লোমহর্ষক খুনের বর্ণনা দিয়েছে ইমরানের কথিত প্রেমিকা সুহাদা বেগমসহ আটককৃত তিনজন। এমন তথ্য জানিয়েছেন কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির। পুলিশ সূত্র জানায়, উপজেলার সদর ইউপির সোনাপুর গ্রামের মো. আবু বক্করের ছেলে কানাইঘাট পৌর শহরের চয়েস টেইলার্সের মালিক দর্জি ইমরান হোসেনের (২৪) সঙ্গে দীর্ঘদির ধরে একই উপজেলার বড়চতুল ইউপির দূর্গাপুর দক্ষিণ নয়াগ্রামের প্রবাসী বদরুল ইসলামের স্ত্রী সুহাদা বেগমের পরকীয় সম্পর্ক ছিল।
গত সোমবার সুহাদা বেগমের ভাই ইমরান আহমদ ও তার নিকটাত্মীয় জাহাঙ্গীরের মোটরসাইকেল যোগে সুহাদার স্বামীর বাড়িতে যায় প্রেমিক ইমরান হোসেন। এরপর ইমরান আর বাড়ি ফিরেনি। তার কোন সন্ধান না পেয়ে নিখোঁজের দুই দিন পর তার পিতা আবু বক্কর কানাইঘাট থানায় সাধারণ ডায়রি করেন।
এরপরও ছেলের সন্ধান না পেয়ে গত শুক্রবার থানায় সুহাদা বেগম (২১) ও তার ভাই ইমরান আহমদ (২৪), দেবর মাসুম আহমদ (৩০) ও দক্ষিণ লক্ষীপ্রসাদ গ্রামের উমর আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (২৩) ৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ৭/৮ জনকে আসামি করে মামলা (মামলা নং-১৯, তাং ১৯/০৯/২০১৬ইং) দায়ের করেন।
থানার পুলিশ ইমরান হোসেনস নিখোঁজের রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য রাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সুহাদা বেগমের দেবর মাসুম আহমদ ও নিকটাত্মীয় জাহাঙ্গীর আহমদকে গ্রেফতার করে।
তাদের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দির সূত্র ধরে এ হত্যাকান্ডের পরিকল্পনাকারী ইমরান হোসেনের পরকীয়া প্রেমিকা সুহাদা বেগমকে শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতার করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ইমরান হোসেন হত্যাকান্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দেয়। সোমবার রাতেই ইমরান হোসেনকে তার বসত ঘরে পৈশাচিক কায়দায় হত্যার পর পুকুরে লাশ গুম করার কথা স্বীকার করে সুহাদা।
এই জবানবন্দির সূত্র ধরে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জুনেদ, এএসআই জগদীশ, এএসআই আব্দুল মান্নানসহ একদল পুলিশ সুহাদার শ্বশুড়বাড়ির পুকুর থেকে ইমরান হোসেনের বস্তাবন্দী অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে।
পরে ইমরান হোসেনের লাশ থানায় নিয়ে আসা হলে থানা প্রাঙ্গনে লোকে লোকারন্য হয়ে যায়। নিহতের আত্মীয় স্বজনরা ইমরানের গলা কাটা লাশ দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। নিহত ইমরান হোসেনের পিতা আবু বক্কর গোয়াইনঘাট পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার।
অপরদিকে প্রবাসী বদরুল ইসলামের স্ত্রী সুহাদা বেগমের পিতার বাড়ী লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউপির মুলাগুল নয়াখেল গ্রামে। সে ঐ গ্রামের সৌদি প্রবাসী তাজুল ইসলামের মেয়ে।
কানাইঘাট থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবির জানান, আটককৃত সুহাদা বেগম, তার দেবর মাসুম আহমদ, ও জাহাঙ্গীর আহমদ ইমরান হত্যাকান্ডর সঙ্গে সরাসরি জড়িত।