গ্রেফতার এড়াতে রাগিব আলীর ভারত পলায়ন
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ আগস্ট ২০১৬, ৬:৫৩ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
বিশিষ্ট শিল্পপতি ও কথিত দানবীর রাগীব আলী পরিবারের চার সদস্যসহ ৬ জন নিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন। বুধবার তিনি ও তার ছেলে, মেয়ে, জামাতাসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এরই প্রেক্ষিতে গ্রেফতার এড়াতে রাগীব আলী তার ছেলে আবদুল হাই, আবদুল হাইয়ের স্ত্রী ও ছেলে এবং তার (রাগীব আলী) বাংলোর দুই শিশুসহ ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
বুধবার বিকেলে সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে রাগীব আলীসহ ওই পাঁচজন ভারতে যান বলে জানিয়েছে ওই সূত্র। ওই সূত্র জানায়, বুধবার বিকেল ৩টার দিকে একটি নোয়া গাড়িতে করে রাগীব আলী, তার ছেলে আবদুল হাই, আবদুল হাইয়ের স্ত্রী ও ছেলে এবং রাগীব আলীর বাংলোর দুই শিশুকে সাথে নিয়ে জকিগঞ্জ যান। জকিগঞ্জে রাগীব আলীর এক ঘনিষ্ট ব্যক্তি ৬টি পাসপোর্ট নিয়ে জকিগঞ্জ সীমান্তের কাস্টমসস্থ ইমিগ্রেশন অফিসে আসেন। বিকেল সাড়ে ৫টায় রাগীব আলীসহ অন্যরা নৌকা দিয়ে কুশিয়ারা নদী পার হয়ে ভারতে পাড়ি জমান। রাগীব আলী ওই নৌকার মাঝিকে ভাড়া বাবত ৭শ টাকা দেন।
এদিকে রাগীব আলীর ভারতে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জকিগঞ্জ থানা পুলিশ কিছুই জানে না। জকিগঞ্জ থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাগীব আলীর ভারতে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমাদের জানার কথা নয়। এ বিষয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষই ভালো বলতে পারবে।’
জকিগঞ্জের কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে কাউকে পাওয়া যায়নি।
জকিগঞ্জ পৌর যুবলীগের সভাপতি আবদুস সালাম জানান, বুধবার বিকেলে নোয়া মাইক্রোবাসযোগে কয়েকজন সঙ্গীসহ রাগীব আলীকে জকিগঞ্জ কাস্টমসের দিকে যেতে দেখেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে তারাপুর চা বাগানের দেবোত্তর সম্পত্তিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের মাধ্যমে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার ভূমি আত্মসাৎ ও প্রতারণার আলোচিত দুটি মামলায় রাগীব আলী ও তার ছেলে-মেয়েসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক (চিঠি) জালিয়াতির মামলায় রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাইয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। অন্যদিকে প্রতারণার মামলায় রাগীব আলী, তার ছেলে আবদুল হাই, জামাতা আবদুল কাদির, মেয়ে রুজিনা কাদির, রাগীব আলীর আত্মীয় মৌলভীবাজারের দেওয়ান মোস্তাক মজিদ, তারাপুর চা বাগানের সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ৪২২ দশমিক ৯৬ একর জায়গার উপর তারাপুর চা বাগান পুরোটাই দেবোত্তর সম্পত্তি।
আশির দশকে জালিয়াতির মাধ্যমে এটি দখলে নেন রাগীব আলী। এ নিয়ে চলা মামলার প্রেক্ষিতে আদালতে একটি রিট পিটিশনের ভিত্তিতে গত ১৯ জানুয়ারি তারাপুরে রাগীব আলীর দখলদারিত্বকে অবৈধ ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ। একইসাথে বাগানের সকল স্থাপনা ছয় মাসের মধ্যে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেন আদালত।