আসন সংকটের কারণে ভর্তি নিয়ে শঙ্কায় সিলেটের মেধাবীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ আগস্ট ২০১৬, ২:৩১ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ :
সিলেটের দুটি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় মেধাবীরা। উচ্চ মাধ্যমিকের পর প্রায় সব শিক্ষার্থীর পছন্দের শীর্ষে থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল কলেজ। অথচ এসব প্রতিষ্ঠানে আসন সংকট থাকায় পছন্দের প্রতিষ্ঠানে ভর্তির স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়।
সিলেটে এইচএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর সংখ্যার চেয়ে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজগুলোতে আসন সংখ্যা কম হওয়ায় এই সঙ্কট সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ সিলেটের সব প্রতিষ্ঠানে অনার্সের আসনের তুলনায় চারগুণ শিক্ষার্থী এবার পাস করেছে।
সিলেট জেলার মেডিক্যাল কলেজ, পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অনার্স কোর্সে আসন আছে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার। এর মধ্যে শুধু সিলেট জেলায় এইচএসসিতে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৯ হাজার ৩৪৮ জন শিক্ষার্থী। সিলেট শিক্ষাবোর্ডে ১ হাজার ৩৩০টি জিপিএ-৫ সহ পাস করেছে ৪৩ হাজার ৮৭০ জন শিক্ষার্থী।
সিলেট জেলায় উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আসনসমূহের মধ্যে জেলার ৬টি মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজে ৭৪০টি, ২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ৯৫৮টি, ১টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ১৮০টি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১০টি কলেজে প্রায় ৫ হাজার ৬৫৫টি ও চারটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৩ হাজার আসন রয়েছে।
এর মধ্যে ২০১৬-১৭ সেশনে এমবিবিএস কোর্সে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে ২০৫টি, রাগীব রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজে ১৯০টি, নর্থইস্ট মেডিক্যালে ১৩০টি, উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজে ১১৫টি, পার্কভিউ মেডিক্যাল কলেজে ৬০টি ও আল আমিন ডেন্টাল কলেজে ৪০টি আসন রয়েছে।
এছাড়া একই শিক্ষাবর্ষে অনার্স কোর্সে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এ’ ইউনিটে ৯টি বিষয়ে ৬১৩টি আসন ও ‘বি’ ইউনিটে ১৯টি বিষয়ে ৮৯৫টি আসন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৫০টি, সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ৩টি বিষয়ে ১৮০টি আসন রয়েছে।
সিলেটের ৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে লিডিং ইউনিভার্সিটিতে প্রায় ১০০০টি, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটিতে ৮০০টি, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ৭০০টি ও নর্থইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে ৫০০টি আসন রয়েছে।
১০টি শিক্ষা বোর্ড থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রায় ৮ লাখ ৯৯ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে প্রায় ৫৮ হাজার শিক্ষার্থী। তারা পয়েন্টের ভিত্তিতে দেশের যেকোনো সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সুযোগ রয়েছে। সে হিসেবে সব সূচকে সিলেটের ফল খারাপ থাকায় নিজ জেলার প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি হতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উত্তীর্ণদের প্রথম পছন্দ মেডিক্যাল কলেজ। এ বছর সিলেট শিক্ষা বোর্ড থেকে বিজ্ঞানবিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে ৭ হাজার ৪৭৪ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৭৬ জন। এদিকে সিলেট জেলায় সরকারি ও বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে আসন আছে ৭৪০টি। এসব মেডিক্যাল কলেজে শুধু সিলেট জেলার শিক্ষার্থীরা নয়, বরং পয়েন্টের ভিত্তিতে দেশের যেকোনো জেলার শিক্ষার্থী আবেদন করতে পারবে। ফলে মেডিক্যালে ভর্তিতেও ধোঁয়াশা কাটছে না সিলেটের বিজ্ঞানবিভাগে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের।
দেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২টি ইউনিটে আসন রয়েছে ১ হাজার ৫০৮টি। সেখানে বরাবরের মতোই দেশের অন্যান্য জেলার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তুমুল প্রতিযোগিতা করতে হয় সিলেটের শিক্ষার্থীদের। দেশের অন্যান্য শিক্ষা বোর্ড থেকে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ও ভালো গ্রেডে উত্তীর্ণদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে শাবিপ্রবি। সিলেটের অন্যতম এ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে সিলেটের শিক্ষার্থীরা বরাবরই পিছিয়ে থাকে।
তাছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সিলেট জেলার ১০টি কলেজে অনার্স কোর্স চালু আছে। ১০টি কলেজে আসন আছে ৫ হাজার ৬৫৫টি। এদিকে সিলেট জেলায় এইচএসসিতে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৯ হাজার ৩৪৮ জন। আসনের তুলনায় বেশি পাস করেছে। সে হিসেবে দেখা যায়, শুধু সিলেট জেলার উত্তীর্ণ ছাত্ররাও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্সে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না।