দিরাইয়ে এক ভণ্ড কবিরাজের কাণ্ড !
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ৩:২১ অপরাহ্ণ
দিরাই প্রতিনিধি :
“আমার খুব যন্ত্রণা হচ্ছে, আমি আর সহ্য করতে পারছি না, আমাকে রেহাই দাও”-এভাবেই যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন দিনমজুর আবদুর রহমান ভূঁইয়া। তাকে দু’দিন ধরে মাটি খুঁড়ে গর্ত করে পা থেকে বুক পর্যন্ত পুঁতে রাখা হয়েছে। গর্তের পাশেই দাঁড়িয়ে আছেন কবিরাজ বকুল। রোগীর যন্ত্রণা দেখে কবিরাজের এক সহযোগী কোদাল দিয়ে মটি খুঁড়ে রোগীকে গর্ত থেকে তোলার চেষ্টা করছেন।
মঙ্গলবার (০৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়- দিরাই উপজেলার হাজারীপুর নোয়াগাঁও গ্রামে চিকিৎসার নামে এক রোগীকে মাটিতে পুঁতে রেখে এক ভণ্ড কবিরাজ অভিনব কায়দায় অপচিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর ভণ্ড কবিরাজের এই অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন গ্রামের দিনমজুর আবদুর রহমান ভূঁইয়া (৫০)।
অসুস্থ্য আব্দুর রহমানের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে- গত মাঘ মাসে মাটি কাটার কাজ থেকে এসে হঠাৎ করেই তার শরীরে অসুস্থ্যতা বোধ করেন। এক পর্যায়ে তার হাতে ও পায়ের শক্তি হারিয়ে ফেলেন। অবাক কাণ্ড হচ্ছে- ৪ সন্তানের জনক দিনমজুর আবদুর রহমান ভূঁইয়ার স্বজনরা শুরু থেকে ডাক্তারের শরণাপন্ন না-হয়ে অতি আগ্রহ আর বিশ্বাস নিয়ে নিজেরাই শরণাপন্ন হয়েছেন ওই ভণ্ড কবিরাজের। তাদের অজ্ঞতার সুযোগে ওই ভণ্ড কবিরাজ পাতাল-মন্ত্রের চিকিৎসা শুরু করেন।
কবিরাজ বকুল দাবি করছেন- জল গঙ্গা বাতাস থেকে রোগের উৎপত্তি হয়েছে। পাতাল-মন্ত্র প্রয়োগ করছি, তাই তাকে দু’দিনব্যাপী মাটিতে পুঁতে রাখা হয়েছে। প্রথমদিন রোগী মন্ত্র গ্রহণ করলেও দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার রোগী তা সহ্য করতে না-পারায় তাকে গর্ত থেকে থেকে উঠানো হচ্ছে, আবারও বুধবার তাকে গর্তে পুঁতে পাতাল-মন্ত্র দেয়া হবে।
দিনমজুর আবদুর রহমানের বৃদ্ধ মায়ের ধারণা- তার ছেলের এই রোগ ডাক্তার দেখানোর রোগ নয়। তাই তারা কবিরাজের শরণাপন্ন হয়েছেন।কবিরাজ বকুল মৃত আলী হসেনের ছেলে। তার বাড়ি ময়মনসিংহে। সে উপজেলার শ্যামারচর গ্রামে তার শ্বশুর বাড়িতে ১৫ বছর ধরে বসবাস করছেন।
এই ভণ্ড কবিরাজ গ্রামের সাধারণ মানুষের অজ্ঞতার সুযোগে বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।