তিন নারী জঙ্গির মধ্যে নেই নিহত জঙ্গি মেজর জাহিদের স্ত্রী
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ২:৩৮ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজঃ তিন নারী জঙ্গির মধ্যে নেই নিহত জঙ্গি মেজর জাহিদের স্ত্রী জেবুন্নাহার শিলা।তবে আজিমপুরের জঙ্গি আস্তানায় থাকতো সে। মিরপুরের রূপনগরের অভিযানে স্বামী মেজর জাহিদ মারা যাওয়ার পর থেকে সে আজিমপুরের ওই আস্তানাতেই দু’শিশু সন্তান নিয়ে অবস্থান করছিল।অভিযানের মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে সে এক বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়েছিল। কিন্তু ফেরার আগেই পুলিশের অভিযান শুরু হওয়ায়,সে আর ওই বাসায় ফেরেনি বলে মনে করেন অভিযান পরিচালনাকারী পুলিশ কর্মকর্তারা। কিন্তু তার আট বছরের শিশু কন্যাকে ওই আস্তানা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজিমপুরের নারী জঙ্গি আস্তানায় যে তিন নারীকে আহতাবস্থায় আটক করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, তাদের একজন হলো গুলশান হামলার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড নুরুল ইসলাম মারজানের স্ত্রী আফজান ওরফে প্রিয়তি।গত জানুয়ারি মাসে মারজান খালাতো বোন প্রিয়তিকে বিয়ে করে। তার বাড়ি পাবনার ঈশ্বরদির দাপুনিয়া ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামে। মারজানের বাড়িও পাবনার হেমায়েতপুরের আফুরিয়া গ্রামে। আহত আরেক নারী জঙ্গি হচ্ছে শায়লা আফরিন। তার বাড়ি রাজধানীতেই। তবে তার বিস্তারিত ঠিকানা এখনও পুলিশ দিতে পারেনি। সুস্থ হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে তাদের সঠিক ও বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে বলে জানান কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা। তার স্বামী হলো জঙ্গি বাশারুল্লাহ ওরফে চকলেট ওরফে রাহুল। আস্তানা থেকে উদ্ধার হওয়া তিন শিশুর একটি রাহুলের সন্তান। আহত আরেক নারী জঙ্গির নাম শারমিন। অভিযানে নিহত জঙ্গি করিম ওরফে শমশের উদ্দিন ওরফে জামশেদ ওরফে তানভীর কাদেরী। করিমের দুই জমজ ছেলের মধ্যে একজনকে পুলিশ ওই বাসা থেকে উদ্ধার করে। উদ্ধার হওয়া শিশুটি ধানমন্ডির ইংরেজি স্কুল মাস্টারমাইন্ডের লেভেল এইট-এর ছাত্র। তার আরেক ভাই ‘আল্লাহর রাস্তায়’ গেছে বলে জানায় পুলিশকে। পুলিশের ধারণা, করিম তার অপর ছেলেকে এরইমধ্যে জঙ্গি দলে দিয়ে দিয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানায়, আজিমপুরের জঙ্গি আস্তানা থেকে উদ্ধার হওয়া জঙ্গিদের তিন শিশু সন্তানকেই তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। মিরপুরের রূপনগরে পুলিশের অভিযানে নিহত জঙ্গি মেজর জাহিদের বাবা মমিনুল হকসহ স্বজনরা রবিবার বিকালে তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে জাহিদের শিশু কন্যাকে দেখতে যান। সেখান থেকে তারা মিন্টো রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে যান। জাহিদের শিশু কন্যাকে তারা নিয়ে যাওয়ার জন্যেও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কাছে অনুরোধ জানান। আজিমপুরের বিজিবি সদর দফতরের ২ নম্বর গেইট সংলগ্ন ২০৯ নম্বরের ছয় তলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় এ অভিযান চালানো হয়। বাড়িটি স্থানীয় মো. কায়সারের। গত ১ আগস্ট এই বাসাটি ১৮ হাজার টাকায় ভাড়া নেয় জঙ্গি করিম। এরপর থেকে তাদের স্ত্রী ও সন্তানরা এই বাড়িতে উঠে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। রূপনগরের অভিযানের কয়েকদিন আগে থেকে জঙ্গি মেজর জাহিদের স্ত্রী ও সন্তানরাও এই বাসাতেই থাকতে শুরু করে। কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ কমিশনার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন জানান, ‘জঙ্গি জাহিদের স্ত্রী জেবুন্নাহার শিলাও জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত। কারণ, স্বামীর মৃত্যুর পর সে স্বজনদের কাছে না গিয়ে দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে অন্য জঙ্গিদের স্ত্রীদের সঙ্গে থাকতে শুরু করে। আজিমপুরে অভিযান শুরুর দু’তিন ঘন্টা আগে এক বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে কোনও কাজে বেরিয়েছিল সে। এরই মধ্যে অভিযান শুরু হয়ে গেলে সে আর ওই বাসায় ফেরেনি।’ তবে জাহিদের স্ত্রীর অবস্থান জানার চেষ্টা চলছে বলেও জানান এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা ।