শিবগঞ্জে তৈরি হচ্ছে স্বপ্নের রাজমহল
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ৯:০৩ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
জেলার মোকামতলায় তৈরি হচ্ছে স্বপ্নের রাজমহল।প্রায় ৯ বছর ধরেই স্বপ্ন তৈরি হচ্ছে। ইটের পর ইটই শুধু নয়, দামী পাথরের পর পাথর দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে এই স্বপ্ন। একেবারে শখের বসে পড়ে এই স্বপ্নের রাজমহল নির্মাণ করছেন শাখাওয়াত হোসেন টুটুল নামের এক ব্যবসায়ী। ভবনটি দেখতে রাজপ্রসাদের মত। প্রায় এক একর জায়গাজুড়ে নির্মাণ হচ্ছে এই স্বপ্নের রাজমহল।
জানা যায়, বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা বন্দরের দেউলি সরকারপাড়ায় শাখাওয়াত হোসেন টুটুল নামের এক ব্যবসায়ী এই রাজমহল নির্মাণ করছেন। বলা হয় টুটুল এর পূর্ব পুরুষরা জমিদার ছিলেন। বর্তমানে তিনি স্বপরিবারে ঢাকায় বসবাস করেন। পৈত্রিক জায়গার উপর ২০০৬ সালের শেষ দিকে প্রথমে নির্মাণ কাজ শুরু করার পর আশপাশের আরও কিছু জমি কিনে নেন। বর্তমানে প্রায় ১ একর জমির উপর এই রাজমহল নির্মাণ করা হচ্ছে। কবে নির্মাণ কাজ শেষ হবে সে কথা কেউ বলতে পারে না।
এলাকার লোকের কাছে বাড়িটি টুটুলের বাড়ি হিসেবে পরিচিত পেয়ে এসেছে। বাড়িটি অত্যান্ত দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলা হচ্ছে। সবকিছুতেই দামি আসবাবপত্র ব্যবহার করা হয়েছে।বাড়ির দরজায় লাগানো হয়েছে কাঠের দরজা আর তাতে খোদাই করা হয়েছে বিভিন্ন ডিজাইনের নকশা। রয়ছে শ্বেত পাথরের হংস ফোয়ারা। হংস ফোয়ারার চার ধারে পাথরের সান বাঁধানো পুকুর রয়েছে। পুকুরটি আরও নন্দনিক করে তুলেছে ভবনটিকে।ভবনের ভেতরের দেয়ালে রয়েছে কারুকজ করা এবং পোড়া মাটির ফলক বসানো হয়েছে। ফলকগুলো ইতিহাস বহন করছে। রয়েছে বিদ্যুৎ, এসি, পাখাসহ বৈদ্যুতিক প্রয়োজনীয় সামগ্রী। এগুলো সবই দামী। আপাতত ৪ তলা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।
মূল ফটকটি নাটোরের উত্তরা গণভবনের নকশার মত। এই রাজমহলের মালিক এর অনুমতি ছাড়া কেউ ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না। তিনি কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেন না। বাড়ির পুরো সীমানাসহ প্রতিটি অবকাঠামো দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলা। দূর থেকে মনে হবে লন্ডনের ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল।
মূল ফটকটি নাটোরের উত্তরা গণভবনের নকশায় নির্মিত। ভেতরে চার তলা প্রাসাদের প্রথম ইউনিট ও দ্বিতীয় ইউনিটের ওপরে চৌকোনা চারটি গম্বুজ উত্তরা গণভবনের (একদা রানীর প্রাসাদ ছিল) মতো। মূল ফটক দিয়ে ঢোকার পরই হাতের বায়ে চোখে পড়বে শ্বেত পাথরের হংস ফোয়ারার চার ধারে পাথরের সান বাধানো পুকুর। প্রাসাদের প্রথম ইউনিটে বড় দরোজা দিয়ে প্রবেশের পর বিরাট হল রুম। দেয়ালের পরতে পরতে নকশা।
দ্বিতীয় ইউনিটে প্রবেশের পর সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠার সময় নজরে আসবে পোড়ামাটির ফলক (টেরাকোটা)। প্রতিটি ফলকে প্রাচীন ইতিহাসের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। দোতলার ঘরগুলো সুপরিসর। এখানে ফাইভ স্টার হোটেলের লাউঞ্জ ও রিসেপসনিস্টদের মতো ডিজাইন করে রাখা হয়েছে। সিঁড়ি বেয়ে চতুর্থ তলায় গিয়ে মনে হবে বিদেশি হোটেলগুলোর মতো যেকোনো অনুষ্ঠান ও আয়োজন সেখানে করা সম্ভব।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শাখাওয়াত হোসেন টুটুল শখের বসে বাড়িটি নির্মাণ করছেন। দামী পাথর দিয়ে বাড়িটি নির্মাণ করছেন। তার রয়েছে ঢাকার ধানমন্ডিতে অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, গাজীপুরে টাটকা ফুড প্রডাকশন ফ্যাক্টরি, এএইচজেড কোল্ড স্টোরেজ, ইটভাটি ও এএইচজেড ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনসহ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যে জমিতে বাড়িটি নির্মাণ হচ্ছে তা টুটুলদের পৈত্রিক জমি। ব্যবসায়ী টুটুল নিজের স্বপ্নের মত বাড়ি নির্মাণ করার পাশাপাশি এলাকাবাসীর জন্য ঈদগাঁ মাঠ নির্মাণ করে দিয়েছেন। আশপাশের বিভিন্ন মসজিদের উন্নয়ন কাজে সহযোগিতা করেছেন। এলাকাবাসী জানায় ব্যাংকে তার ঋণ রয়েছে। রাজমহলটি দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ভিড় জমে।