সিলেটে অনির্দিষ্টকালের ট্রাক ধর্মঘট শুরু
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ আগস্ট ২০১৬, ৬:১৮ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক :
সিলেট জেলা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকা জৈন্তাপুরের সারিঘাট, ফেরিঘাট ও হরিপুর এলাকাসহ বিভিন্ন উপজেলা ও পৌরসভা থেকে অবৈধভাবে ট্রাক গাড়ি থেকে রয়েলিটি আদায়ের প্রতিবাদে আজ বুধবার ((১৭ আগস্ট) থেকে সিলেটে অনির্দিষ্টকালের ট্রাক ধর্মঘট শুরু হয়েছে।
দাবি আদায় না পর্যন্ত সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত চলবে এ ট্রাক ধর্মঘট। এদিকে জেলা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকা ধর্মঘটে সর্মথন দিয়েছে সিলেট জেলা জেলা সড়ক পরিবহণ ঐক্য পরিষদ।
ট্রাক ধর্মঘট নিয়ে মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রথমে এক দফা বৈঠক হয়। কিন্তু শ্রমিক নেতৃবৃন্দ দাবি আদায়ে বিলম্বের কথা শুনে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেননি। ফলে ব্যর্থ হয় জেলা প্রশাসনের বৈঠক। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে সার্কিট হাউসে শুরু হয় আবারো জেলা প্রশাসক, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এবং শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের বৈঠক। সেখানে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ তাদের দাবি ও আন্দোলন নিয়ে বিভিন্ন যুক্তি এবং নির্যাতনের কথা তোলে ধরেন। তাতে সবাই এক মত হয়ে জৈন্তাপুরের নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহ বিভিন্ন উপজেলা এবং পৌরসভার দায়িত্বে থাকা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের আজ (বুধবার) এ নিয়ে শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকের নির্দেশ দেওয়া। কিন্তু দাবী আদায় না হওয়ায় ট্রাক ধর্মঘট অব্যাহত থাকে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদিন, সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান, সহকারী পুলিশ সুপার সুজন চাকমা, জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাবেদ সিরাজ, জেলা সড়ক পরিবহণ ঐক্য পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম আহমদ ফলিক, জেলা সিএনজি অটো রিক্সা অটো টেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকারিয়া, ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি আব্দুস সালাম (সালাম মিয়া), সহ সভাপতি হাসমত আলী হাসু, যুগ্ম সম্পাদক আরিফ হোসেন হীরা, সহ সম্পাদক আহমদ আলী স্বপন ও সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী নিখিল চন্দ্র দাস, প্রচার সম্পাদক মানিক মিয়া, দফতর সম্পাদক বাবুল হোসেন, কোষাধ্যক্ষ রাজু আহমদ তুরু, সদস্য মোঃ কানু মিয়া, লায়েছ মিয়া, আব্দুল জলিল, আলী আহমদ, শরীফ আহমদ প্রমুখ। এ সময় টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ।
সভায় ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ দিলু মিয়া অভিযোগ করে বলেন- জৈন্তাপুরের শারিঘাট, ফেরিঘাট ও হরিপুর এলাকা থেকে অবৈধ ভাবে পেশি শক্তির বলে ট্রাক গাড়ি থেকে রয়েলিটি আদায় করা হচ্ছে। টাকা না দিলে চাললকদেরকে নির্যাতন করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অথচ পুলিশ প্রশাসন নিরব ভ’মিকা পালন করছে। তিনি বলেন বালু মহালের ইজারাদার মেসার্স হক ট্রেডার্সের পরিচালক সাইফুল হক, মেসার্স জুয়েল এন্টার প্রাইজের পরিচালক হুমায়ুন কবির এবং ইজাদার প্রতিষ্টানে নিযুক্ত ব্যবসায়ী ফয়েজ আহমদ বাবর, আনোয়ার হোসেন ও তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে কিছু প্রভাবশালী বালু উত্তোলনের উৎসমূখ থেকে প্রায় বিশ কিলোমিটার দুর থেকে পুলিশ প্রশাসনকে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে অবৈধ ভাবে জোরপূর্বক ট্রাক গাড়ি থেকে টাকা আদায় করছে। যা সম্পূর্ণ আইন বিরোধী।
অবশেষে বাধ্য হয়ে ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন ধর্মঘট কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। তাছাড়া সিলেটের বিভিন্ন পৌরসভা, উপজেলা ও মহাসড়কে বাশকল বসিয়ে অন্যায় ভাবে বিভিন্ন রকমের ট্যাক্স আদায় করা হচ্ছে। যার ফলে চাঁদাবাজদের কারনে ট্রাক শ্রমিকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এভাবে যদি অপেন চাঁদাবাজি শুরু হয়, তাইলে শ্রমিকরা কিভাবে গাড়ি রাস্তায় বের করবে?
তাই বাধ্য হয়ে ১৭ আগস্ট থেকে সিলেট জেলায় অনির্দিষ্টকালের ট্রাক ধর্মঘট পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাক মালিক-শ্রমিকরা। এ বক্তব্য শুনে জলা সড়ক পরিবহণ ঐক্য পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম আহমদ ফলিক পরিবহণ শ্রমিকরা আর নির্যাতন সহ্য করবে না। এখন জবাব দেওয়ার পালা। আমরা ট্রাক ধর্মঘটের সাথে একাত্মতা পোষণ করেছি।
পরদিন বৃহস্পতিবার থেকে সিলেটে ট্রাকের পাশাপাশি বাস-মিনিবাস ও সিএনজি অটো রিক্সা অটো টেম্পুসহ সকল প্রকার পরিবহণ ধর্মঘট পালন করবে। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে। এ সময় অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক নেতা ও ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের প্রচার সম্পাদক মানিক মিয়া, দফতর সম্পাদক বাবুল হোসেন, কোষাধ্যক্ষ রাজু আহমদ তুরু, সদস্য মোঃ কানু মিয়া, লায়েছ মিয়া, আব্দুল জলিল, আলী আহমদ, শরীফ আহমদ প্রমুখ।