শোকে স্তব্ধ পরিবার : সিলেটে লাশ হয়ে ফিরবেন ৫ জন
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
গাজীপুরের টঙ্গী বিসিক শিল্পনগরীতে ট্যাম্পাকো ফয়েলস প্যাকেজিং কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে নিহতদের মধ্যে পাঁচজন সিলেটের গোলাপগঞ্জের।
ঈদে বাড়ি ফিরে স্বজনদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগির কথা ছিল তাদের। সেই আনন্দ এখন বিষাদে রূপ নিয়েছে। শোকে স্তব্ধ পরিবারগুলোয় চলছে আহাজারি।
গোলাপগঞ্জের নিহতদের মধ্যে রয়েছেন সুন্দিশাইল গ্রামের হাসান সিদ্দিকী (৫০), ওয়ালী হোসেন (৩২), এনামুল হক (৪৫), সাইদুর রহমান (৫৩) ও কানিশাইল গ্রামের রেজওয়ান আহমদ (৩২)।
শনিবার বিকেলে সুন্দিশাইল গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, নিহতদের পরিবারে চলছে বুকফাটা মাতম।
নিহত সাইদুরের স্বজনরা জানান, সাত বছরের মেয়ে সাদিয়ার জন্য ঈদের জামা ও জুতা নিয়ে রোববার বাড়ি ফেরার কথা ছিল ট্যাম্পাকোর শ্রমিক সুন্দিশাইল গ্রামের বাসিন্দা সাইদুরের।
নিহত এনামুল ১২ বছর ধরে কাজ করছিলেন ট্যাম্পাকো ফয়েলসে। দরিদ্র সংসারে অন্ধ বাবা সোনা মিয়াকে বলেছিলেন তিনি, রোববার ঈদের বেতন ও বোনাস নিয়ে বাড়ি আসবেন। শোধ করবেন বাবার ঋণের টাকা। তার আর ফেরা হল না।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে সোনা মিয়া বলেন, “ছেলে কইছলো, টাকা লইয়া আইবো, ঋণ মারব। কিন্তু সকালে ছেলের বউ কইলো, কারখানায় আগুন লাগছে। পুড়ে মারা গেছে এনামুল। আগুন আমার সব শেষ করি দিছে। এখন আমি কিলা খাইমো, কিলা চলমো।”
পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে বাকরুদ্ধ নিহতদের স্বজনরা।
নিহত হাসান সিদ্দিকীর ছেলে মারজান বলেন, “বাবার উপার্জনেই চলত তাদের সংসার। সকালে বাবার মৃত্যুর খবর শুনে আমরা হতবাক হয়ে পড়েছি।”
সুন্দিশাইল গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল ইসলাম বলেন, কারখানার মালিক সাবেক সংসদ সদস্য মকবুল হোসেনের বাড়িও সুন্দিশাইল গ্রামে। গ্রামের দরিদ্র প্রায় ৫০ জন মানুষকে চাকরি দিয়েছিলেন তিনি তার কারখানায়।
“তারা প্রায় এক যুগ ধরে কাজ করে ফিরিয়েছিলেন দরিদ্র পরিবারে সামান্য সচ্ছলতা। বয়লার বিস্ফোরণে মানুষগুলো মারা যাওয়ায় পরিবারগুলো বড় সমস্যায় পড়বে।”