এই ভরা মৌসুমে হাট-বাজারে দেখা মিলছে লাল কালচে আভার পাকা “তাল”
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ২:৪৮ অপরাহ্ণ
তোফায়েল আহমেদ পাপ্পু, শ্রীমঙ্গল থেকে:
চলছে ভাদ্র মাস। গ্রামগঞ্জে এখন পাকা তালের গন্ধ। পাকা তালের মন মাতানো সৌরভে চারদিক একেবারে মৌ মৌ। পাকা তালের এই ভরা মৌসুমে হাট-বাজারে বিভিন্ন আকারের লাল কালচে আভার পাকা তাল চলে এসেছে। দু’এক মাস আগে বাজারে কাঁচা তালের রসালো শাঁস রসনা মিটিয়েছে। এখন পাকা তাল।
কি গ্রাম কি শহর সর্বত্র শুরু হয়েছে তাল দিয়ে নানা রকমের পিঠা পায়েস পাকোয়ান, তালমিছরি, তাল মাখনা, তালের বড়াসহ রকমারি খাবার। শহরের বাড়িতে বাড়িতে চলছে পাকোয়ান, প্যান কেকসহ নানান খাবার। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে এমনকি মধ্য আষাঢ়েও তীব্র গরমে চাহিদার কারণে তালের শাঁস বাঁধানোর সময়েই ব্যাপারীদের কাছে বিক্রি করে থাকেন। ফলে এই সময়টায় পাকা তাল কম মিলছে। শ্রীমঙ্গল শহরের রাস্তার মোড়গুলোতে ঝুড়িতে তাল নিয়ে বসে আছেন তাল বিক্রেতারা। বেচাকেনা মন্দ নয়। শ্রীমঙ্গল গদার বাজার তাল বিক্রি করছেন হিমাংশু পাল তিনি জানান, সপ্তাহ খানেক আগে থেকে পাকা তাল বাজারে এসেছে। এদিকে তাল বিক্রিতে পিছিয়ে নেই গ্রামের বিক্রেতারাও। বিত্তবানরাও এখন তাল কিনে তার মাড়ি (রস) বের করে প্যাকেট ডিপ ফ্রিজে রেখে দিচ্ছে। যখন তালের মৌসুম নয়, তখন তালের পিঠা পায়েস খাওয়ার জন্য। তালের রসে পিঠা তৈরির উৎকৃষ্ট সময়। কালের পরিক্রমায় সুস্বাদু তাল ও অতিমূল্যের তালিকা দখল করায় পিঠাপ্রেমী বাঙালির রসনাবিলাস ভাটার টান লেগেছে। তবে বাজারে বিক্রেতারা এখনো বিভিন্ন আকারের পাকা তালের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। ক্রেতারা আগ্রহ নিয়ে পাকা তালের রূপগন্ধ পরখ করে দেখলেও দামের কারণে কিনছে কম। তাল বিক্রেতা সমীরণ দেব জানান এখন পাকা তালের দাম বাড়তি কিছুদিন পর আরও বাড়বে। প্রতি শ পাকা তাল ২৪০০ থেকে ২৬০০ টাকা ক্রয় করে বাজারে খুচরা বিক্রি করে থাকেন। বাজারে প্রতিটি তাল রকমভেদে ৫০ টাকা থেকে ১৫০ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে। পচনশীল হওয়ার কারণে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবার একটু বেশি দামেই তাল বিক্রি হচ্ছে। তালের পিঠা তৈরিতে পাকা তালের রস, বিন্নি চালের গুড়া, কলা, নারকেল, গুড় সব মিশিয়ে পিঠা তৈরিতে এখন অনেক খরচ পড়ে যাচ্ছে। এ কারণে অনেকের পক্ষে এই তালের পিঠার স্বাদ নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাল পিঠা অনেক মজার হলেও বানাতে অনেক পরিশ্রম ও কষ্ট সহ্য করতে হয়। তবুও এই এলাকার মানুষ বছরে একবার হলেও তালপিঠা স্বাদ গ্রহণ করেন এবং প্রথা অনুযায়ী মেয়ে-জামাইয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে থাকেন।