গাজিপুরের কারখানা থেকে একজনের দেহের অংশবিশেষ উদ্ধার
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ৭:১৩ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজঃ গাজীপুরের টঙ্গীতে প্যাকেজিং কারখানা টাম্পাকো ফয়লসে বিস্ফোরণের ঘটনায় ভেতরের একজনের দেহের অংশবিশেষ উদ্ধার করেছে উদ্ধার কর্মীরা। দুর্ঘটনার দুই সপ্তাহ পর একটি মরদেহের মাথার খুলি ও মেরুদণ্ড পাওয়া যায়। বাকি অংশ আগুনে পুড়ে গেছে। শনিবার দুপুরে ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয় বলে সাংবাদিকদের জানান সেনাবাহিনী স্বতন্ত্র ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেডের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল শফিউল আজম। তিনি বলেন, আনিসুর রহমান নামে এই কারখানার নিহত এক কর্মীর লাশের খোঁজে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন রবিউল ইসলাম। শফিউল আজম জানান, ধ্বংসস্তূপের মাঝামাঝি অংশে ওই শ্রমিকের দেহাবশেষটি দেখতে পান একজন শ্রমিক। পরে তা উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে এই কারখানায় দুর্ঘটনায় ৩৬ জনের মৃত্যুর নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। এখনো চারজন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছেন সেনা কর্মকর্তা শফিউল আজম । উদ্ধার হওয়া দেহাবশেষটি কার সেটা শনাক্ত করা কঠিন বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকারীরা। তবে কারখানার শ্রমিক জুলফিকারের ধারণা, এটি প্রিন্টিং কর্মী আজিম উদ্দিনের। টাম্পাকো থেকে উদ্ধার হওয়া ছয় মরদেহের পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে এসব মরদেহ। তাদের শনাক্ত করতে মালিবাগে সিঅইডি ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবে নিখোঁদের স্বজনরা লালা ও রক্তের নমুনা জমা দিয়েছেন। এই নমুনা থেকে নেয়া ডিএনএ পরীক্ষা করে শনাক্ত করতে তিন মাস সময় লাগতে পারে বলে টাম্পাকো দুর্ঘটনার কারণ জানতে ফায়ার সার্ভিসসহ তিনটি সংস্থাকে প্রতিবেদন জমা দিতে আরও সাত দিন সময় দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম আলম। দমকল বাহিনী ছাড়াও ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন-বিসিক এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের কল কারখানা অধিদপ্তর এই তদন্ত চালাচ্ছে। তবে বৃহস্পতিবার তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে বিস্ফোরণের জন্য টাম্পাকোর ভেতরের রাসায়নিকের মজুদকে দায়ী করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। গত ১০ সেপ্টেম্বর ভোরে বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে যায় টাম্পাকো ফয়লসে। তখন সেখানে রাতের পালার কাজ চলছিল। তখন কারখানাটিতে মোট কত জন শ্রমিক ছিলেন এবং আগুন ধরার আগে কত জন বের হয়ে আসতে পেরেছিলেন সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য নেই। এই বিস্ফোরণ ও পরে আগুনে পাঁচ তলা কারখানা ভবনটি কার্যত ধসে পড়ে। সেনাবাহিনীর একটি দল এই ধ্বংসাবশেষ কেটে সরিয়ে নিচ্ছে। ভেতরে বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক মজুদ থাকায় তাদেরকে সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে বলে উদ্ধার অভিযান এখনও শেষ করা যাচ্ছে না। এই ঘটনার পর থেকে কারখানা মালিক বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মকবুল হোসেন আত্মগোপনে আছেন। তার বিরুদ্ধে পুলিশ এবং নিহত এক শ্রমিকের বাবা আলাদা মামলা করেছে। তাকে ধরতে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।