গুলশান হামলার হোতা মারজানের পরিচয় মিলেছে, বাবা আটক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ আগস্ট ২০১৬, ৪:৩৮ অপরাহ্ণ
ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় হামলায় জড়িত সন্দেহভাজন জঙ্গি হিসেবে ছবি প্রকাশ করা মারজানের বাড়ি পাবনায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলেছে, গুলশানে জঙ্গি হামলার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিল মারজান। গত কয়েক মাস ধরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন মারজানের। মাদরাসা থেকে দাখিল ও আলিম পাস মারজান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী বলে পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন। পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের আফুরিয়া গ্রামের দরিদ্র গেঞ্জি তৈরির কারিগর নিজাম উদ্দিন ও সালমা খাতুন দম্পতির ৫ ছেলে ও ৫ মেয়ের মধ্যে দ্বিতীয় মারজান। পুরো নাম নুরুল ইসলাম মারজান। পারিবারিকভাবে ধর্মীয় অনুশাসন ও আর্থিক অনটনে বেড়ে ওঠা তার। আফরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণি পাস করার পর সে ভর্তি হয় শহরের পুরাতন বাঁশবাজার আহলে হাদিস কওমী মাদরাসায়। সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি পাবনা আলীয়া মাদরাসায় ভর্তি হয়ে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে দাখিল ও আলিম পাস করে মারজান। এরপর ২০১৪ সালে ভর্তি হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগে। এ বছরের জানুয়ারিতে শেষবার বাড়িতে আসার পর স্ত্রীকে নিয়ে চট্টগ্রাম চলে যায় সে। তারপর গত ৭-৮ মাস ধরে মারজানের সঙ্গে যোগাযোগ নেই বাবা-মাসহ স্বজনদের। গুলশান হামলায় জড়িত সন্দেহভাজন জঙ্গি হিসেবে তথ্য চেয়ে গত শুক্রবার ‘হ্যালো সিটি’ অ্যাপে ছবি প্রকাশ করা হয় মারজানের। সেখানে তাকে গুলশান হামলার ‘অপারেশন কমান্ডার’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর গত ১২ই আগস্ট বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার ছবিসহ সংবাদ দেখে হতাশ ও ক্ষুব্ধ হন পরিবারসহ স্বজনেরা। স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় কান্না থামছে না অসহায় দরিদ্র বাবা-মায়ের। তাদের আদরের সন্তান কিভাবে এ পথে পা বাড়িয়েছে তা কখনও বুঝতে পারেননি তারা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর কারো প্ররোচনায় মারজান সন্ত্রাসের পথে পা বাড়িয়েছে বলে মনে করেন তার বাবা-মা। তাদের দাবি, জড়িত থাকলে প্রচলিত আইনে শাস্তি হোক মারজানের। তবে যারা তাকে এ পথে নামতে বাধ্য করেছে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবিও জানান তারা। র্যাব-১২ পাবনার কোম্পানি কমান্ডার জানান, মারজানের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে সেগুলো যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে থাকায় বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যমতে, হামলার রাতে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত রেস্তরাঁর ভেতর থেকে জঙ্গিরা মারজানের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং হামলার ছবি তুলে মারজানসহ কয়েকজনের কাছে পাঠায়। তাই গুলশান হামলায় মারজান গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিল বলে মনে করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।