আব্বুকে খুব মিস করছি—– ইলিয়াস কন্যা সাইয়ারা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ৫:০৭ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
দীর্ঘ সাড়ে চার বছর ধরে বাবার অপেক্ষায় বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী কন্যা সাইয়ারা নাওয়াল। দেখতে দেখতে ছোট্ট সাইয়ারা এখন কিশোরীতে পরিণত হয়েছে।
সে এখন বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। বাবাকে ছাড়াই ঈদ করতে মা তাহসিনা রুশদীর লুনার সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে এসেছেন ইলিয়াস-কন্যা।
বিশ্বনাথের নিজ বাড়ি থেকে আলাপকালে কিশোরী সাইয়ারা নাওয়াল নিজের বিশ্বাসের কথা জানিয়ে বলে, ‘আব্বু ফিরে আসবে। আমি আব্বুর জন্য অপেক্ষা করছি। আব্বু না আসলে আমার ঈদ ভালো হবে না। আব্বুকে ফিরিয়ে দিতে সরকারের প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চাই।’
২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল মধ্যরাতে মহাখালী ফ্লাইওভার সংলগ্ন সাউথ পয়েন্ট স্কুলের গলি থেকে নিখোঁজ হন এম ইলিয়াস আলী ও তার গাড়ির ড্রাইভার আনসার আলী। আজও তাদের সন্ধান মেলেনি। দুই পরিবারের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীই ইলিয়াস আলী ও আনসারকে তুলে নিয়ে গেছে।
ঈদের আগে বাবা ইলিয়াস আলীকে ফেরত পেতে সরকারের প্রতি সাইয়ারার আহ্বান, ‘আব্বুকে আমাদের মাঝে ফেরত দিন। আব্বুকে ছাড়া আমার কোনো কিছুই ভালো লাগে না। ঘুমুতে গেলেই স্বপ্নে আব্বুকে দেখতে পাই। কিন্তু ঘুম ভাঙলেই খুব কষ্ট হয়। নিজেকে অসহায় মনে হয়। আব্বুকে খুব মিস করছি।’
সে আরও জানায়, ‘সব সময়ই আমার আব্বুর কথা মনে পড়ে। আব্বু আমাকে সবচেয়ে বেশি আদর করতেন। আমি যা চাইতাম তাই কিনে দিতেন। আমাকে নিয়ে আব্বুর অনেক স্বপ্নও ছিল। রাতে বাবাকে ছাড়া ঘুমুতে গেলে এখনো একাকী মনে হয়। আমার খুব কষ্ট।’
তাহসিনা রুশদীর লুনা জানান, ‘ছেলেমেয়েদের নিয়ে ঈদ কাটাতে সিলেটে চলে এসেছি। ইলিয়াস ভক্তদের সান্ত্বনা দিতে হয়। এখানে তার নামে ভক্তরা কোরবানি দেন।’
বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদের মতো ইলিয়াসকেও খুঁজে পাওয়ার আশায় প্রত্যাশায় দিন কাটে তাহসিনা রুশদীর লুনার। তিনি সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান, ‘আমার স্বামীকে অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে দিন। ছেলেমেয়েদের মুখের দিকে তাকিয়ে তাকে ফেরত দিন।’
এদিকে ইলিয়াস আলীর সঙ্গে নিখোঁজ গাড়িচালক আনসার আলীর পরিবারের লোকজনও রয়েছেন চরম হতাশায়। স্বামী নিখোঁজের যন্ত্রণা আর বাবার আদর ও স্নেহবঞ্চিত শিশুকন্যা চাঁদনীকে নিয়ে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে আনসার আলীর স্ত্রী মুক্তা বেগমের। তাদেরও অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হচ্ছে না।