আগামীকাল থেকে ঢাকা-সিলেট রুটে চলবে নতুন ‘পারাবত’ ট্রেন
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ৪:০১ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ :
এক সময় ঢাকা-সিলেট রুটে ট্রেনটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো। তবে কোচ সংখ্যা কমে আসায় এবং এসি কোচ আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর ট্রেনটি আগের ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলে। রেলপথ থেকে যাত্রীদের পছন্দ চলে যায় সড়কপথে। আর আপ ও ডাউন সময় বেড়ে যাওয়ায় সিলেটের যাত্রীরা এ ট্রেনটি এড়িয়ে চলতে শুরু করেন।
আশার কথা হচ্ছে, এখন আবার পুরনো ঐতিহ্য ও আধুনিক নতুন কোচে রেলপথে ফিরছে আশির দশকের পারাবত এক্সপ্রেস। আগামীকাল (২ সেপ্টেম্বর) থেকে সিলেট-ঢাকা রুটে লাল-সবুজের নতুন পারাবত চলাচল শুরু করবে।
পারাবত এক্সপ্রেসের জন্য ১৬টি নতুন লাল-সবুজ কোচ চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থেকে ঢাকা এসেছে সোমবার (২৯ আগস্ট)। ২ সেপ্টেম্বর ইন্দোনেশিয়ান নতুন এয়ারব্রেক কোচ নিয়ে ছুটবে পারাবত। কোচগুলোর মধ্যে ২টি এসি স্লিপার কোচ, ২টি এসি চেয়ার, ১টি প্রথম শ্রেণী, ৮টি শোভন এবং ২টি ডায়নিং কার রয়েছে।
রেলওয়ের পাহাড়তলী কারখানার প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী হারুন উর রশীদ জানান, রেলওয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী পারাবতের জন্য ১৬টি মিটারগেজ কোচ প্রস্তুত। কোচগুলোর মধ্যে ২টি এসি স্লিপারে আসন রয়েছে ৬৬টি, ২টি এসি চেয়ার কোচে আসন ১১০টি, প্রথম শ্রেণীর একটি কোচে আসন ৩৩টি, ৮টি শোভন চেয়ার কোচে আসন সংখ্যা ৪৮০টি, ২টি ডায়নিং কারে আসন সংখ্যা ৩০টি। সব মিলিয়ে ২ সেপ্টেম্বর পারাবত এক্সপ্রেসের আসন সংখ্যা হবে ৭১৯টি।
এতোদিন মাত্র ১০টি কোচ নিয়ে চলছিলো পারাবত এক্সপ্রেস। যেখানে কোনো এসি কোচ ছিলো ঢাকা-সিলেট রুটে ট্রেনটি একসময় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো।
তবে কোচ সংখ্যা কমে আসায় এবং এসি কোচ আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর ট্রেনটি আগের ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলে। রেলপথ থেকে যাত্রীদের পছন্দ চলে যায় সড়কপথে। আর আপ ও ডাউন সময় বেড়ে যাওয়ায় সিলেটের যাত্রীরা এ ট্রেনটি এড়িয়ে চলতে শুরু করেন।
১৯৮৬ সালের মার্চে ঢাকা-সিলেট রুটে পারাবত যাত্রা শুরু করে। এরপর ১৯৯৫-৯৬ সালে ইরানি কোচ আসার পর একসঙ্গে পারাবত এক্সপ্রেস ও সূবর্ণ এক্সপ্রেসে এয়ারব্রেক ইরানি কোচ দেওয়া হয়। ২০১১ সালের নভেম্বরে ইরানি কোচ খুলে নিয়ে ভ্যাকুয়াম কোচ সংযোজন করা হয় পারাবতে। এরপর থেকে ট্রেনটি যাত্রী সেবায় পিছিয়ে পড়ে। যারা একটু স্বাচ্ছন্দ্যে, আরামে যেতে ট্রেন বেছে নিতেন তারা পারাবতে অনাগ্রহী হয়ে পড়েন। এসময় থেকে একের পর এক কোচ ড্যামেজ হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত কখনও ৯টি আবার কখনও ১০টি কোচ নিয়ে চলছিলো পারাবত এক্সপ্রেস।
এখন আবার পুরনো ঐতিহ্য ও আধুনিক নতুন কোচে রেলপথে ফিরছে আশির দশকের পারাবত এক্সপ্রেস। তবে যাত্রীদের প্রত্যাশা, ট্রেনটির ‘লুজ টাইম’ যেন কমিয়ে দেওয়া হয়। শুরুতে মাত্র ৬ ঘণ্টা ২০ মিনিট লাগলেও এখন এক ঘণ্টা বেশি লাগে।
কারণ হিসেবে জানা গেছে, বিভিন্ন স্টেশনে পারাবতের অতিরিক্ত লুজ টাইম ও রানিং টাইম দিয়ে রাখা হয়েছে। যে কারণে আগের চেয়ে এখন বেশি সময় নেয় পারাবত। ট্রেনটির নতুন কোচের সঙ্গে লুজ টাইম কমিয়ে গতি বাড়ানো ও শীতাতপ আসন আরও বাড়ানোর দাবি এ রুটের যাত্রীদের।