দুবাই শপিংমলে চুরি, আটক পাইলটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিমান
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ আগস্ট ২০১৬, ২:৪০ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক :
দুবাইয়ের শপিংমলে চুরি করতে গিয়ে গ্রেফতার বাংলাদেশ বিমানের কো-পাইলট ক্যাপ্টেন এন হাসান ওরফে নাদিম হাসানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে বিমান কর্তৃপক্ষ। তবে গত রাত ১১টা পর্যন্ত তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে কি না তা জানা যায়নি। গত মঙ্গলবার অভিনব কায়দায় এয়ারবাস ৩১০-এর ফার্স্ট অফিসার নাদিম হাসানকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় দুবাই পুলিশ।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জিএম (জনসংযোগ) খান মোশাররফ হোসেন বলেন, ক্যাপ্টেন নাদিম হাসান গ্রেফতার হয়েছেন চুরির অভিযোগে। তিনি এখন দুবাই কারাগারে আছেন বলে আমাকে বিষয়টি এমডি নিশ্চিত করেছেন।
তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। এ বিষয়ে এমডির সাথে কথা বলতে বলেন তিনি। তবে এ ব্যাপারে এমডিকে ফোন করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
বিমানের স্থানীয় স্টেশনের একজন কর্মকর্তা জানান, এন হাসান দীর্ঘ দিন ধরে দুবাইয়ের শপিং সেন্টার ‘ক্যারিফোর’ থেকে আইফোন, আইপ্যাড, পারফিউমসহ মূল্যবান পণ্যসামগ্রী চুরি করে আসছিলেন। কিন্তু কখনো ধরা পড়েননি তিনি। সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে পুলিশ কো-পাইলটকে শনাক্ত করে দীর্ঘ দিন ধরে খুঁজছিল। কিন্তু প্রতিবারই চুরি করে কৌশলে শপিং সেন্টার থেকে সটকে পড়তেন তিনি।
জানা গেছে, ক্যাপ্টেন হাসান শপিং সেন্টার থেকে আইফোন, আইপ্যাডসহ মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে প্রথমে বাথরুমে যেতেন। এরপর গোপনে ওই সব পণ্য থেকে অ্যালার্ম ট্যাগ খুলে ফেলতেন। তারপর ব্যাগে ভরে সটকে পড়তেন। এর আগে সাত দফা তিনি এভাবে চুরি করে সটকে পড়েন বলে জানায় দুবাই পুলিশ। দুবাই পুলিশ কো-পাইলট এন হাসানকে ধরতে না পেরে তার সাথে আসা অন্যান্য পাইলট, ফার্স্ট অফিসার ও কেবিন ক্রুদেরও খুঁজতে থাকে। মঙ্গলবার এয়ারবাসের অপর এক পাইলট মোহাম্মদ আলী ওই শপিং সেন্টারে কেনাকাটা করতে যান। ক্যাপ্টেন আলী শপিং সেন্টারে পা রাখার সাথে সাথে মলের সিকিউরিটি লাইট জ্বলে ওঠে, বেজে ওঠে সিকিউরিটি অ্যালার্ম। এরপর পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ তল্লাশি করে জানতে পারে এর আগে কো-পাইলট এন হাসানের সাথে পাইলট আলী কয়েকবার ওই শপিং সেন্টারে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন। কিন্তু ক্যাপ্টেন আলী কোনো ধরনের চুরির সাথে জড়িত ছিলেন না বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে। এরপর পুলিশ ক্যাপ্টেন আলীকে তাদের কাস্টডিতে নিয়ে যায়। সিসিটিভিতে কো-পাইলট নাদিম হাসানের ছবি দেখিয়ে তার নাম-পরিচয় জানতে চায়। ক্যাপ্টেন আলী ছবি দেখে কো-পাইলট নাদিম হাসানকে শনাক্ত করেন। এরপর পুলিশ বিষয়টি বাংলাদেশ বিমানের দুবাই অফিসকে জানায় এবং বাংলাদেশে বিমান অফিসকে অবহিত করে। এরপর বিষয়টি গোপন রেখে ঢাকা অফিস থেকে এন হাসানকে জরুরি ভিত্তিতে দুবাই গিয়ে পাইলট আলীর কাছে রিপোর্ট করার নির্দেশ দেয়া হয়। খবর পেয়ে এন হাসান দুই ঘণ্টায় আবুধাবি থেকে দুবাই আসেন। এসেই তিনি পাইলট আলীকে ফোন দিলে তাকে ‘ক্যারিফোর শপিং সেন্টারে’ আসতে বলেন। তখনো এন হাসান বিষয়টি জানতেন না। কো-পাইলট এন হাসান ওই শপিং সেন্টারে আসার সাথে সাথে দুবাই পুলিশ তাকে ঘিরে ফেলে ও গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়।